প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
রাজ্য বিধানসভায় অধিবেশনে আলোচনা হওয়া অপেক্ষা মানুষের কথা বলা অপেক্ষা বেশিরভাগ সময়ই হট্টগোল লক্ষ্য করা যায়। শাসক বিরোধী তরজা মারাত্মক আকার ধারণ করে। অনেক ক্ষেত্রেই রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অনুশোচনা প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে, অনেক বিধায়ক বিধানসভায় আসলেও অধিবেশন কক্ষে তারা প্রবেশ করেন না। আর এবার ফের সেই ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ। আর তা শুনেই বিধায়কদের বিধানসভায় কিভাবে আনা যায়, তার জন্য নয়া প্রস্তাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

জানা গিয়েছে, এদিন রাজ্য বিধানসভায় বিধায়কদের অনুপস্থিতি নিয়ে রীতিমত বিরক্ত প্রকাশ করেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “অনেক সদস্য বিধানসভায় এলেও অধিবেশন কক্ষে না ঢুকে বাইরে সময় কাটান। কেউ কেউ আবার মুখ্য সচেতকের ঘরে গিয়ে বসে থাকেন। তারা অধিবেশনে যোগ না দিলে শেষমেষ তাদের ধরে ধরে আনতে হয়। এভাবে চলতে পারে না। বিধানসভা শুধু আইন প্রণয়নের জায়গা নয়। গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ। সেখানে নিয়মিত উপস্থিতি প্রত্যেক জন প্রতিনিধির কর্তব্য।”

আর অধ্যক্ষ যখন বিধায়কদের অনুপস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন, ঠিক তখনই কি করে বিধায়কদের রাজ্য বিধানসভায় অধিবেশনে অংশগ্রহণ করানো যায়, তার জন্য বড় প্রস্তাব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “যারা নিয়মিত অধিবেশনে যোগ দেন, তাদের পুরস্কৃত করা হোক। যার উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি, তাকে সম্মান দেওয়া হোক। এতে একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। উপস্থিতি বাড়বে।” বলা বাহুল্য, এর আগেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় বিধায়কদের বারবার করে অধিবেশনে অংশ নেওয়ার কথা বলেছিলেন। এমনকি কোনো কারণ ছাড়াই অধিবেশননে গর হাজিরা দেওয়া যাবে না বলেও কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তারপরেও লাভের লাভ কিছু হয়নি। বিভিন্ন সময় অধিবেশন কক্ষে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হলেও, বিধায়করা এলেও তারা সেই অধিবেশনে অংশ নেন না বলে রীতিমত হতাশ হয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন অধ্যক্ষ। যার ফলে এবার কি করে সেই বিধায়কদের অধিবেশনে নিয়ে আসা যায়, তার জন্য পুরস্কার দেওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পর্যবেক্ষকদের মতে, অধ্যক্ষের বিরক্তির পরেই মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনের প্রস্তাব অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিধানসভা সাধারণ মানুষের হয়ে কথা বলার জন্য। সেখানে বিধায়করা সেই বিধানসভায় এলেও, যদি অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ না করেন এবং সেখানে আলোচনায় অংশ না নেন, তাহলে তো মানুষের কথা বিধানসভায় উঠবে না। তাই ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিধায়কদের আরও বেশি করে বিধানসভার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে এবং তারা যাতে অধিবেশনে মনোযোগী হন, তার চেষ্টা করতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই পুরস্কার প্রস্তাব। তবে সেই পুরস্কার প্রস্তাবে কতটা আগ্রহী হয়ে ওঠেন বিধায়করা, আগের থেকে বিধানসভার অধিবেশনে বিধায়কদের উপস্থিতির সংখ্যা বাড়ে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।