প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বর্তমানে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বই সরকারি স্কুলের গ্রন্থাগারে রাখার একটি নির্দেশিকা ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে বিরোধীরা। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে গতকাল নয়া বিজেপি সভাপতি হিসেবে নাম ঘোষণা হতেই প্রথমবার বক্তব্য রাখতে গিয়ে যে কথা শমীক ভট্টাচার্য বলে দিলেন, তাতে তৃণমূলের ভেতরেই তৈরি হয়েছে অস্বস্তি। তৃণমূলেরই এক সাংসদের হয়ে তিনি যেভাবে গলা ফাটালেন, যেভাবে তার বাবাকে নিয়ে এক বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনলেন, তাতে প্রশ্ন উঠছে যে, তৃণমূল এবার কি বলবে? সত্যিই কি তারা বলার মত জায়গায় রয়েছে? আর যে সাংসদের বাবাকে নিয়ে শমীকবাবু এত বড় তথ্য দিলেন, সেই সাংসদ কি এবার ঠিকমত থাকতে পারবেন তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে? নাকি তার সঙ্গে আবার দূরত্ব তৈরি করবে রাজ্যের শাসক দল?
গতকাল কলকাতার সায়েন্স সিটিতে বিজেপির নয়া সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়। আর সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করার পাশাপাশি তৃণমূলের এক সাংসদের বাবাকে নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য দেন শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “মালদার বিবদমান জমিদারদের একত্র করে কলকাতায় ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের কাছে নিয়ে এসেছিলেন শিবেন্দুশেখর রায়। তারপরেই তৈরি হয় বাংলার অন্তর্ভুক্তির রুপরেখা। রাজ্য গঠনের ইতিহাসে এমন একজন ব্যক্তিত্বের নাম জানেই না। শিবেন্দুশেখরের ইতিহাস অন্য কেউ দখল করে বসে আছে। ওনার অবদানকে মুছে দেওয়া হচ্ছে।”
আর এখানেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শমীক ভট্টাচার্য কিন্তু প্রথম বক্তব্যেই একেবারে মাস্টারস্ট্রোক দিয়ে দিলেন। এর ফলে সুখেন্দুশেখর রায় যেমন চাপে পড়ে গেল, ঠিক তেমনই তৃণমূল কংগ্রেসও চাপে পড়ে গেল। কারণ তৃণমূলের সাংদ এই সুখেন্দুশেখর রায়। আর তার বাবাকে নিয়ে শমীকবাবু যেভাবে সোচ্চার হলেন, তাতে কিন্তু ইতিহাসকে তৃণমূল এবং সুখেন্দু শেখর রায়, দুজনেই অস্বীকার করতে পারবে না। তাই এখন নয়া বিজেপি সভাপতির এই মন্তব্য তৃণমূল এবং তাদের সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের কাছে গলার কাঁটার মত হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
পর্যবেক্ষকদের মতে, অত্যন্ত সুবক্তা বলে পরিচিত শমীক ভট্টাচার্য পশ্চিমবঙ্গের অনেক ইতিহাস জানেন। বিভিন্ন মহলে তার ইতিহাসকে জানা এবং বলা নিয়ে প্রশংসার বন্যা বইতে দেখা গিয়েছে। তাই তার মত অভিজ্ঞ এবং সুবক্তা রাজ্য বিজেপি সভাপতি হওয়ার পর গেরুয়া শিবিরের নেতাকর্মীরা সকলেই উজ্জীবিত। তবে তৃণমূল সাংসদের বাবার যে অবদান, তা ইতিহাসে কেন তোলা হয়নি, সেই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তৃণমূলকেই একটা বড় প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলেন শমীক ভট্টাচার্য। শুধু তাই নয়, সুখেন্দু শেখর রায় হয়ত দলের কারণে এখন চুপ থাকতে বাধ্য হবেন। কিন্তু তার আবেগকেও উস্কে দিয়ে তার বাবার পক্ষে যে কথা বিজেপির নয়া সভাপতি বললেন, তাতে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুবাবুও মনে মনে হয় অত্যন্ত খুশি। কিন্তু বিজেপি সভাপতি বলেছেন, তাই দল রাগ করতে পারে, সেই কারণে হয়ত তিনি নীরবতা পালন করতে বাধ্য হবেন বলেই খোঁচা দিচ্ছে বিরোধীরা।