প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিজেপি খুব ভালোভাবেই ধরে ফেলেছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিভাবে পশ্চিমবঙ্গ চালাচ্ছেন! সেই কারণে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ বাংলা এসে ২০২৬-এ বাংলায় পরিবর্তন করতে হবে বলে সুর বেঁধে দিয়েছেন। তবে তৃণমূল যে সমস্ত দলগুলির সঙ্গে বিজেপি বিরোধীতায় দেশে বিরোধী জোট ইন্ডিতে রয়েছে, সেই সমস্ত দলগুলি কি জানে যে, পশ্চিমবঙ্গে কিভাবে বেকারদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে তৃণমূল সরকার! এবার দেশের সমস্ত দলের কাছে বাংলার দুর্দশার কথা তুলে ধরতে এবং তাদের হতাশা এবং বেদনার কথা তুলে ধরতে আজ দিল্লি যাচ্ছেন চাকরিহারা শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের একাংশ। আর তাদের এই পদক্ষেপ বিজেপি তো বটেই, গোটা দেশের যারা বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছেন, যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দলকে এতদিন ভালো ভাবতেন, তাদের সামনেও তৃণমূলের প্রেস্টিজ খোয়া যাবে বলেই মনে করছেন একাংশ।

 

ইতিমধ্যেই আজ চাকরিহারা শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের একটা অংশ দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। মূলত, দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির কাছে তারা তাদের অভাব অভিযোগের কথা তুলে ধরবেন বলে খবর। শুধু তাই নয়, সর্বভারতীয় স্তরে যে সমস্ত রাজনৈতিক দল রয়েছে, সেই সমস্ত দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও দেখা করে তারা তাদের সঙ্গে যে বঞ্চনা হয়েছে, যে লড়াই তারা করছেন, তা জানানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন। আর এখানে কিছুটা হলেও ভয় ধরেছে তৃণমূল নেতাদের মধ্যে। তারা মুখে যতই বলুক যে, তারা চাকরিহারা ব্যক্তিদের পাশে রয়েছেন। কিন্তু গোটা দেশের যে সমস্ত রাজনৈতিক দল রয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে পশ্চিমবঙ্গ খুব ভালো আছে বলে মনে করেন। কিন্তু এখানকার চাকরিহারা ব্যক্তিরা কিভাবে যন্ত্রণার মধ্যে রয়েছেন, কি কারণে তাদের চাকরি চলে গেছে, সেই নিয়ে যদি তৃণমূলের কোনো বন্ধু দলের কাছে গিয়ে সেই চাকরিহারা ব্যক্তিরা রাজ্যের দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন, তাহলে তৃণমূলের ভাবমূর্তি গোটা দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির কাছে বড় প্রশ্নের মুখে পড়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

 

বিজেপির দাবি, বাংলাকে শেষ করে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা দেশের সামনে সাধু সাজার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার আমলে যে পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে, যার জন্য এত যোগ্য ব্যক্তিরা চাকরি হারিয়েছেন, তার জবাব তিনি দিতে পারছেন না। উল্টে এখন সেই সমস্ত যোগ্য ব্যক্তিদের আবার পরীক্ষায় বসার জন্য নির্দেশিকা জারি করছে রাজ্য। তবে তৃণমূল সরকারের এই দুর্নীতি যার কারণে আজকে যোগ্যরা রাস্তায় বসে রয়েছেন, সেটা তো গোটা দেশের সামনে তুলে ধরতে হবে। তাই যোগ্য চাকরিহারা ব্যক্তিরা নিজেদের চাকরি হারিয়ে যে পদক্ষেপ নিচ্ছেন, তা অত্যন্ত সাধুবাদ যোগ্য বলেই জানাচ্ছে পদ্ম শিবির।

 

পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা দেশের সামনে ভালো সাজার চেষ্টা করেন। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে গেলেই তিনি বাংলার তুলনা এনে দাবি করার চেষ্টা করেন যে, বাংলা হচ্ছে সবদিক থেকে এগিয়ে। কিন্তু কোন কোন দিক থেকে বাংলা এগিয়ে, এবার চাকরি হারারা দিল্লি গিয়ে যদি সঠিক জায়গায় বাংলার এই দুর্দশার কথা পৌঁছে দিতে পারেন, তাহলে গোটা দেশের মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে, বাংলার আসল চিত্রটা। পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, তৃণমূল সরকার কতটা দুর্নীতি করেছে, যার ফলে আজকে অযোগ্যদের পাশাপাশি যারা যোগ্য, তাদের চাকরিটাও চলে গেছে। তাই বিষয়গত দিক থেকে তো বটেই, রাজনৈতিক দিক থেকেও চাকরিহারাদের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। যার ফলে এবার সর্বভারতীয় স্তরে যদি ইন্ডি জোটে থাকা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের কাছেও বাংলার এই দুর্দশার কথা যোগ্য চাকরিহারা ব্যক্তিরা পৌঁছে দেন, তাহলে কিন্তু সেই ইন্ডি জোটের কাছেও প্রেস্টিজ খোয়াতে হতে পারে তৃণমূল কংগ্রেসকে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।