প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যের বিরোধীরা অভিযোগ করেন যে, রাজ্যে যত দুর্নীতি হচ্ছে, যত খুন হচ্ছে, যত অপরাধমূলক কাজ হচ্ছে, তার সুবিচার দিতে পারে না পুলিশ। এক্ষেত্রে বিরোধী থেকে শুরু করে যারা এই রাজ্যের প্রতিবাদী মানুষ, তারা একমাত্র সুবিচার পান আদালতের কাছে। কারণ আদালত আছে বলেই আজকে পশ্চিমবঙ্গে সুবিচার পাওয়া যায়। তবে এবার সেই আদালতেই এক ব্যক্তির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের এক নেত্রীর বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলো, তাতে লজ্জায় পড়ে যাচ্ছে গোটা তৃণমূল কংগ্রেস। প্রধান থাকার সময় তৃণমূলের মালদহের রতুয়া দুই নম্বর ব্লকের একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নেত্রী যে কুকীর্তি করেছেন, তা ধরা পড়তেই কলকাতা হাইকোর্ট গ্রহণ করলো কড়া পদক্ষেপ। কি ঘটনা ঘটেছে?
জানা গিয়েছে, মালদহে রতুয়া ২ নম্বর ব্লকের শ্রীপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন সেরিনা বিবি। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে আর্থিক তছরুপ করার অভিযোগ তোলেন স্থানীয় বাসিন্দা মোহম্মদ নিজামউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। আর তার সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে তৃণমূলের সেই প্রাক্তন প্রধানকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, তৃণমূলের এই প্রাক্তন প্রধানের বিরুদ্ধে যে সমস্ত আর্থিক তছরূপের অভিযোগ উঠেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি সরকারকে ৬১ লক্ষ টাকার বেশি ফেরত দেবেন। আর এই নির্দেশ সামনে আসতেই তৃণমূলের এই নেত্রী যেমন বিপাকে পড়ে গেলেন, ঠিক তেমনই দল কি করে এটাকে মেকআপ করবে, কি করে নিজেদের নেত্রীর কুকীর্তি সামনে চলে আসায় তার পাল্টা যুক্তি দেবে, তা খুঁজে পাচ্ছে না স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
এদিকে তৃণমূলের এই প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে যে ব্যক্তি অভিযোগ করেছিলেন, সেই মহম্মদ নিজামউদ্দিন একাধিক বিস্ফোরক দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের তদন্তকারী সংস্থা ক্যাগের পক্ষ থেকে যখন পঞ্চায়েতে যাওয়া হয়েছিল, তখন এই সেরিনা বিবি নিজের অনুগামীদের নিয়ে তাদের পঞ্চায়েতে ঢুকতে বাধা দেন। প্রায় ১৪ থেকে ১৫ কোটি টাকার মত দুর্নীতি হয়েছে। হাইকোর্ট জেলা শাসক এবং পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে, পুরো তদন্ত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য।” এদিকে যে তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে তৃণমূলের কি বক্তব্য? এদিন তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র আশিস কুন্ডু বলেন, “দুর্নীতিকে আমরা সমর্থন করি না। হাইকোর্ট যা বলেছে, তদন্ত সেই ভাবেই হবে। যদি দোষ প্রমাণ হয়, তবে দলীয় পরিচয় দেখব না। আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিরোধীদের দাবি, এটাই তো তৃণমূল! তৃণমূল মানেই দুর্নীতি। তৃণমূল এবং দুর্নীতি শব্দটা আজ পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে সমার্থক শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন তৃণমূল কংগ্রেস হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর সেই নেত্রীর পাশ থেকে হয়ত সরে যেতে পারে। কিন্তু আজকের দিনেও দাঁড়িয়ে যারা তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত, তারা প্রত্যেকেই আর্থিক দুর্নীতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপকীর্তির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন। কারণ অপরাধ না করলে, মানুষকে বঞ্চিত না করলে তৃণমূলের সঙ্গে থাকা যায় না। আর এটাই এই প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির প্রধান বৈশিষ্ট্য বলেই খোঁচা দিচ্ছে গেরুয়া শিবির।