প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
তৃণমূল সরকারের আমলে এই রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার যে সাড়ে সর্বনাশ হয়েছে, শিক্ষা ব্যবস্থাকে যে একেবারে শেষ করে দিয়েছে বর্তমান প্রশাসন, সেই ব্যাপারে মাঝেমধ্যেই সোচ্চার হতে দেখা যায় বিরোধীদের। সম্প্রতি কসবার ল কলেজে যে ঘটনা ঘটেছে, তারপর রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার আরও নির্লজ্জ রূপ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। আর এবার স্কুলের মধ্যেও কি শুরু হয়ে গেল তৃণমূল নেতার দাদাগিরি? যেখানে রানাঘাটে একটি স্কুলে ঢুকে রীতিমত প্রধান শিক্ষিকাকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠলো তৃণমূলেরই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূল কি করে তাকে মেকআপ দেবে, সেটা নিয়েই সব থেকে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে শাসকদলের আনাচে কানাচে। যেভাবে তৃণমূলের ঔদ্ধত্য রূপ সামনে আসছে, যেভাবে বিভিন্ন জায়গায় কোনোরকম কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে তৃণমূল শিক্ষাঙ্গনের ভেতরে ঢুকেও হুমকি দিতেও ছাড়ছে না, তাতে বোঝাই যাচ্ছে যে, এই রাজ্যের শাসকের শেষের সময় চলে এসেছে। অন্তত তেমনটাই দাবি করছে বিরোধীরা।
জানা গিয়েছে, গতকাল রানাঘাটের লালগোপাল উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে যান তৃণমূলের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জয়দীপ দত্ত। আর সেখানে গিয়েই তিনি প্রধান শিক্ষিকাকে রীতিমত হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। আর এখানেই প্রশ্ন যে, ঠিক কি কারনে তৃণমূলের এই কাউন্সিলর সেই স্কুলে গিয়েছিলেন? কেনই বা তিনি প্রধান শিক্ষিকাকে হেনস্থা করলেন? মূলত, স্কুলের পাশে রাস্তায় পথ কুকুরদের খাওয়ান এই প্রধান শিক্ষিকা। আর তাতেই নোংরা আবর্জনা থাকার কারণেই তার প্রতিবাদ করতে স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষিকাকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। যদিও বা প্রধান শিক্ষিকার তরফে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের কাউন্সিলর জয়দীপ দত্ত।
বিরোধীদের প্রশ্ন, যদি এরকম কোনো বিষয় থাকে, তাহলে একজন শিক্ষিকার সঙ্গে কেন এভাবে উচ্চস্বরে কথা বলবেন সেই তৃণমূল নেতা? আর তৃণমূল নেতার সঙ্গে তো শিক্ষিকার কোনো শত্রুতা নেই যে, তিনি তার বিরুদ্ধে মিথ্যা দোষারোপ করবেন! নিশ্চয়ই শিক্ষাঙ্গনে ঢুকে শাসানি দিয়েছেন এই তৃণমূলের কাউন্সিলর! আর সেই কারণেই তার মুখোশ আজকে খুলে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা। অবিলম্বে তৃণমূলের এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে প্রশাসনকে বলেই দাবি করছে বিজেপির ঘনিষ্ঠ মহল।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এমনিতেই রাজ্যের শিক্ষাঙ্গন যে তৃণমূল সরকারের আমলে ব্যাপকভাবে দুর্নীতিগ্রস্তদের আখড়া হয়ে গিয়েছে, সেই ব্যাপারে দাবি করে বিরোধীরা। আর তার মধ্যেই এবার একেবারে স্কুলে ঢুকে তৃণমূল নেতার যেভাবে শাসানের মুখে পড়লেন প্রধান শিক্ষিকা, তার ফলে তৃণমূলের ভাবমূর্তি অনেকটাই ক্ষুন্ন হতে পারে। তাই সময় থাকতেই সেই তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত দলের। আর তা না হলে ভবিষ্যতে এই ঘটনায় শাসক যে আরও বিপর্যস্ত হবে, স্থানীয় মানুষদের মধ্যে তৃণমূল সম্পর্কে যে আরও খারাপ ধারণা জন্ম নেবে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিরোধীরা।