প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন যে পশ্চিমবঙ্গে অন্যভাবে করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে, সেই ব্যাপারে ইতিমধ্যেই একাধিক দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য যে, বাংলায় ভুয়ো ভোটারকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছে। তাই ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে কড়া নজর রাখতে হবে কমিশনকে। আর নির্বাচন কমিশন বিহারে একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করতেই রীতিমত ঘুম উড়তে শুরু করে তৃণমূল নেতৃত্বের। তারা তাদের প্রতিনিধি দল নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে বেশকিছু দাবি-দাওয়া জানায়। যার ফলে বিরোধীরা পাল্টা কটাক্ষ করে বলতে শুরু করেছিল, ভুয়ো ভোটার যাতে ভোটার লিস্টে থাকে, তার জন্যই তৃণমূল এখন নির্বাচন কমিশনের কাছে নানা কথা বলে বায়না ধরতে শুরু করেছে। কারণ এই ভুয়ো ভোটারদের ধরতে পারলেই তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গে আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তবে বিরোধীদের এই দাবির মাঝেই এবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে যে কথাই বলা হোক না কেন, কমিশন যে পদক্ষেপ বাংলার জন্য গ্রহণ করতে চলেছে, তাতে তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুয়ারে বড়সড় রাজনৈতিক বিপদ হানা দিতে পারে বলেই মনে করছেন একাংশ। কিন্তু কি পদক্ষেপ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন?
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি দেশের একাধিক জায়গায় ভুয়ো ভোটারের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। বাংলাতেও এই অভিযোগ উঠতে দেখা যায়। যার পরবর্তী সময়কালে বিহারে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ভোটার লিস্টের তালিকা যাচাই করার মত পদক্ষেপ নেওয়া হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে আশঙ্কা প্রকাশ করে বাংলাতেও এই সমস্ত করে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে বিজেপি বলে অভিযোগ করে তৃণমূল। এমনকি তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়েও বিভিন্ন আবেদন জানায়। কিন্তু এই সমস্ত কিছুর তোয়াক্কা না করে যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে আগামী আগস্ট মাস থেকেই বাংলায় ভোটার তালিকার বিশেষ সমীক্ষার কাজ শুরু করবে নির্বাচন কমিশন। আর কমিশনের এই সিদ্ধান্তই রীতিমত তৃণমূলের কাছে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে যা খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে রাজ্যে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের নেতৃত্বেই গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এক্ষেত্রে জেলা স্তরের প্রশাসনিক আধিকারিকদের সহযোগিতায় প্রত্যেকটি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে চলবে ভোটার তালিকা সমীক্ষার কাজ। মূলত, কোথাও যাতে কোনো ভুয়ো ভোটার না থাকে, তার জন্যই কমিশনের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে তৃণমূল প্রথম থেকেই অবশ্য বিহারে এই কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এসেছে। তাই বাংলাতে যখন কমিশন এই সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করতে শুরু করবে, তখন যে তৃণমূলের ছটফটানি আরও বাড়বে সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিরোধীরা।
গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, সবে তো খেলা শুরু হয়েছে। তৃণমূল খুব ভালো করেই জানে, ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটারে ভর্তি। কারণ তারা তৃণমূলকে ভোট না দিলে তৃণমূল কোনোমতেই ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তাই তাদেরকে টিকিয়ে রাখার জন্যই যাতে বিশেষ সমীক্ষা না হয়, তার জন্যই তৃণমূলের এই অপচেষ্টা। তবে এই সমস্ত কিছু কোনদিন সফল হবে না পশ্চিমবঙ্গকে নিরাপদ রাখতে, ভুয়ো ভোটার সম্পূর্ণরূপে ভোটার তালিকা বাদ দিতে কমিশন যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, তাতে নির্বাচনের আগেই তৃণমূল নামক দল অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়ে যাবে বলেই মত গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের।