প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে বিরোধীরা কোনো সভা সমিতি করতে পারবে না। আর বিরোধী দল হিসেবে যদি বিজেপি এবং সেই সভায় যদি শুভেন্দু অধিকারী থাকে, তাহলে তাকে আটকানোর জন্য সব রকম চেষ্টা শাসক দলের পক্ষ থেকে করা হয়। যেদিন থেকে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন এবং বিরোধী দলনেতা হয়েছেন, সেদিন থেকেই তার আতঙ্কে এতটাই ভীত হয়ে পড়েছে এই রাজ্যের শাসক দল যে, তিনি যেখানেই সভা করতে যান, যেখানেই বিজেপি তার সভার জন্য পুলিশের অনুমতি দিয়ে নিতে যায়, সেখানেই পুলিশ অনুমতি দেয় না। কোনো না কোনো কারণ দেখিয়ে সভা করা যাবে না, এমন যুক্তি সামনে আনে। তবে বারবার সেই সভা করার ব্যাপারে আদালতে যেতে হয় বিজেপিকে। এই ঘটনা এখন রাজ্যের স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, শুভেন্দু অধিকারী কোথাও সভা করতে যাবে। আর পুলিশ বাধা দেবে না, এমনটা হতেই পারে না। আর পুলিশ বাধা দিলে যে আদালত থেকেই অনুমতি নিয়ে আসতে হবে, এই খবর দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন বাংলার মানুষ। সামনেই নির্বাচন। কিন্তু তার আগেও এই রাজ্যের পুলিশ যতটা সম্ভব শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির কর্মসূচিতে যেভাবে হোক, বাধা দেওয়ার সব চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে আবারও সেই চেষ্টায় জল ঢেলে দিলো কলকাতা হাইকোর্ট। যে সভার ব্যাপারে পুলিশের কাছে অনুমতি পাওয়া গেল না, এবার শর্তসাপেক্ষে বিজেপিকে সেই সভার অনুমতি দিল আদালত।

সামনেই ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। অবশ্য যে রাজ্যের পুলিশ এমনি সময় সভা সমিতির ব্যাপারে অনুমতি দেয় না, তারা সামনে যখন নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে, তখন যে বিরোধী দলকে আরওই অনুমতি দেবে না, সেই সম্পর্কে কারওরই দ্বিমত থাকার কথা নয়। তবুও বিজেপি নিয়ম পালন করে প্রথমে পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েছিল মন্দির বাজারের সভার ব্যাপারে। কিন্তু পুলিশ অন্যান্য সভার ক্ষেত্রে যেমন বিজেপিকে অনুমতি দেয় না, এক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটাই করেছিল। যার ফলে বাধ্য হয়ে এই কলকাতা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হতে হয় গেরুয়া শিবিরকে। আর সেখান থেকেই পাওয়া গেল সেই কর্মসূচির অনুমতি। যার ফলে পুলিশ অনুমতি না দিলেও, বিচার ব্যবস্থা যে রাজ্যে এখনও টিকে রয়েছে এবং সেই বিচার ব্যবস্থার জন্যই যে মানুষ গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা রাখতে পারছে এবং শিরদাঁড়া সোজা রেখে কিছু কিছু মানুষ প্রতিবাদ করতে পারছে এই শাসকের বিরুদ্ধে, তা আরও একবার প্রতিষ্ঠিত হলো বলেই মনে করছে বিরোধীরা।

জানা গিয়েছে, আগামী ২৪ নভেম্বর মন্দিরবাজারে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সভার ব্যাপারে পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু পুলিশ অন্যান্য সভাতে যেমন বিজেপিকে অনুমতি দেয় না, এক্ষেত্রে অনুমতি দেয়নি। যার ফলে বিজেপি সেই সভা এবং মিছিলের অনুমতি নেওয়ার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়। আর আজ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য জানিয়ে দেন যে, আগামী ২৪ নভেম্বর দুপুর ১ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে বিজেপি এই কর্মসূচি করতে পারবে। এক্ষেত্রে তাদের মিছিলে ৭ হাজ লোক এবং সভায় ১০ হাজার কর্মী থাকতে পারবে বলে আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আর বারবার যে পুলিশ অনুমতি দেয় না এবং তারপর আদালতে গিয়ে কানমলা খায় এবং তাদের বিরুদ্ধে নির্দেশ যায় এবং আদালত শেষ পর্যন্ত বিজেপিকে সভা করার ব্যাপারে অনুমতি দেয়, সেই পুলিশের কেন এখনও শিক্ষা হচ্ছে না? কেন এখনো রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি সভা করতে চাইলেও, তারা দলদাসের ভূমিকা পালন করে সেই সভার অনুমতি দিচ্ছে না? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মন্দিরবাজারের সভার অনুমতি আদালতের কাছ থেকে পেয়ে আরও বেশি উজ্জীবিত গেরুয়া শিবির।