প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
বীরভূম জেলা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এখন সকলেরই জানা। তবে সাম্প্রতিককালে সেখানে কোর কমিটি জেলা চালাচ্ছে। সকলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কিভাবে দল চলবে, তার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তার মধ্যেই অনুব্রত মণ্ডলের ভাইরাল ফোন কল ঘিরে যে বিতর্ক দানা বেধেছে, তাতে এমনিতেই তৃণমূল কংগ্রেস অস্বস্তিতে। আর তার মধ্যে অনুব্রত মন্ডলের সঙ্গে কাজল শেখের যে দ্বন্দ্ব, তা সামাল দিতেও মরিয়া হয়ে উঠছে তৃণমূল। আর এই পরিস্থিতিতে আবার কি সেই অনুব্রত মন্ডলের জন্যই নতুন করে জটিলতা তৈরি হলো তৃণমূলের মধ্যে? কি ঘটনা ঘটেছে?

বলা বাহুল্য, সামনেই তৃণমূলের একুশে জুলাই। প্রত্যেকটি জেলায় জেলায় এই নিয়ে চলছে প্রস্তুতি বৈঠক। বীরভূম জেলাতেও শুরু হয়েছে তৎপরতা। কিন্তু যেখানে সমস্ত সিদ্ধান্ত কোর কমিটির নেওয়ার কথা, সেখানে হঠাৎ করেই অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সুদীপ্ত ঘোষ দুবরাজপুর শহর এবং ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বকে নিয়ে একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি বৈঠক করলেন। আর সেই বৈঠক ঘিরেই দলের মধ্যেই তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। যেখানে কোর কমিটি জেলা চালাচ্ছে, সেখানে অনুব্রত মণ্ডল তো এখন শুধুমাত্র কোর কমিটির সদস্য। ফলে তার কোনো এক ঘনিষ্ঠ অনুগামী কি করে দুবরাজপুর শহর এবং ব্লককে নিয়ে এই বৈঠক করতে পারেন? এটা কি দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ নয়? এমনিতেই তো বীরভূম জেলায় এখন দলের মধ্যে অন্তর্কোন্দল রয়েছে। তার মধ্যে অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি যদি হঠাৎ করেই এইরকম কোনো বৈঠকে চলে যান এবং সেই বৈঠক করেন, তাহলে তো অনুব্রতবাবুর বিরোধী গোষ্ঠীরা আবার তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেন! এটা কি একুশে জুলাইয়ের আগে দলের ক্ষেত্রে খুব একটা ভালো বার্তা বহন করবে? তা নিয়েও তৃণমূলের মধ্যেই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।

কোর কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়েই কি সুদীপ্ত ঘোষ সেই বৈঠকে গিয়েছিলেন? ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে মুখ খুলেছেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কে কি বৈঠক ডেকেছে, আমি এখনও জানি না। তবে সব জায়গায় একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি বৈঠক করতে বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে কে বৈঠক ডেকেছেন, এটা জেনেই আমাকে পুরোটা বলতে হবে।” এদিকে তৃণমূল দলে কোন নীতি নেই এবং তারা এভাবেই একে অপরের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছে বলে এই ঘটনায় খোঁচা দিতে শুরু করেছে বিজেপি।

তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, বীরভূম জেলায় এখন অনুব্রত মণ্ডল এবং কাজল শেখের দ্বন্দ্ব সকলেরই জানা। সেক্ষেত্রে অনুব্রতবাবুর ঘনিষ্ঠ অনুগামী এই সুদীপ্ত ঘোষ কোনো একটি ব্লকে গিয়ে মিটিং করলেন, এটা কিন্তু কাজল শেখ এবং তার অনুগামীরা কোনোমতেই মেনে নেবেন না। ফলে তলায় তলায় একটা প্রকট গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। এমনিতেই তো অনুব্রত মণ্ডলের ভাইরাল ফোন কল বিতর্ক তৈরি করেছে। যা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। আর তার মধ্যে সেই অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি যদি কোর কমিটির নির্দেশকে উপেক্ষা করে একুশে জুলাইয়ের এইরকম বৈঠক করেন, তাহলে আগামী দিনে এই অনুব্রত মণ্ডলকে কেন্দ্র করে বীরভূম জেলায় আরও বড় সমস্যায় পড়ে যেতে পারে তৃণমূল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।