প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন রাজ্যের মানুষ বিশ্বাস করেছিল, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এসে সিপিএম যে জায়গায় রাজ্যকে ছেড়ে চলে গিয়েছে, সেই একই পথে পা বাড়িয়ে রাজ্যকে অপরাধ করনের দিকে এগিয়ে দিয়েছেন। বারবার করে বিরোধীদের পক্ষ থেকে তেমনটাই অভিযোগ করা হয়। রাজ্যে আইন শৃংখলার কি পরিমান অবনতি হয়েছে, প্রশাসন কিভাবে দলদাসে পরিপূর্ণ হয়েছে, তা নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না। আর তার মধ্যেই যেভাবে তৃণমূলের এক ছাত্রনেতার দ্বারা শিক্ষাঙ্গনের ভেতরে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে, তার ফলে বিরোধীদের বাণে রীতিমত জর্জরিত এই রাজ্যের সরকার। আর সেসবের মধ্যেই এবার পুলিশ থেকে শুরু করে তৃণমূলকে নিয়ে যারা অপরাধী, তাদের কিভাবে রক্ষা করছে এই রাজ্যের পুলিশ, তা নিয়েই বড় তথ্য সামনে আনলেন বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য।

বলা বাহুল্য, এদিন রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি থেকে শুরু করে কসবার গণধর্ষণ কান্ড নিয়ে বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েই তিনি ভয়ংকর মন্তব্য করে বসেন। বিজেপি নেতা বলেন, “রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। রাজ্য সম্পূর্ণ রূপে অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে। এখন তৃণমূল দল পুলিশের ভূমিকায় কাজ করছে এবং পুলিশ তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে। যত রকমের অপরাধী রয়েছে, অধিকাংশই তৃণমূলের ছত্রছায়ায় বড় হচ্ছে। এরা নির্বাচনের সময় লড়ে, দলের জন্য ভোট নিয়ে আসে। সেই কারণে এরা দোষ করলেও কোনো শাস্তি হয় না। বরং এদের দোষ ঢাকতে তৎপর থাকে দল এবং রাজ্যের পুলিশ। এরা দোষ করে, আর পুলিশ সেই দোষ ধামাকা দেওয়ার চেষ্টা করে।”

গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, ঠিক কথাই তো বলেছেন শমীকবাবু। সত্যিই তো তাই, এই রাজ্যে তো প্রশাসন বলে কিছু নেই। প্রশাসন যদি থাকত, তাহলে অনুব্রত মণ্ডলের মত নেতারা পুলিশকে গালিগালাজ করার পর এতদিন জেলের ভেতরে থাকতেন। তবে পুলিশের মেরুদন্ড নেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। আর এই রাজ্যে যত অপরাধমূলক ঘটনা ঘটছে, নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তৃণমূলের নাম যুক্ত হচ্ছে। কারণ যারা অপরাধী, তারা তৃণমূলের ছাতার তলায় এসে বাঁচতে চাইছে। আর পুলিশ দলদাসের মত একের পর এক জঘন্য ঘটনা ঘটে গেলেও, সেই সমস্ত অপরাধীদের রক্ষা করতে ব্যস্ত বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো শুধু তৃণমূল দলের নেত্রী নন। তিনি তো এই রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী। প্রশাসনের সর্বেসর্বা। তাহলে বিরোধীদের পক্ষ থেকে যখন তার রাজ্যের পুলিশকে নিয়ে এত আক্রমণ করা হচ্ছে, তখন কি পুলিশকে নিরপেক্ষ হওয়ার জন্য কোনো বার্তা দিতে পারছেন না এই রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী? সামনে যখন নির্বাচন, তার তো এখন উচিত, নিজের এবং নিজের সরকারের ভাবমূর্তিকে স্বচ্ছ করা। সেক্ষেত্রে একটু রাজধর্ম পালন করলে কি খুব বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে? যদি প্রশাসনকে ঠিকমত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ মন্ত্রী হিসেবে পরিচালনা করতেন, তাহলে রাজ্যবাসীকে যেমন এমন দুর্দিন দিন দেখতে হত না, ঠিক তেমনই বিরোধীদের এত প্রশ্নবাণ এবং কড়া আক্রমণের মুখে পড়তে হত না নবান্নকে বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।