প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- পার্টি করে কি হবে? রাজনৈতিক কৌশল ঠিক করে কি হবে! দল যখন ক্ষমতায় আছে, তখন খাওয়া-দাওয়া, মজমস্তি, এটাই তো সব থেকে বড় কথা। তাই একটি রাজনৈতিক দলের যে রাজনৈতিক কৌশল হওয়া উচিত, তার বাইরে বেরিয়ে কর্মীসভায় দলের পক্ষ থেকে কি বার্তা দেওয়া হবে, তার থেকেও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, কি খাওয়া দাওয়া হবে তা নিয়ে। সকাল থেকেই এলাহি আয়োজন শুরু হয়েছে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলায় তৃণমূলের কর্মী সভায়। চলছে রান্নাবান্নার প্রস্তুতি। নেতারা আসবেন, বক্তব্য রাখবেন, কি খাওয়া দাওয়া হবে, সেদিকেই যেন বেশি মনোযোগী তৃণমূলের কর্মীরা। মাছ-মাংসের পাশাপাশি দুপুরবেলার মেনুতে থাকছে একাধিক পদ। আর এখানেই প্রশ্ন, ক্ষমতায় আসার পরেই কেন এত বদলে গেল তৃণমূল?
বলা বাহুল্য, আজ ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে একটি কর্মী সভার আয়োজন করা হয়েছে। ঘাটালের বিদ্যাসাগর স্কুলের মাঠে এই সভা হবে। যেখানে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের একাধিক দাপুটে মন্ত্রী। মূলত, তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতি জেলা তৃণমূলের সভাপতি দায়িত্ব পেয়েছেন। তাই তার নেতৃত্বেই এবার এই বিরাট আকারে কর্মীসভা হতে চলেছে। তবে এই সভায় রাজনৈতিক কি বার্তা আসবে, তার থেকেও বেশি নেতাদের মধ্যে কর্মীদের মধ্যে কৌতুহল প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে রান্নাবান্না এবং খাওয়া দাওয়া নিয়ে। আর এতেই অনেকে কটাক্ষ করে বলছেন যে, এই করেই ডুবতে শুরু করেছে তৃণমূল।
ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে তৃণমূলকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, তৃণমূলের রাজনৈতিক মতাদর্শ বলে কিছু নেই। চুরি এবং দুর্নীতিই তাদের প্রধান অস্ত্র। তাই একটি রাজনৈতিক কর্মী সভায় নেতারা কি বার্তা দেবেন, তার জন্য কর্মীরা মুখিয়ে থাকেন। কিন্তু তৃণমূল দলে এখন সবাই নিজেদের স্বার্থ গোটাতেই ব্যস্ত। তাই কি খাওয়া দাওয়া হবে, কিভাবে আনন্দ করা যাবে, কিভাবে সেলিব্রেট করা যাবে, এটাই এখন তৃণমূলের প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্ত ঘটনাতেই প্রমাণিত যে, তৃণমূলের শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী দিনে তারা মানুষের থেকে আরও বেশি করে জন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন বলেই দাবি বিরোধীদের।
পর্যবেক্ষকদের মতে, একটা সময় তৃণমূলে এই অবস্থা ছিল যে, কর্মীরা শুধুমাত্র আবেগের টানে দলের নেতাদের কথা শুনতে যেতেন। দল কিছু দিতে পারত না। কিন্তু তাও আবেগ এবং মতাদর্শকে সামনে রেখে প্রচুর মানুষ তৃণমূলের বিভিন্ন সভায় শামিল হতেন। কিন্তু এখন তৃণমূল নিজেরাই নিজেদের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। রাজ্যের যে পরিস্থিতি হয়েছে, তাতে সাধারণ মানুষ আর কোনোমতেই আবেগ দিয়ে এই তৃণমূলকে উপলব্ধি করতে চাইছে না। আর ঘাটালে যে সভা হতে চলেছে, তার আগে যেভাবে খাওয়া-দাওয়া নিয়ে সব থেকে বেশি প্রস্তুতি হচ্ছে, তাতেই স্পষ্ট যে, হয়ত এই বিষয়কে সামনে রেখেই তৃণমূল এখানে কর্মীদের যাতে বেশি সমাগম হয়, তার জন্য মরিয়া চেষ্টা করবে। আসলে দলের নেতারা যেমন এখন নিজেদের স্বার্থ ঘগোটাতে ব্যস্ত, ঠিক তেমনই কর্মীরাও যেখানে সুবিধে পাওয়া যাবে, সেখানেই চলে যাবেন। আর সকলের মধ্যে এই মনোভাবের কারণেই তৃণমূলের শেষের সেদিন আসতে আর খুব বেশি দেরি নেই বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।