প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- সত্যিই করোনা একেবারে ভালো সময় চলে এসেছে। ভালো একটা হাতিয়ার পেয়ে গিয়েছেন পুলিশ কর্তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা, হুমকি দেওয়া বীরভূমের বাঘ থেকে বিড়াল হয়ে যাওয়া নেতা অনুব্রত মণ্ডল। ভাবছিলেন যে, কিভাবে পুলিশের জেরা এড়িয়ে যাওয়া যায়! কি করে বিতর্কের মুখ থেকে বাঁচা যায়! কারণ পুলিশ তো তাকে গ্রেফতার করবে না! কারণ তিনি তৃণমূলের বড় নেতা। তাই পুলিশকে হুমকি দিয়েও তিনি এখন বহাল তবিয়তে রয়েছেন। আর তার কাছে বাড়তি সুযোগ হিসেবে রয়েছে এখন করোনার দোহাই! জেরা এড়িয়ে অনুব্রত মণ্ডলের মেডিকেল রিপোর্ট জমা করতেই এবং তারপর তাকে এক সংবাদমাধ্যমের তরফে প্রশ্ন করতেই যে তথ্য উঠে এলো, তারপর তেমনটাই বলছেন বিরোধীরা।

বলা বাহুল্য, বোলপুরের আইসিকে অনুব্রত মণ্ডলের কদর্য ভাষায় আক্রমণ এবং অশ্লীল গালিগালাজের ভাইরাল অডিও ক্লিপ ঘিরে বর্তমানে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। অনুব্রতবাবুর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এমনকি তাকে বারবার থানা থেকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তিনি হাজিরা দেননি। উল্টে তার যে মেডিকেল রিপোর্ট জমা করা হয়েছে, তা নিয়েও বিভিন্ন বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। অনেকেই বলছেন যে, এতদিন সিবিআই ডাকলে তৃণমূল নেতারা হাসপাতালে ভর্তি হতেন, অসুস্থতার নাটক করতেন। কিন্তু এবার অনুব্রত মণ্ডল যে বিতর্কের মুখে পড়েছেন, তাতে পুলিশও তার বিরুদ্ধে সঠিকভাবে পদক্ষেপ হয়ত নিতে পারবে না। কারণ তিনি তৃণমূলের নেতা। উল্টে রাজ্যের মানুষ থেকে শুরু করে বিরোধীরা প্রশ্ন করবে যে, এটা যদি বিরোধীদের কেউ করত, তাহলে কি পুলিশ ছেড়ে দিত? তাই সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে অনুব্রত মণ্ডল একটা মেডিকেল সার্টিফিকেট জমা করে দিয়ে পুলিশও যাতে বিতর্কের মুখে না পড়ে এবং তাকেও যাতে জেরার মুখোমুখি হতে না হয়, তার জন্য একটা মিথ্যে নাটক করা শুরু করেছেন বলে দাবি করছে বিরোধীরা। কিন্তু কি হয়েছে অনুব্রতবাবুর? সত্যিই কি তিনি অসুস্থ? এতটাই অসুস্থ যে, জেরার মুখোমুখি হতে পারছেন না?

জানা গিয়েছে, এদিন সংবাদমাধ্যমের তরফ থেকে অনুব্রতবাবুকে ফোন করা হয়েছিল। আর ফোন করতেই তার কি হয়েছে, সেই প্রশ্ন শোনা মাত্রই তিনি বলেন, “আমার গলায় খুব ব্যথা। জ্বরও রয়েছে। খুব কাশি, নাক দিয়ে জল পড়ছে। গলার ব্যাথাটাই ভোগাচ্ছে।” আর তারপরেই প্রশ্ন করা হয় যে, বর্তমানে তো করোনা বাড়ছে, তাহলে কি তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন? কেষ্ট মন্ডল বলেন, “ভাবছি, করোনা টেস্ট করিয়ে নেব। রাখছি, বেশি কথা বললে গলায় লাগছে।”

আর এখানেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক সময়ে নির্ঘাত করোনাটা এসেছিল। তা না হলে অনুব্রতবাবুকে জেরার মুখোমুখি হতেই হত। সত্যিই করোনা তাকে বাঁচিয়ে দিল। বিরোধীদের দাবি, অনুব্রত মণ্ডলের কাছে এখন পুলিশি জেরার মুখোমুখি হওয়া অনেকটা শাখের করাতের মত। পুলিশের মুখোমুখি যদি তিনি না হন, তাহলে প্রশ্ন উঠবে। আবার পুলিশের মুখোমুখি যদি তিনি হন, তাহলেও তার ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। প্রশ্নের মুখে পড়বেন তিনি। তাই সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এক সংবাদমাধ্যম তাকে প্রশ্ন করতেই তিনি প্রচুর বার কাশি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করলেন যে, না, সত্যিই তিনি অসুস্থ। সত্যিই যদি অনুব্রত মণ্ডলের শরীর খারাপ হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তার দ্রুত সুস্থতা সকলেই প্রার্থনা করবে। কিন্তু এর পেছনে বর্তমান সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হঠাৎ করেই তার এই অসুস্থতা অন্য কোনো কারণ নেই তো? হাজিরা এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তাকে নিয়ে, তাতে লোক সমাজে মুখ দেখাতে কিছুটা অপ্রস্তুত হতে হবে, সেই জন্যেই অসুস্থতার নামে নাটক নয় তো? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।