প্রিয়বন্ধু মিডিয়া – আর মাত্র দু’মাস পরেই পূর্ণ হবে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাকে ঘিরে রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্য তোলা আরজি কর কাণ্ডের এক বছর। কিন্তু তদন্তে বিশেষ অগ্রগতি নেই, বরং চতুর্থ স্ট্যাটাস রিপোর্টেও উঠে এসেছে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ। এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র সঞ্জয় রায়ের সাজা ঘোষিত হলেও বাকিদের বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। নির্যাতিতার পরিবার এবং তাঁদের আইনজীবীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তদন্ত কার্যত ‘ধামাচাপা’ পড়েছে।

সোমবার শিয়ালদহ আদালতে সিবিআই তাদের চতুর্থ স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেয়। আদালতে নির্যাতিতার পরিবারের তরফের আইনজীবী জানান, মৃত্যুর আগে তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে যাঁদের শেষ দেখা হয়েছিল, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। তাঁর অভিযোগ, “লাস্ট সিন থিওরি” অনুযায়ী তদন্তই হয়নি। এমনকি, সিবিআইয়ের রিপোর্টে মূলত ‘কপি পেস্ট’-এর ছাপ রয়েছে এবং তেমন কোনও নতুন তথ্য উঠে আসছে না। আদালতের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন তোলেন—তদন্তকারী অফিসাররা আদৌ কী কাজ করছেন?

এই মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে দু’জন ৯০ দিনের হেফাজতে থাকলেও এখনও তাঁদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট কিছু প্রমাণ পেশ হয়নি। পরিবারের আইনজীবীর বক্তব্য—যদি তাঁদের বিরুদ্ধে কিছু না থাকে, তাহলে এতদিন ধরে হেফাজতে রাখার মানে কী? তিনি এটিকে একটি ‘সামাজিক অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, “আমরা শুধু স্ট্যাটাস রিপোর্ট চাইছি না, চাই প্রকৃত তদন্ত।” তাঁর মতে, এই ঘটনা শুধু একজনের নয়, গোটা সমাজের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে আইনজীবী জানান, এখনও তদন্ত চলছে। পিএমও পোর্টাল এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজের প্রতিবেদন অপেক্ষমাণ রয়েছে। কিন্তু আদালতের তরফ থেকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়—“শুধু রিপোর্টের অপেক্ষা করলে চলবে না। একজন সরকারি চিকিৎসক নিজের কর্মস্থলে খুন হয়েছেন। বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্বে দেখা উচিত।” বিচারক নির্দেশ দেন, আগামী ১৬ জুলাই-র মধ্যে পরবর্তী স্ট্যাটাস রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০২3 সালের আগস্টে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এক নির্জন কক্ষ থেকে তরুণী চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে রাজ্যজুড়ে তীব্র প্রতিবাদ হয়েছিল। কিন্তু প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও তদন্তে নির্দিষ্ট গতি নেই। এই পরিস্থিতিতে পরিবার, সমাজ এবং আদালত—তিন দিক থেকেই চাপ বাড়ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উপর। এখন দেখার, ১৬ জুলাইয়ের রিপোর্টে আদৌ কোনো নির্ভরযোগ্য অগ্রগতি উঠে আসে কি না।