প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – এই রাজ্যে যেভাবে অবাধে অনুপ্রবেশ চলছে, যেভাবে কাঁটাতারের বেড়া দিতে জমি দেওয়ার কথা বলার পরেও রাজ্য সরকার তাদের দীর্ঘদিন ধরে দেয়নি বলে অভিযোগ করেছে কেন্দ্র, তারপরেও তৃণমূল নেতারা বড় বড় কথা বলছেন। তাদের মুখ থেকে একের পর এক ভিত্তিহীন অভিযোগ সামনে আসছে। তবে সাম্প্রতিককালে কাকদ্বীপের নিউটন দাসের তথ্য সামনে আসার পর তৃণমূল নেতারা কি বলবেন, তা তারা নিজেরাও জানেন না। বিরোধীরা এই অনুপ্রবেশ ইস্যু নিয়ে আরও বেশি করে শাসক দলকে চেপে ধরছে। এবার সন্দেশখালি থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যে তথ্য দিলেন, তাতে কি মুখ লুকানোর মত জায়গা খুঁজে পাবে নবান্ন? যে সুন্দরবন আমাদের গর্বের অরণ্য, যেখানে পর্যটকরা মাঝেমধ্যেই ঘুরতে যান, সেই সুন্দরবন কি রাতারাতি দখল করে নিচ্ছেন এই সমস্ত অনুপ্রবেশকারীরা? শুভেন্দুবাবুর মারাত্মক তথ্য সামনে আসার পর কিন্তু তেমনটাই আশঙ্কা করছেন একাংশ। কি ঘটনা ঘটেছে? কেন এমনটা বলা হচ্ছে?
বলা বাহুল্য, এদিন সন্দেশখালির ন্যাজাটে একটি সভায় উপস্থিত হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখানেই অনুপ্রবেশ নিয়ে সোচ্চার হন তিনি। শুভেন্দুবাবু বলেন, “রোহিঙ্গারা ভারতে অনুপ্রবেশ করছে। হিন্দুদের তাড়িয়ে রোহিঙ্গারা জমি দখল করছে। সুন্দরবনকে শেষ করে দিচ্ছে এই অনুপ্রবেশকারীরা।” আর এখানেই প্রশ্ন যে, রাজ্যের প্রশাসন তাহলে কি করছে? তৃণমূলের পক্ষ থেকে এখন বলা হতেই পারে যে, সীমান্ত তো দেখার দায়িত্ব বিএসএফের। তাহলে বিএসএফ কেন সেই দিকে নজর রাখছে না? আর এখানেই পাল্টা প্রশ্ন যে, এতদিন যে জমি দেওয়ার কথা বলা হচ্ছিল, সেই জমি কেন রাজ্য সরকার দেয়নি? সেই জমি যদি সঠিক টাইমে দেওয়া হত, তাহলে তো সীমান্ত দিয়ে একটা পাখিও এপারে আসতে পারত না। অনেকে বলছেন, শুভেন্দু অধিকারীর কথাটা কিন্তু একেবারেই উড়িয়ে দেওয়ার মত নয়। কারণ কাকদ্বীপের মতো এলাকায় যে নিউটন দাসকে নিয়ে এত প্রশ্ন উঠেছে, সেই নিউটন দাস গত আগস্ট আন্দোলনে বাংলাদেশে ছিলেন। ইতিমধ্যেই সেই রকম একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তারপরে তিনি কি করে এপারে এসে ভোটার তালিকায় নাম তুললেন, সেটাই তো একটা বড় প্রশ্ন। তাহলে কি রাজ্যের শাসক দলের বদান্যতায় এইরকম আরও অনেক নিউটন দাস ভোটার তালিকায় রয়েছেন? শুধু তাই নয়, তার সঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতার ছবিও ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে দাবি বিরোধীদের।
ইতিমধ্যেই শুভেন্দু অধিকারীর এই বক্তব্যের পর পাল্টা শাসকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে বিজেপি। তাদের দাবি, সঠিক কথাই বলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। গোটা রাজ্যকেই এই অনুপ্রবেশ কারীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করা হচ্ছে। কারণ তৃণমূল খুব ভালো করেই জানে, তারা হিন্দুদের ভোট পাবে না। সেই কারণেই হিন্দুদের যেভাবেই হোক বিতাড়িত করে অনুপ্রবেশকারীদের ভোটার তালিকায় জায়গা দেওয়া হচ্ছে। আর তারা গোটা রাজ্যকে সর্বনাশের মুখে ফেলে দিচ্ছে। রাজ্যের ভৌগোলিক চিত্র ক্রমশ প্রশ্নের মুখে পড়ে যাচ্ছে তৃণমূলের এই ভয়ংকর চক্রান্তের জন্য। তাই এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে বিসর্জন দিয়েই রাজ্যকে এই দুঃশাসনের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে বলেই দাবি করছেন তারা।
পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপির কাছে এখন একটা বড় চ্যালেঞ্জ ভোটার তালিকায় স্বচ্ছতা আনা। ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে অনুপ্রবেশকারীরা এই রাজ্যে ভোটার তালিকায় নাম তুলে নিয়েছেন, বেছে বেছে তাদের চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত গেরুয়া শিবিরের। নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা উচিত তাদের। কারণ তা না হলে এই অনুপ্রবেশকারীরা যেভাবে এপারে আসছে, তাতে তাদের দৌলতেই আবার ক্ষমতায় চলে আসতে পারে এই রাজ্যের বর্তমান শাসক দল বলেই অভিযোগ বিরোধীদের। তাই সময় থাকতে থাকতেই শুভেন্দু অধিকারী যে গোপন চক্রান্ত এবং অভিসন্ধি ধরে ফেলেছেন, তাতে হিন্দুদের রক্ষা করতে এবার অনুপ্রবেশ কারীদের বিতাড়িত করাই প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে। আর সেই কাজ যদি তারা ঠিক মত করতে পারে, তাহলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে আটকে দেওয়া অনেকটাই সুবিধা হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।