প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- অবশেষে আজ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ, চাকরিহারা, চাকরিপ্রার্থী এবং চাকরিজীবীদের নবান্ন অভিযান রয়েছে। যে নবান্ন অভিযানে রীতিমতো থরথর করে কাঁপতে শুরু করেছে রাজ্যের প্রশাসন। অন্তত তেমনটাই মনে করা হচ্ছে। কারণ যদি তারা এই নবান্ন অভিযানকে ভয় নাই বা পাবে, তাহলে কেন আগে থেকেই সেই নবান্ন অভিযানকে আটকানোর জন্য এত সরঞ্জাম নিয়ে হাজির হয়ে গিয়েছে পুলিশ? যেভাবে হাওড়া স্টেশন থেকে নবান্ন যাওয়ার পথে বিভিন্ন এলাকায় ব্যারিকেড থেকে শুরু করে বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করছে প্রশাসন, তাতে প্রশ্ন উঠছে যে, নবান্ন অভিযানে কেন তাদের এত ভয়? কেন আন্দোলন কারীদের মুখোমুখি হওয়ার সাহস নেই এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের?

বলা বাহুল্য, প্রথমে একটি খবর রটিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, নবান্ন অভিযানে নাকি আদালতের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু সেরকম কোনো কিছুই যে আদালত বলেনি, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাই স্বাভাবিকভাবেই আজ পুলিশের বাধাকে উপেক্ষা করে নবান্ন অভিযান করতে চলেছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ, চাকরিহারা, চাকরিপ্রার্থী এবং চাকরি জীবীরা। তবে এই রাজ্যের প্রশাসন যে গণতান্ত্রিক কায়দায় সাধারণ মানুষের কোনো কথা শোনে না এবং যারাই আন্দোলন করবে, তাদের যে কন্ঠরুদ্ধ করবে, তা এক প্রকার ধরেই নেওয়া হয়েছিল। তাই সেই নবান্ন অভিযানের আগেই রীতিমত ড্রিল মেশিন দিয়ে রাস্তায় গর্ত করে মজবুত ব্যারিকেড বসানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। ঠিক কি কি প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ?

জানা গিয়েছে, হাওড়া স্টেশন থেকে নবান্ন যাওয়ার একাধিক রাস্তা রয়েছে। আর সেই সমস্ত রাস্তা দিয়ে যাতে কোনোভাবেই কেউ নবান্ন অভিমুখে যেতে না পারেন, তার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে সব রকম প্রস্তুতি। ফোরশোর রোডে লোহার ব্যারিকেড করা হচ্ছে। রামকৃষ্ণপুর ঘাট মোড়ে লোহার বিম ঢালাই করে বসানো হয়েছে, যাতে কেউ সেই রাস্তা ধরে নবান্নের দিকে যেতে না পারে। এমনকি আশ্চর্যজনকভাবে রাস্তায় ড্রিল মেশিন দিয়ে সেখানেও গর্ত করে বসানো হচ্ছে মজবুত ব্যারিকেড। আর এতসবের পরেও প্রচুর পুলিশ মোতায়েন থাকছে। কারণ প্রশাসন রীতিমত উদ্বিগ্ন যে, আন্দোলনকারীরা বড় কোনো পদক্ষেপ নিয়ে নিতে পারে। তাই জলকামান থেকে শুরু করে সমস্ত রকম ব্যবস্থা এই আন্দোলনকে আটকানোর জন্য পরিকল্পনা করে নিয়েছে প্রশাসন।

আর প্রশাসনের এই অতি সক্রিয়তা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, ন্যায্য দাবি নিয়েই তো আন্দোলন করছেন আন্দোলনকারীরা। নবান্ন অভিযান তো এমনি এমনি ডাকা হয়নি। নিশ্চয়ই তার পেছনে কিছু কারণ হয়েছে। তাহলে এই রাজ্যের শাসক দলের প্রধানের আন্দোলনকারীদের বক্তব্য শুনতে অসুবিধা কোথায়? কেন তাদের নবান্ন পর্যন্ত যেতে দেওয়া হচ্ছে না? এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলে ক্ষমতায় এসেছিলেন। তাহলে তার সরকারের আমলে তিনি কেন সেই আন্দোলনকে বন্ধ করতে পুলিশকে দিয়ে সব রকম রাস্তা নবান্নে যাওয়ার বন্ধ করে দিচ্ছেন? আসলে এই রাজ্যের প্রশাসন যে জবাব দেওয়ার মত জায়গায় নেই এবং তারা যে এই নবান্ন আন্দোলনের ফলে অত্যন্ত জড়সড় হয়ে রয়েছে, তা পুলিশের এই অতি সক্রিয়তার মধ্যে দিয়েই আরও একবার স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠলো বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।