প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – এই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস যেভাবে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের তোষণ করছে, তাতে তারা যে সেই সম্প্রদায়ের পুরো ভোটটাই পাবে, তা পরিষ্কার বিজেপির কাছে। তাই গেরুয়া শিবির বা শুভেন্দু অধিকারী সেই নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের ভোট নেওয়ার জন্য মোটেই তৎপরতা দেখাচ্ছেন না। বরঞ্চ হিন্দুদের যাতে আরও বেশি করে ঐক্যবদ্ধ করা যায় এবং হিন্দুদের মধ্যে যাতে কেউ দ্বিখণ্ডিত না থাকেন, তার জন্য মরিয়া চেষ্টা করছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। প্রত্যেকটি সভায় গিয়ে তিনি এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছেন, হিন্দুরা ঐক্যবদ্ধ থাকুন। তাদের ভোট যাতে কোনোমতেই তৃনমূলের দিকে না যায়। আর এই অসম্ভব যদি সম্ভব হয়, তাহলেই তৃণমূল যতই একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের সমস্ত ভোট পেয়ে যাক না কেন, তার পরেও তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। সন্দেশখালির মত এলাকায় গিয়ে এদিন সেই কথাই শোনা গেল রাজ্যের বিরোধী দলনেতার গলায়।

 

বলা বাহুল্য, এদিন সন্দেশখালির ন্যাজাটে একটি সভায় বক্তব্য রাখেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখানেই সমস্ত হিন্দু সম্প্রদায়কে একত্রিত থাকার বার্তা দেন তিনি। শুভেন্দু বাবু বলেন, “রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম, ইসকন, আর্য সমাজ, লোকনাথ ব্রহ্মচারী, রামগোপাল ঠাকুর, বালক ব্রহ্মচারী মহারাজ। ভাগ হবেন না। সমস্ত মঠ আঁকড়ে রাখুন। কিন্তু ফাইনালে হাতে রাখুন গীতা। ধর্ম রক্ষতি রক্ষিতঃ। জাগো হিন্দু। আমরা কথা দিতে পারি, উত্তরপ্রদেশ, আসাম দেখেছেন। আমাদের আনুন। আরও ভালো কিছু দেখবেন।” আর শুভেন্দুবাবুর এই বক্তব্যের পরেই মনে করা হচ্ছে যে, তিনি সঠিক কৌশল প্রয়োগ করছেন। যে নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের ভোট নিয়ে তৃণমূল এত মাতামাতি করে, তাদের দিকে মাথা না লাগিয়ে বরঞ্চ যে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য তারা লড়াই করছেন, সেই হিন্দু সম্প্রদায়ের সমস্ত ভোট যাতে তাদের দিকে আসে, সেদিকেই বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত গেরুয়া শিবিরের। আর ঠিক সেই কৌশলই প্রয়োগ করতে শুরু করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।

 

গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, এই রাজ্যে হিন্দুরা মোটেই সুরক্ষিত নয়। এবারেও যদি তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসে, তাহলে হিন্দুরা টিকে থাকতে পারবে কিনা, সেটাই একটা লাখ টাকার প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ হিন্দুদের কি করুণ পরিণতি, তা দেখতে পাচ্ছেন এপারের সনাতনীরা। তাই নিজেদের ধর্ম রক্ষা করার জন্য নিজেদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজেদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে একবার যারা ওপার বাংলায় ছেড়ে এক কাপড়ে এপার বাংলায় এসেছেন, তারা এপার বাংলা থেকে যদি আবার পালাতে হয়, তাহলে কোথায় যাবেন! এই বিষয়টা ভাবার চেষ্টা করুন। তাই সময় থাকতে থাকতেই নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তৃণমূলকে বিদায়ের শপথ নিন বলেই আহ্বান জানাচ্ছে পদ্ম শিবির।

 

যদিও বা বিজেপির এই সমস্ত বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, নতুন নতুন হিন্দু হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি এই সমস্ত কথা বলে ময়দানে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিয়ে আসছেন। এই রাজ্যে সকল ধর্মের মানুষ উন্নয়নের মধ্যে দিয়ে সুরক্ষিত। সেখানে ধর্মীয় সুড়সুড়ি দিয়ে বিভেদের রাজনীতি করতে চাইছে বিজেপি। আগামী দিনে তাদের এই পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়ে আবারও রাজ্যের সাধারণ মানুষ তৃণমূলকে ক্ষমতায় আনবে বলেই দাবি ঘাসফুল শিবিরের।