প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের পক্ষ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিকে সামনে রেখে প্রচার করা হয়েছিল, বাংলা নিজের মেয়েকে চায়। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাংলার নিজের মেয়ে হিসেবে তুলে ধরে তৃণমূল ভোটের ময়দানে বাজিমাত করলেও, বাংলার এই মেয়ের রাজত্বে বাংলা কতটা বিপদের মুখে রয়েছে, তা ধীরে ধীরে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে গোটা দেশের মানুষের কাছে। গতকাল বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন যে, রাজস্থানে ৩০০ জন বাঙালিকে আটকে রাখা হয়েছে বিজেপি সরকার, তাদের হেনস্থা করছে বিজেপি। বাঙালি দেখলেই এইভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করে। কিন্তু যাদেরকে আটকে রাখা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তারা বাংলাদেশী। স্বাভাবিক ভাবেই পশ্চিমবঙ্গে এখন বাংলাদেশীদের আঁতুড়ঘর হয়ে গিয়েছে বলে যখন বিরোধীরা অভিযোগ করে, তখন তাদের সেই অভিযোগের সঙ্গে রাজস্থানে যারা আটকে পড়েছে, তাদের ঘটনার কোনো সত্যতা নেই তো, তা নিয়েও উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। আর নিজের রাজ্য থেকে যাওয়া ব্যক্তিরা বাংলাদেশী হয়ে ধরা পড়ার কারণে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আক্রমণ শানাচ্ছেন, সেটাও একটা প্রশ্নের বিষয় অনেকের কাছেই। আর তার মধ্যেই বাঙালি হয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিভাবে বাংলার সর্বনাশ করছেন, এবার সেই নিয়েই বড় তথ্য ফাঁস করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।

এদিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্তবাবু স্পষ্ট ভাষায় দাবি করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইলেই বাংলা থেকে সব থেকে বেশি বাঙালি সাংসদ পাঠাতে পারতেন। কিন্তু তিনি শত্রুঘ্ন সিনহা, কীর্তি আজাদ, ইউসুফ পাঠানদের মত ব্যক্তিত্বদের পাঠিয়েছেন। অর্থাৎ সুকান্তবাবু এই কথা বলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল তৃণমূল কংগ্রেসের বাংলাপ্রেম নিয়ে যে দৃষ্টিভঙ্গি, তাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলেন। বুঝিয়ে দিলেন, যারা এত বাংলা বাংলা করে, তারা নিজেরা সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাংলা থেকে বাঙালি জনপ্রতিনিধিদের দেশের সংসদে পাঠাতে পারেনি। উল্টে অন্য রাজ্য থেকে নিয়ে আসা ব্যক্তিত্বদের এখান থেকে জনপ্রতিনিধি করে লোকসভায় পাঠিয়েছেন। ফলে তৃণমূল নেত্রীর এই বাংলাপ্রেম এবং বাংলা নিয়ে দরদ সুকান্তবাবুর বক্তব্যের পর রীতিমত বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, সঠিক কথাই বলেছেন সুকান্ত মজুমদার। যদি এতই বাংলার প্রতি দরদ থাকবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, তাহলে তিনি কেন সংসদে এই সমস্ত বাংলার ব্যক্তিদের পাঠালেন না? কেন অন্য রাজ্য থেকে ধার করে নিয়ে আসতে হলো তাকে? আসলে তিনি নিজেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে প্রতিমুহূর্তে বাংলার সর্বনাশ করছেন। বাংলা এখন বিপদের মধ্যে রয়েছে। অনুপ্রবেশকারীতে ছেয়ে গিয়েছে গোটা রাজ্য। তাই অন্য রাজ্যে বাঙালি দেখলেই হেনস্থা করা হচ্ছে, এই সমস্ত কথা বলে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাঙ্গালীদের সিমপ্যাথি পাওয়ার যতই নাটক করুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তিনিই যে আদতে বাংলার সবথেকে বড় ক্ষতি করেছেন, তা কিন্তু দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই বাংলা ও বাঙালি নিজের বেঁচে থাকার স্বার্থে আগামী নির্বাচনে এই বাংলা বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেসকে উৎখাত করবে বলেই দাবি বিরোধীদের।