প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মাঝেমধ্যেই দাবি করেন না, পশ্চিমবঙ্গ হচ্ছে, এগিয়ে বাংলা। কিন্তু বাংলা কতটা এগিয়ে, তা তো রাজ্যের সাধারণ মানুষ নিজেদের জীবন দিয়ে উপলব্ধি করতে শুরু করেছেন। তবে এগিয়ে বাংলার যে করুন নমুনা বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হয়েছে তাতে তা দুয়ারে জালিয়াতির সমান বলেই দাবি বিরোধীদের। কিন্তু বাংলার সেই দুর্নীতির কারিগররা কি এবার বিহারেও থাবা বাসাতে শুরু করলো? কারন, ইতিমধ্যেই বিহারের পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় কলকাতার যোগ পেয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। যার ফলে তারা কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক জায়গায় শুরু করে দিয়েছে তল্লাশি। আর সেই ঘটনার ফলেই প্রশ্ন উঠছে, এটাই কি এগিয়ে বাংলার নমুনা?

 

 

 

জানা গিয়েছে বৃহস্পতিবার কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কিছু জায়গায় তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। আর তারপরেই তাদের এই তল্লাশি চালানোর যে কারণ সামনে আসছে, তার রীতিমতো মারাত্মক। এক্ষেত্রে জানা যাচ্ছে যে, গত 2023 সালে বিহারে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল। পরবর্তীতে সেই পরীক্ষা বাতিল হলে এর তদন্তভার নেয় ইডি। আর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত করতে গিয়েই বড় তথ্যের হদিস পায়। ইডির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এই প্রশ্নপত্র ছাপার দায়িত্ব ছিল উত্তর কলকাতার একটি সংস্থার। সেই প্রিন্টিং সংস্থাকেই প্রশ্নপত্র ছাপার জন্য বরাত দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তারা বিহারের সরকারকে সেই প্রশ্নপত্রগুলো পাঠায়নি। এক্ষেত্রে অভিযোগ যে বিহারের পাটনায় একটি সংস্থার গোডাউনে তারা সেই প্রশ্নপত্র পাঠায়। আর সেখান থেকেই শুরু হয় গন্ডগোল। তদন্তকারী সংস্থা মনে করছে, যে গোডাউনে সেই প্রশ্নপত্রগুলো পাঠানো হয়েছিল, সেখান থেকেই তা বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই সেই ঘটনায় বিহারের এই প্রশ্ন চুরির কারিগর যারা, তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়েছে পদক্ষেপ। শুধু তাই নয়, কলকাতার যে ছাপাখানা থেকে এই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, সেখানেও বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

 

 

তবে গোটা ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যে সমস্ত দাবি করছে, তা আরও ভয়াবহ। তাদের বক্তব্য যে, কলকাতার এই ছাপাখানা সংস্থা বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপায় এমবিবিএস থেকে শুরু করে নিট পরীক্ষার প্রশ্নগুলোও এখান থেকে ছাপানোর প্রক্রিয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই তাহলে কি এই ছাপাখানা সংস্থার একটা বড় চক্র এই প্রশ্ন ফাঁস করে দিয়ে মোটা টাকা ইনকাম করছে? যার প্রভাব শেষ পর্যন্ত বিহারে পুলিশের কনস্টেবল পরীক্ষাতেও পড়তে দেখা গেল? বিরোধীদের দাবি, এটাই হচ্ছে এগিয়ে বাংলা। বাংলায় কি দুর্নীতি হয়েছে, তা তো রাজ্যের মানুষ উপলব্ধি করছেন নিজেদের জীবন দিয়ে। কিন্তু বিহারে ক্ষমতায় না থেকেও যদি বাংলার কিছু মানুষ এইভাবে নিজেদের দুর্নীতি এবং অর্থনৈতিক অসৎ উপায় অবলম্বন করে, বেকারদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে শুরু করে, তাহলে তো বোঝাই যাচ্ছে যে, এরা বাংলায় কতটা দুর্নীতি করেছে! কেননা বিরোধীদের দাবি যে, যারাই এই সমস্ত দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, এই সমস্ত ছাপাখানার কর্ণধার, তারা সকলেই শাসক দলের আশ্রয়ে রয়েছে। এদের দিয়েই মোটা টাকা তোলার প্রক্রিয়া চালায় তৃণমূল। ফলে যারা এই সমস্ত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত, তারা শুধু বাংলার নয়, এখন ধীরে ধীরে অন্য রাজ্যে ক্ষমতায় না থেকেও সেখানকার বেকারদের জীবন ধ্বংস করে দিচ্ছে বলেই দাবি বিরোধীদের।