
প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যুক্ত হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর শুভেন্দু অধিকারীকে দলে রাখার জন্য তৃণমূল যে সব রকম চেষ্টা করেছিল, তা বলার অপেক্ষায় রাখে না। বিভিন্ন সময় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দাবি করেছিলেন, তাকে রাখার জন্য আইপ্যাক থেকে শুরু করে তৃণমূলের অনেক নেতারা তার পায়ে পড়েছিলেন। কিন্তু তিনি মাথা উঁচু করে মন্ত্রী থেকে শুরু করে অনেক পদ থাকা সত্ত্বেও সেই সমস্ত কিছুতে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে এসেছেন। আর শুভেন্দুবাবু যখনই এই কথা বলেন, তখনই তৃণমূলের পক্ষ থেকে পাল্টা তাকে কটাক্ষ করে বলা হয় যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বলেই শুভেন্দু অধিকারী এত বড় নেতা হয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত তার মাথায় নেই, এখন তিনি শূন্য। কিন্তু যখনই তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই কথা আসে, তখনই পাল্টা প্রশ্ন ওঠে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত বড় নেত্রী হওয়া সত্ত্বেও কেন শুভেন্দু অধিকারীর কাছে তাহলে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে হেরে গেলেন? আর এসবের মধ্যেই বিশ্বকর্মা পুজোর সূচনা পর্বে তৃণমূলের যাবতীয় সমালোচনার জবাব দিয়ে মাথা উঁচু করে কি করে ক্ষমতা ত্যাগ করতে হয় এবং কি করে এই নৈরাজ্যকে সরাতে লড়াই করতে হয়, প্রকাশ্য সভায় সেই কথা বলে শাসকের মুখে রীতিমত ঝামা ঘষে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
গতকাল হলদিয়ার বিভিন্ন জায়গায় বিশ্বকর্মা পূজোর সূচনা হয়। একাধিক কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বর্তমানে শুভেন্দুবাবু যেখানেই যাচ্ছেন, সেখানেই এই রাজ্যের বর্তমান সরকারকে আক্রমণ করে বিভিন্ন মন্তব্য করছেন। বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, ২৬ এর নির্বাচনে বাংলার জন্য পরিবর্তনটা কতটা জরুরী। এদিনও বিশ্বকর্মা পূজার সূচনায় পশ্চিমবঙ্গের শিল্পের যে অবনতি হয়েছে, যেভাবে শিল্পকে ধ্বংস করে দিয়েছে এই রাজ্য সরকার, তা নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তৃণমূলের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যেই যে বলা হয় যে, শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়া কার্যত শূন্য। এদিনের কর্মসূচি থেকে সেই জবাবও দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “গুন্ডাদের তৈরি করা ছাড়া, আর ২০০-৫০০ টাকা ভাতা দেওয়া ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে আর কিছু নেই। আমাকে কেউ তাড়ায়নি। আমি সব ফেলে এদের তাড়ানোর জন্য মাঠে নেমেছি।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একদম সঠিক তথ্য দিয়ে তৃণমূলের মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু অধিকারীকে দলে রাখার জন্য যে তৃণমূলের অনেক নেতাই চেষ্টা করেছিলেন, তা গোটা রাজ্যবাসীর জানা। শুভেন্দু অধিকারী যাতে না যায়, তার সমস্ত শর্ত মেনে যাতে তাকে দলে রাখা যায়, তার জন্য তৃণমূলের অনেক নেতারাই ময়দানে নেমেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। আর শুভেন্দু অধিকারী পদ বাঁচিয়ে কোনোদিন দল ত্যাগ করেননি। রীতিমত নিয়ম মেনে বিভিন্ন পদ থেকে পদত্যাগ করে ক্ষমতার মোহ যে তার নেই, শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচানোর জন্য এবং এই ফ্যাসিস্ট তৃণমূল সরকারকে উৎখাতের জন্যই যে তিনি দলবদল করেছেন, তা আরও একবার প্রকাশ্য কর্মসূচি থেকে জানিয়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।