প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপি নেতাদের পোস্টে একটি ভয়ংকর ভিডিও সামনে আসে। যেখানে দেখতে পাওয়া যায় যে, মালদহের চাচোল কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি এবি সোয়েলের নেতৃত্বে পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার প্রতিবাদে কর্মসূচি হচ্ছিল। আর সেই কর্মসূচিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি পর্যন্ত পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়। স্বাভাবিকভাবেই গোটা রাজ্য জুড়ে সংস্কৃতি প্রেমী বাঙালি তৃণমূলের এই বাংলা প্রেম এবং তার রুচিবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। আর সেই বিষয়টিকে হাতিয়ার করেই আজ তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে বিজেপি। আইসিসিআরে রবি ঠাকুরের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের পর শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে রবীন্দ্র সদন পর্যন্ত পদযাত্রা করা হয়। তবে বিজেপির পরিকল্পনা ছিল, রবীন্দ্র সদনে গিয়ে রবি ঠাকুরের প্রতি তারা শ্রদ্ধা জানাবেন। কিন্তু সেখানেও বাধা দেওয়া হলো রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে।

সূত্রের খবর, কিছুক্ষণ আগেই আইসিসিআর থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপির প্রচুর কর্মী সমর্থক রবীন্দ্র সদনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। যেখানে গানে গানে পথযাত্রার মাধ্যমে তারা রবীন্দ্র সদনে পৌঁছে যায়। কিন্তু আশ্চর্য জনকভাবে সেই রবীন্দ্রসদনের মূল গেট বন্ধ করে রাখা হয়, যাতে শুভেন্দুবাবু সেখানে প্রবেশ করতে না পারেন। তবে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন। তিনিও বাইরে থেকেই রবি ঠাকুরের প্রতি সম্মান জানিয়ে একের পর এক স্লোগান দিতে শুরু করেন। চাচোল কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি যে রুচিহীন ঘটনা ঘটিয়েছে, তার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানান তিনি।

আর এখানেই একাংশ প্রশ্ন তুলছেন যে, শুভেন্দু অধিকারীকে বাধা দেওয়া হচ্ছে কেন? তিনি তো কোনোরূপ আন্দোলন করতে আসেননি! তিনি রবি ঠাকুরের প্রতি যে অসম্মান হয়েছে, তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের নেতা যে অসভ্যতা করেছে, তার বিরুদ্ধে বাঙালির সংস্কৃতিকে মান্যতা দিয়ে, একজন বাংলার মানুষ হিসেবে কবিগুরুর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে এসেছেন। সেখানেও কেন তাকে এত বাধা দেন? তাহলে কি তৃণমূল এবং তাদের প্রশাসন যে ঘটনার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এই নেতা করেছে, তাকে সমর্থন করে? কেননা এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই গোটা ঘটনার কোনো অফিসিয়াল নিন্দার বিষয়টি সামনে আসেনি। স্বাভাবিক ভাবেই যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা ও বাঙালির অস্মিতা নিয়ে আওয়াজ তুলছেন, তার তো এই ঘটনার পরেই কড়া নিন্দা করে সেই ছেলেটিকে দল থেকে বের করে দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটা না করে তিনি যেভাবে নিরাপত্তা পালন করে আছেন, উল্টে যারা এই ঘটনার সমালোচনা করে রবি ঠাকুরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করছেন, সেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকেও যেভাবে রবীন্দ্রসদনে ঢুকতে বাধা দেওয়া হলো, তাতে এই রাজ্যে শাসকদল এবং তাদের প্রশাসনের বঙ্গ প্রেম, বাংলার সংস্কৃতি প্রেম নিয়ে আরও একবার বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।