প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বিরোধীরা বলেন, এই রাজ্যে যেমন ঝাড়, তেমন বাঁশ। যেমন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তেমনই তার দলের নেতারা। বর্তমানে অনুব্রত মণ্ডলের ভাইরাল অডিও ক্লিপ ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। যেভাবে একজন পুলিশকর্তাকে হুমকি দেওয়া থেকে শুরু করে তার মা, বউকে অশ্লীল গালিগালাজ করেছেন বীরভূমের এই তৃণমূল নেতা, তাতে লজ্জায় মুখ ঢাকছে গোটা রাজ্য। তবে শুধু অনুব্রতবাবু নন, তার দলের যিনি সর্বোচ্চ নেত্রী, তিনিও ঠিক একইভাবেই মহিলাদের আবেগে আঘাত করেছেন।ইতিমধ্যেই সেই রকমই একটি মারাত্মক অভিযোগ এনে রীতিমত শোরগোল ফেলে দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বলা বাহুল্য, গতকাল থেকেই অনুব্রত মণ্ডলের ভাইরাল অডিও ক্লিপ ঘিরে রাজ্য জুড়ে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সকলেই তার গ্রেপ্তারির দাবি করছেন। তবে তার আগে আলিপুরদুয়ারে যখন নরেন্দ্র মোদী সভা করতে এসেছিলেন, তখন তার পাল্টা অপারেশন সিঁদুর নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কথা বলেছেন নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্যে, তাকেও রুচিহীন বলে আক্রমণ করেছেন বিরোধীরা। তাই অনুব্রত মণ্ডলের এই ধরনের অশ্লীল গালিগালাজের পর মুখ্যমন্ত্রীকে টেনে গোটা তৃণমূলকে রীতিমত জর্জরিত করে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কি বললেন তিনি?
এদিন অপারেশন সিঁদুর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য এবং তারপর অনুব্রত মণ্ডলের এই ধরনের অশ্লীল গালিগালাজ পুলিশকর্তার উদ্দেশ্যে, সেই বিষয়ে শুভেন্দুবাবুকে একটি প্রশ্ন করা হয়। যে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এরা তো সব একই কালচার। ওখানে কেষ্টর যা কালচার, এখানে ওনার সেই একই। কেষ্ট যা বলেছে, তা তো আর শোনা যাচ্ছে না। অনেকে বলছেন, হেডফোন লাগান। হেডফোন লাগিয়েও শোনা যাচ্ছে না। আরে আইসি বোলপুর, আপনার কথা শুনছে না, শুনবে না, সেটা তো অন্য জিনিস। এটা রাজনৈতিক লোকের ভাষা? কালকের ঘটনাটা তো অনুব্রত মণ্ডল বনাম পুলিশ নয়। মমতা ব্যানার্জির বক্তব্যটাও মহিলা কেন্দ্রিক। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করতে গিয়ে আমাদের সিঁদুরকে আক্রমণ করেছেন, যা আমাদের ভারতীয় সনাতন সংস্কৃতি মহিলাদের একটা বড় আস্থার বিষয়। তাদের সঙ্গে একটা আবেগ জড়িয়ে আছে। আর ঠিক একইভাবে আইসি বোলপুরের স্ত্রী এবং মা, একবার নয়, পাঁচ বার বলেছে। এরপরে আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ড্যামেজ কন্ট্রোল করে বলবেন, এর সঙ্গে পার্টি যুক্ত নয়, ক্ষমা চান। এটা ক্ষমা চাইলে হয়?”
গেরুয়া শিবিরের দাবি, ঠিক কথাই তো বলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। মহিলাদের প্রথমে অপারেশন সিঁদুরের কথা তুলে ধরে সিঁদুরের মধ্যে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে রুচিহীন আক্রমণ করেছেন, তাতে তার মনোভাব সকলের কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। বাংলার মহিলারা মুখিয়ে আছে, এর বিরুদ্ধে রায় দেওয়ার জন্য। আর এবার অনুব্রত মণ্ডলের পুলিশ কর্তার উদ্দেশ্যে তার মা, বউকে নিয়ে যে কদর্য আক্রমণ, তা কি আদৌ কোনো মহিলারা সহ্য করতে পারবেন? যে দলের সর্বোচ্চ নেত্রী থেকে শুরু করে একসময় মাগুর মাছ বিক্রি করা নেতা মহিলাদের অপমান করছেন, তাতে তো স্পষ্ট যে, তৃণমূল কতটা মহিলা বিরোধী! শুধুমাত্র লক্ষ্মীর ভান্ডার দিয়েই যে মহিলাদের সম্মান জানানো যায় না, ভোট কেনার জন্যই যে সেই লক্ষীর ভান্ডার, আদতে যে লক্ষ্মীরা তৃণমূলের আমলে মোটেই সুরক্ষিত নয়, তা বাঁশ এবং ঝাড়, দুই স্তরের নেতা নেত্রীর বক্তব্যের মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট হয়ে গেল বাংলার মানুষের কাছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।