প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- অনেকে ভাবতেই পারেন যে, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল আছে, তাতে তো আমার কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। আমার পরিবার তো নিশ্চিন্তে আছে। সামান্য কিছু অসুবিধে হলেও, বেকারেরা চাকরি না পেলেও, তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমি কেন টার্গেট হব? কিন্তু লড়াইটা কি সত্যিই আজকের জন্য! যদি আজকে এই লড়াইটা না করা যায়, যদি আজকে সত্যিই তৃণমূলকে রাজ্য থেকে না সরানো যায়, তাহলে ভবিষ্যতের জন্য আসছে কিন্তু ভয়াবহ বিপদ। যেভাবে অনুপ্রবেশ কারীরা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকছেন, যেভাবে ক্রমশ রোহিঙ্গারা এই রাজ্যকে নিজেদের স্বর্গরাজ্য বলে মনে করছেন, তাতে ২০২৬-এ যদি তৃণমূলকে এই রাজ্য থেকে ক্ষমতাচ্যুত না করা যায়, তাহলে আগামী দিন পশ্চিমবঙ্গ যেমন রসাতলে যাবে, ঠিক তেমনই ভারতকে ইসলামিক রাষ্ট্র তৈরি করার জন্য যে পরিকল্পনা, সেই ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা শুরু হয়ে যাবে। এদিন সেই রকমই ভয়ংকর তথ্য ফাঁস করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
ঠিক কি বলেছেন সুকান্তবাবু? এদিন তিনি বলেন, “২৬ শে পশ্চিমবঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টি সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং এটা শুধু পশ্চিমবঙ্গের জন্য জরুরি নয়, গোটা ভারতবর্ষের জন্য জরুরি। তা না হলে এই ভারতবর্ষের ডেমোগ্রাফির পরিবর্তন করে, পশ্চিমবঙ্গ তো রসাতলে যাবেই। ইতিমধ্যেই যেতে শুরু করে দিয়েছে। পাশাপাশি ভারতবর্ষেও ইসলামিক রাষ্ট্র তৈরির যে চক্রান্ত চলছে, সেটা বন্ধ হবে।” একাংশ বলছেন, ভাবতে পারেন, একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এই ধরনের কথা বলছেন! তার মানে বাংলা বর্তমানে কতটা বিপদজনক হয়ে রয়েছে গোটা দেশের কাছে? ইতিমধ্যেই কাকদ্বীপের নিউটন দাস নামে এক ব্যক্তির হদিশ সামনে আসতেই রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে। বাংলাদেশের আগস্ট আন্দোলনে যিনি জড়িত, তিনি কি করে এই রাজ্যে ভোটার তালিকায় নাম তুললেন! এটা একটা বড় প্রশ্নের কারণ। ক্রমাগত রোহিঙ্গা, অনুপ্রবেশকারীরা এই রাজ্যে ঢুকে রাজ্যের ভৌগোলিক চিত্রকে পাল্টে দেওয়ার একটা পরিকল্পনা করছে। আর এর পেছনে তৃণমূলের যে ভোটব্যাংক রয়েছে, সেটা বুঝতে বাকি নেই বিরোধীদের। তাই সেই জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে বাংলা তো বটেই, গোটা ভারতবর্ষকে বাঁচানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গের পরিবর্তনটা এখন সব থেকে বড় প্রয়োজনীয় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। সেই কারণে নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে অমিত শাহরা বারবার এসে বুঝিয়ে দিচ্ছেন, এবার তাদের টার্গেট বাংলা।
যদিও বা বিজেপির এই সমস্ত দাবিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ মহল। তাদের বক্তব্য, সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে বারবার ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি করার চেষ্টা করেন সুকান্তবাবুরা। এর আগেও তারা বাংলা দখলের স্বপ্ন দেখিয়েছিল। বারবার বাংলায় এসে সভা করে অশ্ব ডিম্ব ফলাফল হয়েছে। এবারেও পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তারা যত কুৎসা এবং অপপ্রচার করবেন, ততই তৃণমূলের আসন সংখ্যা বাড়বে। আর বিজেপি ২০২১ এ যা ফলাফল করেছিল, তার থেকেও তাদের অত্যন্ত শোচনীয় ফলাফল হবে এবং তারা বিরোধী দলনেতা পদের জন্য যে আসন পাওয়া দরকার, সেই আসনটুকুও পাবে না বলেই দাবি শাসক শিবিরের।
পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূল এমন যুক্তি দিতেই পারে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ যে অত্যন্ত খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, সেটা গোটা বাংলার মানুষের কাছেও স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনুপ্রবেশ কারীরাই এখন বাংলার কাছে প্রধান চিন্তার বিষয়। যেভাবে তারা ভোটার তালিকায় নাম তুলছেন, যেভাবে তাদের ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করছে এই রাজ্যের শাসক দল, তাতে বাংলার ভৌগোলিক চিত্রের ক্রমশ বদল হতে শুরু করবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই এবার প্রয়োজন বাংলায় সরকার বদলের। তা না হলে আগামী দিন যারা হিন্দু, যারা সনাতনী, তাদের কি করুণ দশা হবে, তা স্বপ্নেও কল্পনা করা যাবে না বলেই মনে করছে বিজেপি। তাই সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বাংলাকে তো বটেই, ভারতবর্ষকে রক্ষা করার জন্য বাংলা থেকে যাতে ভারতবর্ষকে সর্বনাশ করার কোনো কৌশল প্রয়োগ করা না হয়, তার জন্যই তৃণমূল সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সবার কাছেই শেষ সুযোগ, ২০২৬। ভয়াবহ তথ্য ফাঁস করে তেমনটাই বুঝিয়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।