প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের পুলিশ তৃণমূলের দলদাসে পরিপূর্ণ হয়েছে। বিরোধীরা কোনো ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। কিন্তু তৃণমূল নেতারা সেই পুলিশকে গালিগালাজ করলেও, তাদের গ্রেফতার করে জেলে ভরার মত ক্ষমতা বা মেরুদন্ড এই দলদাস পুলিশের নেই বলেই অভিযোগ করে বিরোধিতা। বিগত 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের পর এই রাজ্যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস হলেও, পুলিশ যেভাবে চুপচাপ নীরবতা পালন করে সেই সন্ত্রাস দেখেছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছু করেনি, তা নিয়ে বারবার করে বিরোধীরা আওয়াজ তুলেছে। সম্প্রতি সেই ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পরবর্তী সময়কালে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার খুন হয়েছেন, যে খুনের সুবিচার চাইছে বিরোধীরা, সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সিবিআই। যেখানে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে একটি চার্জশিটে তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পালের নাম পর্যন্ত রয়েছে। তবে এর থেকেও যে খবর আরও বেশি চাঞ্চল্যকর হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার ফলে রীতিমত সবথেকে বড় চাপের মুখে পড়তে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ বলেই দাবি করছেন একাংশ। কি ঘটনা ঘটেছে?

জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ভোট পরবর্তী হিংসায় খুন হয়েছিলেন কাকুরগাছির বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার। যেখানে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই সম্প্রতি আদালতে চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। যেখানে নারকেলডাঙ্গা থানার সেই সময়কার ওসি সহ আরও তিনজন পুলিশ কর্মীর নাম রয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সেই চার্জশিটে। আর এই ঘটনাই সবথেকে বড় চাপের কারণ হয়ে দাঁড়াবে রাজ্যের পুলিশ মহল এবং নবান্নের কাছে বলেই মনে করছেন বিরোধীরা। কেননা এই নারকেলডাঙ্গার নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের দাদা বিশ্বজিৎ সরকার আগেই অভিযোগ করেছিলেন যে, তার ভাইকে পিটিয়ে মেরে ফেলার পর সেখানে রক্ত ধুয়ে দিয়েছিলেন নারকেলডাঙ্গা থানার সেই সময়কার ওসি। প্রমান লোপাট করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আর এবার তৎকালীন সেই ওসি সহ তিন পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের এই চার্জশিট পুলিশের দলদাসকরণ এবং নৈরাজ্যকে প্রশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় শাস্তি বলেই মত বিরোধীদের।

এদিকে এই খবর সামনে আসার পরেই তৃণমূল সরকার এবং পুলিশের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে বিজেপি। তাদের দাবি, রাজ্যের প্রত্যেকটি প্রান্তে তৃণমূলের দুষ্কৃতী এভাবেই বিজেপির ওপর অত্যাচার করে। আর তৃণমূলের দোষ ঢাকার জন্য সমস্ত রকম প্রমাণ করার চেষ্টা করে পুলিশ। তবে এবার রাজ্যের এই দলদাস পুলিশের শিক্ষা পাওয়া প্রয়োজন। সেই কারণে সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত সাধুবাদযোগ্য। এখনো যদি এই রাজ্যের বাকি পুলিশকর্মীরা তৃণমূলের দলদাস হিসেবেই কাজ করে যান, তাহলে ভবিষ্যতে তাদেরকেও কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। তাই সময় থাকতেই নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করা উচিত পুলিশের। তা না হলে ভবিষ্যতে ফ্যাসিস্ট আচরণের জন্য, তৃণমূলের দলদাস হয়ে কাজ করার জন্য আরও অনেক পুলিশ কর্মীকে চাপে পড়তে হতে পারে বলেই দাবি করছে বিরোধীরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিঃসন্দেহে নবান্নের কাছে এটা অত্যন্ত ধাক্কার কারণ। এই রাজ্যের পুলিশ নিরপেক্ষ নয়, তারা শাসকের হয়ে কাজ করে, এই অভিযোগ বারবার বিরোধীদের পক্ষ থেকে তোলা হয়েছে। সেদিক থেকে কাকুরগাছির যে বিজেপি কর্মীকে ভোট পরবর্তী হিংসার পর খুন করার অভিযোগ উঠেছিল, সেক্ষেত্রে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ তুলে তৎকালীন নারকেলডাঙ্গা থানার ওসি সহ তিনজনের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপে রীতিমত আশঙ্কা তৈরি হয়েছে প্রশাসনিক মহলে। যার ফলে ভবিষ্যতে সেই পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে আরও যদি কোনো বড় পদক্ষেপ হয় এবং তার ফলে যদি আরও বড় কোনো তথ্য সামনে আসে, তাহলে থরথর করে কাঁপতে শুরু করবে নবান্ন বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।