প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এই রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসায় প্রচুর বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আর সেই ঘটনার শেষ দেখতে মরিয়া রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের পর যেভাবে বেছে বেছে বিজেপি কর্মীদের মারা হয়েছে এবং যেভাবে এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত করছে, এবার তা নিয়েই ২৬ এর আগে তৃণমূলের ঘুম উড়ে যাওয়ার মত পরিস্থিতি কি তৈরি হতে চলেছে? কেন এই কথা বলা হচ্ছে? কারণ, আজ এই ব্যাপারে ভয়ংকর একটা ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
এদিন ভোট পরবর্তী হিংসার একটি ঘটনা নিয়ে শুভেন্দু বাবুকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। আর সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসায় ৬১ টি এফআইআর করেছে সিবিআই। ৪০০ এর মত গুন্ডাকে গ্রেফতার করেছিল, অনেকে বেল পেয়ে গেছে। আমরা সিবিআইয়ের কাছে আবেদন করব, প্রত্যেকটা কেসে বেল পিটিশন বাতিল করার জন্য তারা আবেদন করুক। অভিজিতের কেস সহ প্রত্যেকটা কেসে যাতে বেল ক্যানসেল হয়, তার জন্য আমরা সুপ্রিম কোর্টে পাঠাব।” তবে এখানেই থেমে থাকেননি শুভেন্দুবাবু, এর পরে তিনি যে কথাটা বলেছেন, তা আরও মারাত্মক। আর সেটাই তৃণমূলের কাছে ২৬ এর আগে সব থেকে বড় বিপদের কারণ হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু কি সেই কথা?
শুভেন্দুবাবু বলেন, “এই ঘটনায় যাদেরকে ডেকেছিল সিবিআই এবং যাদেরকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গুন্ডা ঘোষণা করেছিল, তার মধ্যে উদয়ন গুহ, পার্থ ভৌমিক, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পরেশ পাল, অনুব্রত মণ্ডল, রানা সিং, খোকন দাস, শওকত মোল্লা, জাহাঙ্গীর, শামিম, এদের বিরুদ্ধেও যাতে কঠিন ব্যবস্থা হয়, তার জন্য আমরা পরিবারকে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাব।”
বিরোধীদের দাবি, খেলা এবার জমে গিয়েছে। ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের জন্য তৃণমূল যতই প্রস্তুতি নিক, পুরনো কেসে এবার তাদের কি করে ফাঁসাতে হয়, কি করে জব্দ করতে হয়, তার কৌশল তৈরি। যে ভোট পরবর্তী হিংসায় প্রচুর বিরোধী কর্মীর প্রাণ কেড়ে নিয়েছেন তৃণমূল নেতারা, যারা এখন গুন্ডা বলে পরিচিত এবং ঘুরে বেড়াচ্ছেন, এবার তাদের রাতের ঘুম উড়তে চলেছে চলেছে বলেই দাবি বিরোধীদের।
পর্যবেক্ষকদের মতে, শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের যে সমস্ত নেতা, মন্ত্রী এবং হেভিওয়েট ব্যক্তিদের নাম করলেন, তাদের বিরুদ্ধে সত্যি সত্যিই যদি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়, তাহলে কিন্তু তৃণমূল আর ভোটের প্রস্তুতি নেওয়ার মত জায়গায় থাকবে না। কারণ সেই চাপ সামাল দিতে তৃণমূলের ক্ষেত্রে ঠগ বাছতে গা উজার হয়ে যাবে। যারা এতদিন মানুষের ওপর অত্যাচার করেছিলেন, শুধুমাত্র বিজেপি করার অপরাধে যারা তাদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দিয়েছিলেন, তারা ভেবেছিলেন যে, এভাবেই বুঝি সব কিছু পার হয়ে যাবে।
কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী যে ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন, তা তার এদিনের বক্তব্যের মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট ভাবে আভাস মিলে গেল। তাই সুপ্রিম কোর্টে যদি এই সমস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শুভেন্দুবাবু আক্রান্তদের পরিবারকে নিয়ে যান এবং সুপ্রিম কোর্ট যদি তৃণমূলের সেই সমস্ত নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ভয়ংকর কোনো নির্দেশ দিয়ে দেয়, তাহলে ২৬ এর ভোট বৈতরণী পার হওয়া অনেক দূরের কথা, ভোট করার মত মানসিকতা তৃণমূলের থাকবে কিনা, সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।