প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বীরভূমে বাঘ বলে পরিচিত অনুব্রত মণ্ডল এখন ইঁদুরে পরিণত হয়েছেন। তার যে বিশ্রী অডিও ক্লিপ, তা ভাইরাল হতেই রীতিমত অস্বস্তি তৈরি হয়েছে তৃণমূলের মধ্যে। ঘটা করে শাসকদল অনুব্রত মণ্ডলকে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে সেই নির্দেশ পালন করে নিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তবে এত বড় অপরাধ করার পর একজন পুলিশকর্তার মা-বউ তুলে অশ্লীল গালিগালাজ করার পর তাকে হুমকি দেওয়ার পর কি করে তিনি বাইরে থাকেন, এই প্রশ্ন সকলের মধ্যেই রয়েছে। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এত কিছুর পরেও কি অনুব্রত মণ্ডলকে শুধুমাত্র নামেই শাস্তি দেওয়ার কথা বলে তার পক্ষেই দাঁড়ালেন তৃণমূলের আর এক স্বনামধন্য মন্ত্রী ববি হাকিম?

বর্তমানে গোটা রাজ্য একদিকেই তাকিয়ে রয়েছে যে, অনুব্রত মণ্ডলের কি শাস্তি হয়! দল হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস কি নাটকীয় শাস্তি দেবে, কি করবে, না করবে, সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু রাজ্যের মানুষ দেখতে চায়, অনুব্রত মণ্ডলকে অবিলম্বে জেলের ভেতরে ঢোকানো হোক। অনেক বাদড়ামো তার সহ্য হয়েছে। আর এবার তিনি সহ্যের সব সীমা লংঘন করে ফেলেছেন। একজন পুলিশকর্তাকে যে ভাষায় তিনি হুমকি দিয়েছেন, যে অশ্লীল গালিগালাজ করেছেন মা-বোনেদের তুলে ধরে, তা আর কেউ সহ্য করতে পারছেন না। এটা একটা রাজনৈতিক লোকের অন্তত ভাষা হতে পারে না। কিন্তু এর ষপরেও তৃণমূলের পক্ষ থেকে একজন মন্ত্রী তিনি একি বলে ফেললেন? অনুব্রত মণ্ডলের বক্তব্যের সমালোচনা করার পাশাপাশি তিনি বিজেপির কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে এমন একটা ভাব দেখানোর চেষ্টা করছেন যে, অনুব্রত মণ্ডল যেটা করেছেন, সেটা যেন কোনো ঘটনাই নয়।

কি বলেছেন ববি হাকিম? এদিন অনুব্রত মণ্ডলের ভাইরাল অডিও ক্লিপ নিয়ে তাকে প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। তৃণমূল কংগ্রেস দল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনো উশৃঙ্খলতা সহ্য করেন না। যে অন্যায় করেছে, তাকে সাবধান করে দেওয়া হবে। আইনের উর্ধ্বে কেউ নন।” এরপরই বিজেপির প্রসঙ্গ টেনে অনুব্রত মণ্ডল যেন খুব একটা বড় অপরাধ করে ফেলেননি, এইরকম একটা ভাব দেখানোর চেষ্টা করলেন ববি হাকিম। তিনি বলেন, “সারাদিন ধরে যখন বিজেপির নেতারা একজন মহিলা সেনা অফিসারকে জঙ্গির বোন বলেন, তখন সংবাদমাধ্যম চুপ থাকে। আর যখন একটা পুঁচকে, পাচকা জেলার কেউ বললো, সেটা নিয়ে হাইলাইট হয়।”

বিরোধীরা বলছেন, এই না হলে ববি হাকিমের মত ব্যক্তির কথা! এত বড় ঘটনা ঘটে গেল, তারপর তিনি অনুব্রত মণ্ডলের হয়ে ব্যাটিং করছেন! লজ্জা করছে না ববি হাকিমের? ঘুরিয়ে তো এটা অনুব্রত মণ্ডলের পক্ষেই তিনি কথা বললেন! যে কাজ অনুব্রত বাবু করেছেন, যেভাবে তিনি হুমকি দিয়েছেন, তাতে তো তার নামটাই আর উচ্চারণ করা উচিত নয় তৃণমূলের। একসময় তো এই ববি হাকিমই অনুব্রত মণ্ডলকে বাঘ বলে সম্বোধন করেছিলেন।

এখন হঠাৎ করে পুঁচকে পাচকা বলে বিষয়টিকে এড়িয়ে দিলে কি করে হবে হাকিম সাহেব? যেই দেখলেন যে, অনুব্রত মণ্ডল ভয়ংকর অপরাধ করে ফেলেছে, অমনি বিজেপিকে টেনে আনতে হবে! বিজেপির নেতারা যে সমস্ত কাজ করেছেন, তার সঙ্গে তুলনা করে অনুব্রত মণ্ডলের যে কাজকর্ম, তাকে লঘু করে দেখাতে হবে! আসলে তৃণমূলের সবার মানসিকতা যে এক, এখানে অনুব্রত মণ্ডল প্রকাশ করে ফেলেছেন, আর অন্য কোনো নেতা প্রকাশ করেন না। তারা একটু সমঝে চলেন। তাছাড়া ববি হাকিমের মত মন্ত্রী অনুব্রত মণ্ডল এত বড় কান্ড ঘটানোর পরেও যে সাফাই দিলেন, তাতে সত্যিই এদের সম্পর্কে মানুষের মনে আরও বেশি করে বিরক্তি জন্মানোর জন্য যথেষ্ট বলেই মনে করছে বিরোধী শিবির।