প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে মুসলিম লিগ টুয়ের সরকার চলছে। বিভিন্ন সময়ে এই অভিযোগ তুলে সোচ্চার হতে দেখা যায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। সম্প্রতি শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান একদিন এগিয়ে আসা নিয়েও তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটি অনুষ্ঠান থাকার কারণে শিক্ষক দিবসের নির্দিষ্ট দিনের সেই অনুষ্ঠান পালন না করে তা এগিয়ে এনেছে রাজ্য। আর এতেই প্রমাণিত হয় যে, এই রাজ্যের সরকার একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে তোষণ করতেই ব্যস্ত। আর বিরোধীরা যখন ক্রমাগত এই সমস্ত অভিযোগ করছে, তখন পাল্টা এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে, তাদের সরকার সর্বধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাসী। সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষকে ভালো রাখার পক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কতটা ভালো রাখার পক্ষে, তা মহেশতলা থেকে শুরু করে মালদহ, মুর্শিদাবাদের ঘটনার মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলেই পাল্টা দাবি করে বিরোধীরা। তবে এই যুক্তি, তর্কের মাঝেই এবার রাজ্যের অর্থ দপ্তর থেকে বিরাট বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেওয়া হলো। যেখানে একটি ছুটি ঘোষণা করলো রাজ্য সরকার। যা এতদিন কখন হয়নি, এবার সেই দিনেই রাজ্যের পক্ষ থেকে ছুটি ঘোষণা করার জন্য অনেকের মনে কৌতুহল তৈরি হয়েছে, তাহলে কি এবার হিন্দু সনাতনীদের মন পেতেই ২০২৬ এর আগে রাজ্যের এই পদক্ষেপ?

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, রাজ্যের সরকার কোন দিনে ছুটি ঘোষণা করলো? অর্থ দপ্তরের পক্ষ থেকে কোন বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে? যতদূর খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, রাজ্যের পক্ষ থেকে আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পূজার দিন সমস্ত সরকারি অফিসে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই অর্থ দপ্তর এই ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিয়েছে। আর সেই বিষয়টি সামনে আসতেই সরকারি কর্মচারীরা যথেষ্ট খুশি। স্বাভাবিকভাবেই তারা ছুটি পেয়েছেন, এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে যে, হঠাৎ করে এই বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ছুটি ঘোষণার কারণ কি? অতীতে কোনোদিন বিশ্বকর্মা পুজোতে ছুটি ছিল না। তাহলে ২০২৬ এর নির্বাচনের আগে অর্থ দপ্তরের পক্ষ থেকে এই বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ছুটি ঘোষণা করার পেছনে কি অন্য কোনো কারণ রয়েছে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্য সরকার ছুটি ঘোষণা করেছে, এটা সরকারি কর্মচারীদের কাছে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য বিষয়। বিশ্বকর্মা পূজোর দিন রাজ্য তাদের মত করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ছুটি ঘোষণা করেছে। এই নিয়ে কারোরই কিছু বলার থাকতে পারে না। তবে যখন এই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ক্রমাগত দাবি করছেন যে, এই রাজ্যে সনাতনদের সংস্কৃতি ধুলুন্ঠিত হচ্ছে, সনাতনীদের বিভিন্ন আচার পালন করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে, তখন সেই হিন্দুদেরই একটি পবিত্র অনুষ্ঠান বিশ্বকর্মা পুজোর দিন রাজ্যের পক্ষ থেকে ছুটি ঘোষণা করে বিরোধী দলের যুক্তিকে খন্ডন করার প্রয়াস চালানোর একটা চেষ্টা হতে পারে। সর্বধর্ম সমন্বয়ের যে বার্তা নিয়ে তৃণমূল নেতারা বারবার করে বিরোধীদের যুক্তিকে খন্ডন করছেন, তারই একটি অঙ্গ হিসেবে বিশ্বকর্মা পূজার দিনে তারা ছুটি দিয়েছেন, এই বিষয়টি সামনে এনে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন এবং ভোট দুটোই পাওয়ার একটা কৌশল চালাতে পারে রাজ্যের শাসক শিবির। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।