প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার ক্ষেত্রে বড় ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। যেখানে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেওয়ার পরই জানিয়ে দিয়েছিল ছয় সপ্তাহের মধ্যে ২৫ শতাংশ ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্য সরকারি কর্মীদের। আর এর ফলেই সকলের মধ্যে প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল যে, রাজ্য কি এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে আবার রিভিউ পিটিশন করবে, নাকি তারা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী মিটিয়ে দেবে মহার্ঘ ভাতা! অবশেষে নবান্নের পক্ষ থেকে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে, তাতে অনেকেই মনে করছেন যে, এবার সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ মেনে নেওয়া ছাড়া রাজ্যের কাছে আর কোনো উপায় নেই। আর সেই কারণেই নবান্ন শুরু করে দিয়েছে তৎপরতা।
বিশেষ সূত্র মারফত খবর, ইতিমধ্যেই রাজ্যের অর্থ দপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দপ্তরে জানতে চাওয়া হয়েছে যে, কত সংখ্যক সরকারি কর্মচারী রয়েছেন, যারা মহার্ঘ ভাতা পাবেন! সরকারি কর্মচারীদের একাংশ বলছেন, এই সংখ্যাটা ১০ লক্ষের কাছাকাছি। তবে এক্ষেত্রে ২০০৯ সাল ভাতার আগে থেকে যারা সরকারি চাকরিতে ছিলেন, তারাই শুধুমাত্র এই ১০ বছরের সময়কালে যে মহার্ঘ ভাতা বকেয়া ছিল, তার সুবিধে পাবেন। কেননা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সময় ২০০৯ সালে পঞ্চম বেতন কমিশনের অধীনে যে রোপা জারি করা হয়েছিল, তার মেয়াদ ২০১৯ সালের শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই ২০১৯ সালের পরবর্তী সময়কালে যারা সরকারি চাকরি পেয়েছেন, তারা এই ২৫ শতাংশ ডিএ পাবেন না বলেই মনে করছেন সরকারি কর্মচারী সংগঠনের একটা অংশ।
এদিন এই প্রসঙ্গে সিপিএম সমস্ত সরকারি কর্মচারী সংগঠন কো-অর্ডিনেশনের নেতা বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরী বলেন, “বর্তমান রাজ্য সরকার সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য মহার্ঘ ভাতা থেকে দীর্ঘদিন বঞ্চিত রেখেছে। তাই আমরা বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য লড়াই করছি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মোট বকেয়া মহার্ঘ ভাতার ২৫ শতাংশ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই নির্দেশের পর থেকে সরকার এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এখন রাজ্য সরকার কোথায় গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে, তা আমরা জানি না। আমরা আমাদের অধিকার পাওয়ার দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিচ্ছি।” একই কথা শোনা গিয়েছে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী মঞ্চের নেতা স্বপন মন্ডলের গলায়। তবে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মেটানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নেবেন তাকেই সমর্থন করা হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, তারপর রাজ্য সরকারের আর বিকল্প কোনো উপায় নেই। এখন তাদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দিতেই হবে। আর যদি তারা তা না করে, তাহলে আদালতের নির্দেশ ভঙ্গ যেমন হবে, ঠিক তেমনই আবার চরম বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হতে পারে এই রাজ্যের সরকারকে। তাই তলায় তলায় কোন দপ্তরে কত সরকারি কর্মচারী রয়েছেন, যারা এই মহার্ঘ ভাতা পাবেন, তাদের খোঁজ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের অর্থ দপ্তর। তবে এই খোঁজ নিয়েই প্রক্রিয়া সীমাবদ্ধ থাকে, নাকি বাস্তবে আদালতের নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মহার্ঘভাতা মিটিয়ে দেয় রাজ্য, সেদিকেই নজর থাকবে বিশেষজ্ঞদের।