প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে যারা হিন্দু সনাতনী, যারাই শাসকের বিরুদ্ধে কথা বলবেন, তাদের বিরুদ্ধেই মিথ্যে মামলা দিয়ে কি করে তাদের জেলে ঢোকানো যায়, তার চেষ্টা প্রথম থেকেই করছে তৃণমূল সরকার বলে অভিযোগ বিরোধীদের। যে পুলিশ অনুব্রত মণ্ডলের মত নেতা, আইসিকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করার পরেও তাকে ধরতে পারে না, সেই পুলিশ দলদাস হয়ে শুধুমাত্র যারা শাসকের বিরুদ্ধে কথা বলবে, তাদের ধরার জন্যই সমস্ত ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে বলে লাগাতার অভিযোগ করতে দেখা যায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে। আর সেসবের মাঝেই সম্প্রতি বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সংঘের কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে এক মহিলাকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে যে ধর্ষণের অভিযোগ সামনে এসেছিল, তা নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য। বিরোধীদের একাংশ আশঙ্কা প্রকাশ করেন, যে কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে এতদিন কোনো অভিযোগ ওঠেনি, কিন্তু তিনি এখন শাসকের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, এই রাজ্যে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলছেন বলেই কি তার বিরুদ্ধে শুরু হয়ে গেল জঘন্য চক্রান্ত? ইতিমধ্যেই সেই কার্তিক মহারাজকে আজ থানায় হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেসবের কেয়ার না করেই বড় পদক্ষেপ নিয়ে নিলেন এই হিন্দু সন্ন্যাসী।
বলা বাহুল্য, গতকালই কার্তিক মহারাজকে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার পক্ষ থেকে একটি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। যেখানে আজ তাকে থানায় হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়। আর তারপরেই অনেকের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয় যে, কার্তিক মহারাজ থানায় হাজিরা দিতে গেলে তাকে গ্রেফতার করে নেওয়া হবে না তো? তাই তিনি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন, আদৌ হাজিরা দেবেন কিনা, তার দিকে সকলের নজর ছিল। অবশেষে এফআইআর বাতিলের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হলেন সেই কার্তিক মহারাজ।
বিরোধীদের দাবি, এই রাজ্যে পুলিশ প্রশাসনের ওপর কোনো ভরসা নেই। বারবার করে আদালতের দরজায় গিয়ে তারা ধাক্কা খাচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারাই বিরোধী কণ্ঠস্বর, তাদেরকে পুলিশ দিয়ে মিথ্যে মামলা দিয়ে হেনস্থা করার চেষ্টা করছে শাসকদল। কার্তিক মহারাজের ক্ষেত্রেও একটা বড় চক্রান্ত হচ্ছে। তাই তিনি এই রাজ্যের পুলিশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে গিয়ে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছেন বলেই দাবি বিরোধীদের।
কার্তিক মহারাজের দাবি, ১২ বছর আগের একটি ঘটনাকে সামনে এনে তার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। যে মহিলাকে দিয়ে এই সমস্ত কথা বলানো হচ্ছে, তিনি দিদির নির্দেশে এই সমস্ত হচ্ছে বলে বলছেন। আসলে গোটাটাই একটা পরিকল্পনামাফিক চক্রান্ত। তাই তাকে যেভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধেই তিনি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। অর্থাৎ পুলিশের পক্ষ থেকে আজ কার্তিক মহারাজকে হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হলেও, তাতে সাড়া না দিয়ে এবার সুবিচার পেতে আদালতের শরণাপন্ন হলেন এই হিন্দু সন্ন্যাসী। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামীকাল এই মামলার শুনানি হতে পারে। আর সেই মামলার শুনানি শেষেই বোঝা যাবে যে, কার্তিক মহারাজকে থানায় হাজিরা দিতে হবে, নাকি তাকে রক্ষাকবচ দেবে আদালত! তবে দিনের শেষে এটা স্পষ্ট যে, পুলিশের নোটিশে সাড়া দিয়ে আজ থানায় যাচ্ছেন না কার্তিক মহারাজ। সেক্ষেত্রে আগামীকাল কলকাতা হাইকোর্টে তার এই আবেদন এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে যে শুনানি হবে, সেখানে তার পক্ষে নির্দেশ যায় কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে গোটা রাজ্যবাসীর।