প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- শনিবারে সকলেই তাকিয়েছিলেন যে, অনুব্রত মণ্ডল থানায় হাজিরা দেন কিনা। যে কদর্য ভাষায় তিনি এক পুলিশ কর্তাকে আক্রমণ করেছেন, তারপর তাকে কেন ছাড় দেওয়া হচ্ছে, কেন তাকে থানায় হাজিরা দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে, কেন তাকে বাড়ি থেকে তুলে আনা হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন ছিল বিরোধীদের। কিন্তু তারপরও অনুব্রত মণ্ডল থানায় যাননি। উল্টে তারা আইনজীবীরা এসডিপিও অফিসে গিয়েছিল। তবে সেই অনুব্রত মণ্ডলকে আবার হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিশ পাঠিয়েছে পুলিশ।
কিন্তু এত কেন সময় নিচ্ছে প্রশাসন? তাদেরই এক কর্মীকে যেভাবে অনুব্রত মণ্ডল হুমকি দিয়েছেন, তার মা, বউ তুলে গালিগালাজ করেছেন, তারপর বিরোধীরা যদি এই কাজ করত, তাহলে কি প্রশাসন এতটা সময় নিত? শুধু তাই নয়, থানায় হাজিরা দিতে না পারলেও দিনের শেষে দলের পার্টি অফিসে গিয়ে যেভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা সেখানে বসে থাকলেন এবং যে নাটকটা শুরু করলেন অনুব্রত মণ্ডল, তাতে প্রশাসনকে ঠুটো জগন্নাথ বলেই আখ্যা দিচ্ছে বিরোধীরা।
বলা বাহুল্য, শনিবার দিনভর সকলের নজর ছিল অনুব্রত মণ্ডল থানায় হাজিরা দেন কিনা! কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেখানে তিনি যানটি। উল্টে সন্ধ্যায় যে খবর পাওয়া গেল, তা আরও মারাত্মক। একটি মিটিংকে কেন্দ্র করে অনুব্রত মণ্ডল তিন ঘন্টা জেলা পার্টি অফিসে ছিলেন। শুধু তাই নয়, সেই পার্টি অফিস থেকে বেরিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা যে মন্তব্য করলেন, তার ফলে প্রশ্ন উঠছে যে, এরপরেও কি বিন্দুমাত্র লজ্জা হয়নি এই অনুব্রত মণ্ডলের? শুধু তাই নয়, চন্দ্রনাথ সিনহাও কি করে সেই অনুব্রত মণ্ডলের পক্ষ নিয়েই এমন মন্তব্য করতে পারলেন? তাহলে কি তৃণমূল কংগ্রেস বাইরেই দেখাচ্ছে যে, তারা এই ঘটনায় দুঃখিত! কিন্তু ভেতরে ভেতরে তারা অনুব্রত মণ্ডলকে প্রশ্রয় দিচ্ছে? প্রশ্নটা বিরোধীদের মধ্যে থেকেই উঠতে শুরু করেছে।
কিন্তু অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে কি বলেছেন চন্দ্রনাথবাবু? এদিন জেলা পার্টি অফিস থেকে বেরিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, “ওনার শরীর খারাপ ছিল। এখন একটু রিলাক্সড করছেন। আজকে শরীর খারাপ ছিল। স্বাভাবিক, কালকে টেনশন গেছে। কাল নিশ্চয়ই চিন্তা ভাবনা করবেন যাওয়ার জন্য।”আর চন্দ্রনাথবাবুর এই মন্তব্যের পরেই বিরোধীদের প্রশ্ন, এর পরেও চিন্তা ভাবনা করবেন অনুব্রত মণ্ডল? এত বড় ঔদ্ধত্য তার? ঘন্টার পর ঘন্টা পার্টি অফিসে বসে মিটিং করতে পারছে, অথচ থানায় যেতে পারছেন না?
আর পুলিশও বলিহারি! তাদেরই এক কর্মীকে এইভাবে অপমান করলেন, মা-বউ তুলে গালিগালাজ করলেন, তারপরও পুলিশ এই অনুব্রত মণ্ডলের মত একটা গুন্ডা নেতাকে পার্টি অফিস থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে জেলে ঢোকাতে পারছে না? আসলে পুলিশ যে চরম নির্লজ্জ, তারা যে তৃণমূলের দলদাস হয়ে কাজ করছে, তা এত বড় ঘটনার পর আরও একবার ভালো করে মানুষের চোখের সামনে দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে গেল বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।