প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এর আগে দল তাকে সাসপেন্ড করেছিল। কিন্তু এবার রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিল তার বিরুদ্ধে নিয়েছে কড়া পদক্ষেপ। যেখানে তার চিকিৎসার যে ডিগ্রি, সেই ডিগ্রি নিয়েই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। যার ফলে মেডিকেল কাউন্সিলের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে গতকালই খবর আসে যে, চিকিৎসক হিসেবে তার যে রেজিস্ট্রেশন, তা দুই বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। যার ফলে আপাতত ডাক্তার হিসেবে প্র্যাকটিস করতে পারবেন না তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেন। কিন্তু এবার সেই রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিচার পেতেই কলকাতা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হলেন তৃণমূলের এই প্রাক্তন সাংসদ। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে যে, রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিল তো স্বাস্থ্য দপ্তরের অন্তর্গত। তাহলে যে রাজ্যের সর্বেসর্বার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হয়ে যাওয়ার পরেও যিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন বলে দাবি করেন সেই শান্তনু সেন, সেদিক থেকে এই রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের বিরুদ্ধে সুবিচার পেতে কলকাতা হাইকোর্টে যাওয়া মানে তো তিনি সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিলেন! ঘটনা পরম্পরা দেখে তেমনটাই বলছে বিরোধীরা।
বলা বাহুল্য, গতকালই রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের পক্ষ থেকে একটি সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। যেখানে রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলে রেজিস্ট্রেশন না করিয়ে একটি বিদেশী ডিগ্রি ব্যবহার করছেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই তাকে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু তার বক্তব্যে সন্তুষ্ট না হয়ে বিদেশি ডিগ্রি ব্যবহার করার অভিযোগে ২ বছরের জন্য তার রেজিস্ট্রেশন সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানিয়ে দেন রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের সভাপতি সুদীপ্ত রায়। যদিও বা তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা একেবারেই ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন শান্তনু সেন। আর এবার গোটা ঘটনায় রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের বিরুদ্ধেই কলকাতা হাইকোর্টে পৌঁছে গেলেন তিনি।
সূত্রের খবর, এদিন কলকাতা হাইকোর্টের রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন শান্তনু সেন। জানা গিয়েছে, আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদের এই সিদ্ধান্তের পরেই প্রশ্ন উঠছে যে, রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিল তো রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের অন্তর্গত। তাহলে একদিকে তিনি যাকে নেত্রী বলে দাবি করেন, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো গোটা সরকারটাই পরিচালনা করেন। অন্তত তেমনটাই দাবি বিরোধীদের। সেক্ষেত্রে রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শান্তনুবাবুর হাইকোর্টে যাওয়া তো সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দেওয়া! ফলে তৃণমূলেরই প্রাক্তন সাংসদের এই পদক্ষেপ রীতিমত ঘাসফুল শিবির এবং তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেই বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিলো বলেই মনে করছেন একাংশ। তবে শেষ পর্যন্ত শান্তনু সেন রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়ে নিজের পক্ষে কতটা যুক্তি দেন এবং দিনের শেষে কি নির্দেশ দেয় আদালত, সেদিকেই নজর থাকবে গোটা রাজ্যবাসীর।