প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- গতকাল রাত থেকেই পাঁচ ঘন্টার টানা বৃষ্টি হয়েছে শহর কলকাতা জুড়ে। মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টি এবং তার ফলে যেভাবে জল জমেছে উত্তর কলকাতা থেকে শুরু করে দক্ষিণ কলকাতায়, তাতে গোটা কলকাতা রীতিমত জলের তলায় চলে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, শহরের নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে। পূজোর মুখে এইভাবে কলকাতায় যে ছোটখাটো বন্যার আকার নিয়েছে, তাতে মাথায় হাত পুজো উদ্যোক্তাদের। তবে তার মধ্যেই পাওয়া গেল আরও এক খারাপ খবর। যেখানে জমা জলে পরিস্থিতি সামলাতে না পেরে বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে প্রাণ হারালেন এক সাইকেল আরোহী।
বলা বাহুল্য, গতকাল রাত থেকেই টানা বৃষ্টি শুরু হয় শহর কলকাতা জুড়ে। দক্ষিণ কলকাতায় এত বছর পর যেভাবে জল জমেছে, তা বিগত ২০ বছর ধরে দেখতে পাওয়া যায়নি বলেই মনে করছেন এলাকাবাসী। যে পরিমাণ জল গোটা কলকাতা শহরে বিভিন্ন এলাকায় জমে রয়েছে, তাতে আদৌ তা কখন নামবে, আদৌ নামবে কিনা, সেটাই একটা বড় প্রশ্ন। তবে জমা জলের মধ্যে সামনে যখন পুজো, যখন বিদ্যুতের কাজ হচ্ছে, তখন ভয়েরও যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আর আজ সেই জমা জল দিয়েই আসছিলেন এক সাইকেল আরোহী। কিন্তু নেতাজি নগর মোড়ে জলের স্রোতের চাপ সামলাতে না পেরে তিনি একটি বিদ্যুতের খুঁটি ধরার চেষ্টা করেন। আর সাথে সাথেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরবর্তীতে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, সেই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে নেতাজি নগর মোড়ে এক ব্যক্তির এইভাবে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর খবর সামনে আসার সাথে সাথেই রীতিমত আতঙ্কে রয়েছেন পথ চলতি মানুষ থেকে শুরু করে এলাকাবাসী। তাদের একটাই বক্তব্য, জলের তলায় কোথায় বিদ্যুতের কোন তার পড়ে রয়েছে, তা কেউ জানে না। স্বাভাবিকভাবেই পথ চলাই এখন দায় হয়ে যাচ্ছে। মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে বেরোবে, অফিসের উদ্দেশ্যে বেরোবে, তাদের জীবনের কি কোনো গ্যারান্টি রয়েছে? কোথায় বিদ্যুৎ কর্মী থেকে শুরু করে প্রশাসন? কোথায় পৌরসভার নিকাশি ব্যবস্থা? আজ যদি শহর কলকাতায় নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি হত এবং এইভাবে জমা জল বন্যার আকার না নিত, তাহলে হয়ত কোনো এক ব্যক্তির প্রাণ এইভাবে চলে যেত না। স্বাভাবিকভাবেই যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এক সময় কলকাতাকে লন্ডন বানাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, পাঁচ ঘন্টার বৃষ্টিতে সেই কলকাতা যেভাবে বন্যার জলে ডুবে গেল, তাতে লন্ডন না হোক, টেমস নদীর আকার নিয়েছে তিলোত্তমা বলেই খোঁচা দিচ্ছে বিরোধীরা।