প্রিয়বন্ধু মিডিয়া – বিধানসভা ভোট যতই এগিয়ে আসছে, ততই রাজ্য রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসছেন দিলীপ ঘোষ। প্রাক্তন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি হিসেবে দিলীপ ঘোষের ভূমিকা এবং অবস্থান নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হয়ে সেই জল্পনাকে আরও উসকে দেন দিলীপ। রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, তৃণমূলে তাঁর যোগদানের রাস্তা কি তবে পরিষ্কার হয়ে গেল? যদিও এই দাবি নিজেই সরাসরি নাকচ করেছেন তিনি। তা সত্ত্বেও বিতর্কে ঘৃতাহুতি পড়ে আরও এক কাণ্ডে।

দলবদলের গুঞ্জনের মধ্যেই নিয়ম করে প্রতিদিন ইকোপার্কে মর্নিং ওয়াকে যাচ্ছেন দিলীপ ঘোষ। আগের মতোই সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতাও করছিলেন তিনি। তবে হঠাৎ করে ১ জুন থেকে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া বন্ধ করে দেন। এই হঠাৎ পরিবর্তনে স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে—কেন দিলীপ ঘোষ মুখে কুলুপ এঁটেছেন? সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে তিনি বরাবরই অকপট ছিলেন। ফলে এই আচমকা নীরবতা ঘিরে সন্দেহ দানা বাঁধে, তবে কি কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন দিলীপ?

এই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার এক সংবাদিকের প্রশ্নে দিলীপ ঘোষ যা করলেন, তাতে জল্পনা আরও ঘনীভূত হয়। তিনি কোনও উত্তর না দিয়ে বরং হেসে গাছ থেকে ফুল পাড়তে শুরু করেন। তাঁর এই আচরণে অনেকেই মনে করছেন, এটা নিছক ফুল তোলার কাজ নয়, বরং এক প্রতীকী বার্তা। বিজেপির প্রতীক পদ্মফুল হলেও তৃণমূলের প্রতীক জোড়াফুল। ফলে দিলীপের এই আচরণকে ‘ফুল পরিবর্তনের ইঙ্গিত’ বলেই ধরে নিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যদিও বিষয়টি নিয়ে দিলীপ কোনও স্পষ্ট বার্তা দেননি, কিন্তু ফুল পাড়ার এই অভিনব কৌশল যে এক নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।

তবে দলবদল নিয়ে এর আগেও মুখ খুলেছিলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছিলেন, “ইচ্ছা হলে হতে পারে, কোথায়… উপরে চলে যেতে পারি, আর তৃণমূল কী?” আবার সেই সঙ্গেই এ কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, “আমার কর্মীরা জানেন, আমি তৃণমূলে যাব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও সেটা জানেন।” তাই প্রকাশ্যে দিলীপের বার্তা যতই স্পষ্ট হোক, তাঁর প্রতিটি ছোট ছোট আচরণ এখন গভীর বিশ্লেষণের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফুল পাড়ার মতো নিরীহ কাজও রাজনীতির ময়দানে পরিণত হয়েছে এক রহস্যময় সংকেতে। তবে দিলীপ ঘোষ আদৌ তৃণমূলের দিকে এগোচ্ছেন কিনা, সে প্রশ্নের উত্তর ভবিষ্যতের হাতেই।