প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে বিরোধীরা যখন কোনো বিপদে পড়ে, যখন তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়, পুলিশ দিয়ে তাদের ফাঁসানোর চেষ্টা হয়, তখন সব থেকে বেশি উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যায় তৃণমূলের মধ্যে। কিন্তু এবার যেন কিছুটা উলটপুরান ঘটনা ঘটে গেল রাজ্যে। যেখানে বহু বছর আগের একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এক তৃণমূল নেতার মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ আদালত দিতেই রীতিমত উচ্ছ্বাসে ভাসতে শুরু করলো তৃণমূল কংগ্রেস। স্বাভাবিক ভাবেই দলীয় নেতার মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ আদালত দিলো, আর সেক্ষেত্রে তৃণমূল কেন উচ্ছ্বাসে ভাসছে? তাদের তো মনমরা হয়ে থাকার কথা! কিন্তু তাদের এই উচ্ছ্বাসের কারণ কি?
জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে হুগলির গোঘাটে এক তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল। যে ঘটনায় বিরোধী দল সিপিএম থেকে শুরু করে ফরওয়ার্ড ব্লকের অনেক নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। পাশাপাশি তৃণমূলের এক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। আর সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন সাজা ঘোষণা করে আদালত। যেখানে বলদেব পাল নামে এক তৃণমূল নেতাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ১৮ জনকে আজীবন কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যার মধ্যে ১২ জন তৃণমূল কর্মী এবং ৬ জন সিপিএম ও ফরওয়ার্ড ব্লক কর্মী বলেই খবর। আশ্চর্যজনকভাবে বামেদের কর্মীরা শাস্তি পেলেও, যেভাবে এক তৃণমূল নেতার মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, সেই ঘটনায় তো তৃণমূলের হতাশ হওয়ার কথা। কিন্তু তার বদলে উল্টে তৃণমূলের পক্ষ থেকে যেভাবে উল্লাস শুরু হয়ে গেল, তাতে প্রশ্ন উঠছে যে, তৃণমূল নেতার এই মৃত্যুদণ্ডে কি খুশি তৃণমূল কংগ্রেস?
এদিন আদালতের পক্ষ থেকে এই সাজা ঘোষণার নির্দেশ শোনামাত্রই তৃণমূলের শেখ সাকিম এবং তার অনুগামীরা রাস্তায় নেমে সকলকে মিষ্টি খাওয়াতে শুরু করেন। কিন্তু তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় বিরোধীদের পাশাপাশি তো তৃণমূলের একজনেরও মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ফলে তৃণমূলের এই বিজয় উল্লাস কি তৃণমূলকেই চাপে ফেলছে না? এই ব্যাপারে শেখ সাকিম নামে ওই তৃণমূল নেতা বলেন, “তৃণমূল করি বলেই তো মিষ্টিমুখ করলাম। আমরা কোর্টের রায়ে খুশি হয়েছি। কারণ সিপিএমের হার্মাদরা আমাদের নেতাকে মেরে ফেলেছিল। তাই আজকের এই রায়ের জন্য স্যালুট।”
তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এটা তৃণমূলের কাছে যথেষ্ট ব্যাক ফায়ার হিসেবে কাজ করবে। তাদের দলের একজন নেতার মৃত্যুদণ্ড হলো দলীয় কর্মীর খুনের ঘটনায়, তারপরেও তৃণমূল যেভাবে বিজয় উল্লাস করছে, তা যথেষ্ট হতাশাজনক। অনেকে বলছেন, শুধুমাত্র নিজেদের দোষ ত্রুটি থাকবার জন্য এবং বিরোধীদের ঘাড়ে সব দায় চাপানোর জন্যই তৃণমূল রাস্তায় নেমেছে। তবে এই করতে গিয়ে নিজেদের এক নেতা যেভাবে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ পেলেন, তাতে তৃণমূলের এই বিজয় উল্লাস যথেষ্ট বেকায়দায় ফেলবে ঘাসফুল শিবিরকে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।