প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- নদিয়ার তেহট্টের শহিদ জওয়ান ঝন্টু আলি শেখের নাম বাদ পড়ায় বিধানসভার বাদল অধিবেশনে প্রবল বিতর্ক শুরু হয়েছে। সোমবার বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় যে শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন, তাতে প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা, বিধায়ক তাপস সাহ-সহ পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় শহিদ হওয়া সেনাদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। কিন্তু, সেই তালিকায় ঝন্টু আলি শেখের নাম উল্লেখ ছিল না। এই ঘটনার পরই বিরোধীরা প্রশ্ন তোলে, কেন একজন শহিদের নাম বাদ পড়ল। যদিও স্পিকার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, “সামগ্রিকভাবে পহেলগাঁওয়ের ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আলাদাভাবে কারও নাম বলা হয়নি।”
এদিকে, আগামীকাল অর্থাৎ অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে ভারতীয় সেনার প্রত্যাঘাতমূলক অভিযান এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে একটি ধন্যবাদ প্রস্তাব পেশ করা হবে। স্পিকার নিজেই এই প্রস্তাব এনেছেন। জানা গিয়েছে, সেনাকে সম্মান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখবেন প্রায় ২০ মিনিট ধরে। তাঁর সঙ্গে থাকবেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, বিরবাহা হাঁসদা, মোশারফ হোসেন এবং মধুপর্ণা ঠাকুর। প্রত্যেকে নির্ধারিত সময় ধরে বক্তব্য রাখবেন এই ঐতিহাসিক প্রস্তাবের পক্ষে।
অন্যদিকে, বিরোধী দল বিজেপির পক্ষ থেকেও এই ধন্যবাদ প্রস্তাবে বক্তব্য রাখবেন একাধিক বিধায়ক। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি বক্তব্য রাখতে পারেন শঙ্কর ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পাল এবং অশোক লাহিড়ী। যদিও এই তিনজনের মধ্যে একজন হয়তো সময়াভাবে বলতে নাও পারেন। ইতিমধ্যে বিজেপি অভিযোগ তুলেছে, ধন্যবাদ প্রস্তাবে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর উল্লেখ নেই। সেনার এই সফল প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে মুখ খুলতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী, যা আগামীকাল অধিবেশনের অন্যতম চর্চিত বিষয় হতে চলেছে।
বিতর্ক আরও তীব্র হয় যখন শোকপ্রস্তাবে শুধু ঝন্টু শেখের নয়, মুর্শিদাবাদের হিংসাত্মক ঘটনার মৃত হরগোবিন্দ দাস ও তাঁর পুত্র চন্দন দাসের নামও উল্লেখ করা হয়নি। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিজেপি পরিষদীয় দল। প্রতিক্রিয়ায় স্পিকার বলেন, “বিভিন্ন দুর্ঘটনায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়। সবার নাম শোকপ্রস্তাবে আনা সম্ভব নয়।” তবে তেহট্টের শহিদের নাম বাদ পড়া নিয়ে যে জনমনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তা উপেক্ষা করা যাচ্ছে না। রাজ্যের পক্ষে এমন সংবেদনশীল মুহূর্তে আরও যত্নবান হওয়ার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। আগামীকালের সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানানোর প্রস্তাব এই বিতর্কের আবহেই পেশ হতে চলেছে, যা অধিবেশনে উত্তাপ আরও বাড়াতে পারে।