প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
হাতে আর কয়েক মাস বাকি রয়েছে। তারপরেই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন। বারবার করে বিরোধীরা দাবি করছে, এই রাজ্যে শান্তিপূর্ণভাবে কখনই নির্বাচন হয় না। তাই এই রাজ্যের নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কমিশনকে আলাদা করে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে ভাবতে হবে। আর এই পরিস্থিতিতে বিহারে নির্বাচন কমিশনের একটি উদ্যোগ সামনে আসার পরেই প্রশ্ন উঠছে যে, তাহলে কি বাংলাতেও সেই রকম কোনো উদ্যোগ নেবে নির্বাচন কমিশন? যদি সেইরকম কোনো উদ্যোগ কমিশন নেয়, তাহলে তো বিরোধীদের তরফে ভুয়ো ভোটার সংক্রান্ত যে অভিযোগ, তা যেমন ধীরে ধীরে মিটতে শুরু করবে, ঠিক তেমনই তৃণমূল অনেকটাই চাপে পড়বে বলেই দাবি করছেন একাংশ। কিন্তু কি সেই উদ্যোগ! যা কমিশন গ্রহণ করলে রাজ্যের শাসক দলের ঘুম উড়তে শুরু করবে?

জানা গিয়েছে, সামনেই বিহারের বিধানসভা নির্বাচন। আর নির্বাচনের আগেই নতুন করে ভোটার তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। স্বাভাবিকভাবেই ২০২৬ এর পশ্চিমবঙ্গেও বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তাই তার আগে বিহারের মতই এখানেও কি নতুন করে ভোটার তালিকা তৈরি করার কাজ শুরু হবে? কমিশন কি সেই ব্যাপারে নজর দেবে? বিহারের ঘটনা সামনে আসার পর বিরোধীদের দাবি, এই রাজ্যে ভুয়ো ভোটার সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তাদের তরফে বারবার করে অভিযোগ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশী থেকে শুরু করে অনুপ্রবেশকারীরা এই রাজ্যে এসে ভোটার তালিকায় নাম তুলে নিচ্ছে। আর তাদের ভোট নিয়েই বারবার করে শাসক দল অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখল করছে। তাই সেই দিকে নজর দিলে এবং ভুয়ো ভোটারকে আটকে দিলেই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে বলেই দাবি করছেন তারা। তাই বিহারে যখন বিধানসভা নির্বাচনের আগে নতুন করে ভোটার তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন, তখন সেই একই কাজ যদি বাংলায় শুরু হয়, তাহলে যথেষ্ট খুশি হবে বিরোধীরা বলেই মনে করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যেই কমিশন বিহারের মত যদি বাংলাতেও নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা তৈরি করার কাজ শুরু করে, তাহলে তাকে অবশ্যই স্বাগত জানানো হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে বিরোধীরা। এদিন এই প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “এখানে তো নতুন ভোটার তালিকা হাওয়াই উচিত। এখানে ভুতুড়ে ভোটার ঢুকেই আছে।” তবে গোটা বিষয়টিকে তৃণমূল যে খুব একটা ভালো চোখে নিচ্ছে না, তা তাদের বক্তব্যেই স্পষ্ট। তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “এতে ষড়যন্ত্র দেখছি। নির্বাচন কমিশন বিজেপির হয়ে কাজ করছে। মহারাষ্ট্রে হঠাৎ ভোট বেড়ে গিয়েছিল। এবার কি বিহারেও তাই হতে চলেছে? বাংলায় এটা করলে উইদাউট ভেরিফিকেশন আমরা মানব না।”

পর্যবেক্ষকদের মতে, নির্বাচন কমিশনের বিহারের এই উদ্যোগ দেখেই তৃণমূলের মনে কিন্তু ভয় ধরে গিয়েছে। যার ফলে প্রশ্ন উঠছে যে, এই রাজ্যে বিরোধীরা যে অভিযোগ করে যে, তৃণমূল কংগ্রেসের জন্যই ভুয়ো ভোটারের জন্ম হয়েছে। তাহলে কি সেই অভিযোগ সত্যি? যদি তৃণমূলের কোনো ভয় নাই থাকবে, তাহলে ভোটের আগে কমিশন যদি ভোটার তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দেয়, তাহলে তৃণমূল তার বিরোধিতা করবে কেন? আসলে বিহারের মত বাংলাতেও যদি নির্বাচনের আগে কমিশন এই পদক্ষেপ নেয়, তাহলে নিশ্চিত করেই চোখে সর্ষে ফুল দেখার মত অবস্থা হবে রাজ্যের শাসক দলের। তারা আর ভোটে কোনোভাবেই অবৈধ উপায়ে জিতে আসতে পারবে না। তাই কমিশনের পক্ষ থেকে বিহারের মতই বাংলায় নির্বাচনের আগে করা ট্রিটমেন্ট ঘিরে একদিকে রাজনৈতিক তরজা, আর একদিকে আশঙ্কা ক্রমশ গ্রাস করছে ঘাসফুল শিবিরের অন্দরে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।