প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
দীঘায় ঘটা করে জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বারবার করে দাবি করেছেন, এটা কোনো মন্দির নয়, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। তবে সেই জগন্নাথ মন্দিরেই এবার প্রথমবার গড়ালো রথের চাকা। কিন্তু চারধামের বাইরে গিয়ে নব নির্মিত এই মন্দিরকে যেভাবে ধাম বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে, তা হিন্দু ধর্মের অপমান বলেও নানা মহল থেকে অভিযোগ উঠেছিল। আর এই পরিস্থিতিতে ভগবান জগন্নাথ দেবও কি ঠিকমত এই রথযাত্রায় সায় দিলেন না? কিন্তু কেন এমন কথা বলা হচ্ছে? কি ঘটেছে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রথম রথযাত্রায়?
বলা বাহুল্য, ঘটা করে দীঘার প্রথমবারের রথযাত্রা পালন করতে আগেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রথের চাকা গড়ানোর আগেই যে দৃশ্য সামনে এলো, যে পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা করলেন, তার ফলে একটাই প্রশ্ন উঠছে যে, সত্যিই কি তাহলে মন্দিরের মত করে মন্দির তৈরি হয়নি? আর সেই কারণেই কি জগন্নাথ দেব এই রথযাত্রায় সায় দিলেন না? তিনিও কি এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন যে, চার ধামের বাইরে গিয়ে যদি কেউ অন্য কোনো মন্দির তৈরি করে সেটাকে ধাম বলে স্বীকৃতি দিতে চায়, তাহলে তা সনাতন সংস্কৃতির বিরুদ্ধ আচরণ?
এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে, রথের চাকা আটকে গিয়েছে। পরবর্তীতে হাতুড়ি নিয়ে কারিগররা সেটাকে ঠিক করার চেষ্টা করছেন। মূলত, কাঠের খাচা খুলে যাওয়ার কারণেই সেই রথের টাকা আটকে গিয়েছে বলে খবর। এমনকি দেখা যাচ্ছে যে, অনেকে মিলে রথ ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে। আর এই ভিডিও পোস্ট করেই হিন্দু ধর্মকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপমান করার কারণেই ভগবানের রোষ তৈরি হয়েছে এবং সেই কারণেই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা লেখেন, “মহাকুম্ভকে মৃত্যু কুম্ভ, সনাতন ধর্মকে গন্ধা ধর্ম বলা, জয় শ্রীরামকে গালাগাল বলে উল্লেখ করা, সর্বশেষে তীর্থক্ষেত্রের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়ে ধর্মবিরুদ্ধ আচরণ করা, যেমন মিষ্টিকে প্রসাদ বলে চালানো, ধর্মীয় বিধি না মেনে তৈরি করানো, ইত্যাদি করলে ভগবানের রোষ হওয়াটাই স্বাভাবিক।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চার ধামের অন্যতম ধাম হচ্ছে পুরীর জগন্নাথ ধাম। কিন্তু সেই ধামের সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে দীঘার জগন্নাথ মন্দির তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রী যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, তাকে প্রথম থেকেই খুব একটা ভালো চোখে মেনে নিতে পারেননি হিন্দু সনাতনীরা। বারবার করে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে এবার রথ যাত্রার মত পুন্য তিথিতে রথের চাকা প্রথমেই যেভাবে আটকে গেল এবং তারপর যে পোস্ট শুভেন্দু অধিকারী করলেন, তার ফলে যুক্তি সঙ্গতভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে, সত্যিই কি তাহলে ভগবানও এই হিন্দু ধর্ম নিয়ে মেকি নাটক মেনে নিতে পারছেন না? সেই কারণে কি ভগবানের রোষের মুখে পড়ে যারা আজকে হিন্দুদের ভোট পাওয়ার জন্য এই নাটক করছেন, তাদেরকে স্বয়ং জগন্নাথ দেবই রথের চাকা আটকে দিয়ে বার্তা দিতে চাইলেন? প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরাই।