প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে ঘিরে ফের উঠল তোলাবাজির বিস্ফোরক অভিযোগ। এবার নিশানায় সুন্দরবনের শম্ভুনগর গ্রাম পঞ্চায়েত, যেখানে গরুর হাটে কাটমানি আদায়ের অভিযোগ সামনে এসেছে। গোসাবা থানার অন্তর্গত বেলতলি বাজারে সপ্তাহে দু’দিন হাট বসে, যার মধ্যে রবিবার গরুর হাট সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। এই হাটে গরু কেনাবেচার সময় ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছ থেকে পঞ্চায়েতের নামে রশিদ কেটে টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তীর সোজা তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের দিকে।

একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পঞ্চায়েতের নামে সাদা কাগজে প্রিন্ট করা রশিদের মাধ্যমে টাকা তোলা হচ্ছে, যদিও সেই বিল বা রশিদে গ্রাম পঞ্চায়েতের কোনো সরকারি সিল বা পঞ্চায়েত প্রধানের স্বাক্ষর নেই। স্থানীয় এক গরু ব্যবসায়ী সাহালাম মোল্লা বলেন, “প্রতিটি ১০০০ টাকার গরু কেনাবেচায় ৩০ টাকা করে কাটা হচ্ছে। এতে আমাদের লাভ তো দূরের কথা, লোকসান হয়ে যাচ্ছে।” এই অবস্থাকে সরাসরি তোলাবাজি বলে আখ্যা দিয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী।

তবে এই অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন বাজার থেকে টাকা সংগ্রহকারী শীতেশ প্রামাণিক, যিনি আবার স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের আত্মীয়। তাঁর দাবি, “বাজারের উন্নয়নের জন্য এই অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং পুরো প্রক্রিয়া আইন মেনেই হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “গরু কারবারিরা রাস্তায় যাতে সমস্যায় না পড়েন, সে জন্য পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে একটি রশিদ দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এই রশিদ তাঁদের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে।” যদিও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—এই রশিদে যদি পঞ্চায়েতের স্বাক্ষর বা সিলই না থাকে, তবে সেটি কতটা আইনসিদ্ধ?

প্রসঙ্গত, তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কাটমানি বা বেআইনি আদায়ের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। অতীতে একাধিকবার রাজ্যের নানা প্রান্তে শাসকদলের নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। তবে এবার পঞ্চায়েতের নামে রীতিমতো বিল ছাপিয়ে টাকা তোলা—এমন অভিযোগ কার্যত নজিরবিহীন। যদিও শীতেশ প্রামাণিক বিষয়টি আইন মেনেই হচ্ছে বলে দাবি করেছেন, তবুও পঞ্চায়েতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। আগামী নির্বাচনের আগে এই ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ শাসকদলের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।