প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পাল্টা অপারেশন সিঁদুর চালিয়ে পাকিস্তানকে কড়া ভাষায় জবাব দিয়েছে ভারত। তবে এই অপারেশন সিঁদুরের সকলে মিলে প্রশংসা করলেও তৃণমূল অবশ্য তাকে ভালো চোখে নিতে নারাজ কারণ তাদের রাজনীতি করতে হবে. আর রাজনীতি করতে গিয়ে সেই অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূলের একাধিক নেতারা যে সমস্ত কুরুচিকর আক্রমণ করছেন, তাতে তৃণমূলের রুচিবোধ নিয়েই প্রশ্ন তুলছে গোটা দেশবাসী। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে পহেলগাঁওয়ের ঘটনা থাকলেও কেন সেখানে অপারেশন সিঁদুরের কোনো উল্লেখ নেই, তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। তাহলে কি শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণেই পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রের পীঠস্থান বলে পরিচিত রাজ্য বিধানসভায় এই অপারেশন সিঁদুরের উল্লেখ করা হলো না? বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন, এই রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ তৃণমূলের দলদাস হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সেই কারণেই যেহেতু নরেন্দ্র মোদী এই অপারেশন সিঁদুর নাম দিয়েছেন এবং তাতে তৃণমূলের নেতা-নেত্রীদের আপত্তি রয়েছে, সেই কারণেই হয়ত সেই নাম প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না বলেই দাবি করছেন তারা। তবে শেষ পর্যন্ত এই নিয়ে যে বড় একটা পদক্ষেপ নিতে চলেছে বিজেপি, তার আভাসও পাওয়া গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সম্প্রতি কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে যে ২২ জন ভারতীয় পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে এবং সেনা যেভাবে প্রত্যাঘাত করেছে, তা নিয়ে একটি প্রস্তাব পেশ করা হবে। মূলত, বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই এই প্রস্তাব পেশ করা হবে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সকলেই পাকিস্থানকে যেভাবে জবাব দেওয়া হয়েছে, তাকে অপারেশন সিঁদুর বলে সম্বোধিত করছেন। কিন্তু কেন রাজ্য বিধানসভায় সেই প্রস্তাবে অপারেশন সিঁদুর এই নামের উল্লেখ নেই? কেন এই অপারেশন সিঁদুর বলতে এত দ্বিধাবোধ? আর সেই বিষয় নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রবল গোলযোগ। ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে সেনাবাহিনীর কৃতিত্বের কথা তুলে ধরে অপারেশন সিঁদুর এই শব্দটি সেই প্রস্তাবে রাখা হোক বলে দাবি তুলছে গেরুয়া শিবির।
এদিন এই প্রসঙ্গে ঘুরিয়ে রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষকে আক্রমণ করেছেন বিজেপির মুখ্য সচেতন শঙ্কর ঘোষ। তিনি বলেন, “এই বিষয়ে যা বলার তা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলবেন। তবে এটুকু বলা যায়, যারা এই প্রস্তাব লিখেছেন, তাদের ভারতীয় সেনাবাহিনী সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান নেই।” কিন্তু সবাই তো অপারেশন সিঁদুরকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন। তাহলে কেন এই শব্দ রাখা হলো না? গোটা বিষয় নিয়ে যদি বিজেপি প্রথম দিনেই ধুন্ধুমার লাগিয়ে দেয়, তাহলে কি করে চলবে রাজ্য বিধানসভা? কেন সেনাবাহিনীকে কৃতিত্ব দিয়ে এই শব্দ রাখা হচ্ছে না প্রস্তাবে? এদিন সেই প্রশ্নের উত্তরে রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপি পরিষদীয় দলের কথায় তো আর বিধানসভার অধিবেশন চলবে না। আমি যে প্রস্তাব এনেছি, সেই প্রস্তাবের ভিত্তিতেই আলোচনা হবে। বিজেপি পরিষদীয় দলের যা বক্তব্য, তা তারা ওই অধিবেশনেই রাখতে পারেন।”
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মঙ্গলবার অধিবেশনের শুরুতেই এই বিষয় নিয়ে তুমুল হট্টগোল বেঁধে যেতে পারে। কারণ শুভেন্দু অধিকারী মোটেই এই বিষয়কে নিয়ে ছেড়ে কথা বলবেন না। উল্টে যাতে অপারেশন সিঁদুর এই শব্দটি প্রস্তাবে রাখা হয়, তার জন্য প্রবল দাবি জানাতে পারেন বিজেপি বিধায়করা। তারা প্রশ্ন তুলতে পারেন যে, সত্যিই তো, কেন এই শব্দ নিয়ে এত আপত্তি? কেন এই শব্দ গোটা দেশের মানুষ স্বাগত জানালেও, এই রাজ্য বিধানসভার প্রস্তাবে তা রাখা হচ্ছে না? তাহলে কি রাজনৈতিক কারণেই উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কারও কারও কথায় এই রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ সেনাবাহিনীকে অপমান করছেন! এই প্রশ্ন তুলে মঙ্গলবার অধিবেশনের দিনেই বড় পদক্ষেপ নিতে পারে বিজেপি বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।