প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এই রাজ্যে তৃণমূল মানেই হুমকি, হুঁশিয়ারি। সম্প্রতি অনুব্রত মণ্ডলের পুলিশ কর্তার উদ্দেশ্যে কদর্য আক্রমণ সকলেরই নজরে এসেছে। কিন্তু তারপরেও পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। কিন্তু এবার তৃণমূলের রুচি যে এটাই, তৃণমূল যতই অনুব্রত মণ্ডলকে সমর্থন না করার কথা বলুক না কেন, তাদের বেশিরভাগ নেতারাই যে হুমকি, হুঁশিয়ারি দিয়ে পুলিশকে তাদের কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে, তা আবার স্পষ্ট হয়ে গেল।

জানা গিয়েছে, এবার পুলিশকে কড়া ভাষায় হুশিয়ারি দিয়েছেন ভরতপুরের দাপুটে তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। কি বলেছেন তিনি? তার বক্তব্য, “লালগোলা, বড়ঞা, ভরতপুরে কিছু কিছু কান্ড ঘটে। সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশের ঔদ্ধত্য জুলুম করে। আমার হাত পায়ে বেড়ি বাঁধা। বিরোধী আসনে থাকলে শায়েস্তা করতাম।”
আর কেষ্ট মন্ডল যেভাবে কদর্য আক্রমণ করেছেন, তারপর তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর যেভাবে পুলিশের বিরুদ্ধে বিষোদগার করলেন, তাতেই স্পষ্ট যে, তৃণমূল নেতারা পুলিশকে ঠিক কোন চোখে দেখে! তাদের কথামত না চললেই যে পুলিশ তাদের সবথেকে বড় দুশমন হয়ে যায়, তা তো হুমায়ুন কবীর স্পষ্ট করে দিলেন তার এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়েই। ফলে এতদিন বিরোধীরা যে সমস্ত কথা বলছিল যে, পুলিশ ছাড়া তৃণমূল এক পাও চলতে পারবে না, সেটা তো দিনের আলোর মত যত সময় যাচ্ছে, ততই তৃণমূল নেতাদের বক্তব্যেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বিরোধীদের দাবি, তৃণমূলের শেষের সময় চলে এসেছে। এখন পুলিশও তাদের থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করেছে। তাই একের পর এক তৃণমূলের নেতা বিধায়করা পুলিশের বিরুদ্ধে কটুক্তি এবং হুঁশিয়ারি দেওয়া শুরু করেছেন। আসলে পুলিশ ছাড়া তৃণমূলের এক পাও চলার ক্ষমতা নেই। তাই পুলিশ তাদের পাশ থেকে সরে যেতেই এখন তৃণমূল নেতাদের ছটফাটানি শুরু হয়েছে। তাই এখন এই ধরনের হুঁশিয়ারি দিয়ে পুলিশের ওপর এই দাদাগিরি করার চেষ্টা করছেন হুমায়ুনবাবুদের মত নেতারা বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, এভাবেই যদি তৃণমূলের ভেতর থেকে একের পর এক নেতা এবং বিধায়ক, জনপ্রতিনিধিরা পুলিশকে আক্রমণ করতে শুরু করেন, তাহলে তো তা পুলিশ মন্ত্রীর দিকেই বড়সড় প্রশ্ন তুলে দেয়। রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি আবার তৃণমূল দলের সুপ্রিমো। ফলে পুলিশের ওপর তৃণমূল নেতাদের এই অনাস্থা কি ঘুরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপরেই তাদের অনাস্থাকে প্রকট করছে না? আর যে রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী নিজের পুলিশের অপমানের পরেও চুপচাপ বসে থাকেন, শুধুমাত্র নিজের নেতারা পুলিশকে আক্রমণ করেছেন বলে সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করেন, সেই রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রীর মেরুদণ্ড নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।