প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
আরজিকরের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের শহর কলকাতার বুকে ঘটে গেল আরও এক মর্মান্তিক এবং পৈশাচিক ঘটনা। যেখানে রথযাত্রার দিনেই খবর পাওয়া গেল, সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের মত মর্মান্তিক ঘটনার। যে ঘটনায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক প্রাক্তন নেতা জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। যার সঙ্গে তৃণমূলের অনেক হেভিওয়েট নেতা মন্ত্রীর ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরাফেরা করছে। স্বাভাবিকভাবেই আরজিকরের ঘটনার পর এই ধরনের ঘটনা শিক্ষাঙ্গনের মধ্যে ঘটে যাওয়ায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে একেবারে উঠে পড়ে ময়দানে নামতে শুরু করেছে বিরোধীরা। আর তার মধ্যেই দীঘাতে প্রথমবারের জন্য রথযাত্রায় সামিল হয়ে নিশ্চিন্তে সময় কাটবে বলে ভাবলেও, নিজের সফর কাটছাঁট করে তড়িঘড়ি কলকাতায় ফিরে আসতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই খবর সামনে আসার পরেই একদিকে যেমন বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে, ঠিক তেমনই খোঁচা দিতে শুরু করেছে বিরোধীরা।

বলা বাহুল্য, গতকাল দীঘায় প্রথমবারের জন্য রথযাত্রায় সামিল হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রথের রশিতে তিনি যখন টান দিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই গোটা রাজ্যে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। যে ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন নেতা এবং সেই কলেজের এক অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে গোটা ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কোনোভাবেই কাউকে রেয়াত করা হবে না এবং সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেবে পুলিশ বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আরজিকরের ঘটনার পর যে প্রতিবাদ রাজ্যজুড়ে হয়েছিল, তার ফলে অনেকটাই চাপে পড়ে গিয়েছিল তৃণমূল। তাই এক্ষেত্রে যাতে সেরকম কিছু না হয়, তার জন্য কি তড়িঘড়ি দীঘা ছেড়ে কলকাতায় ফিরতে চলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী?

বিশেষ সূত্র মারফত খবর, দীঘার রথযাত্রা সম্পন্ন করে শনিবার কলকাতায় ফেরার কথা ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু হঠাৎ করেই তার সফরের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসে। গোটা রাজ্য যখন কসবার ল কলেজের ঘটনা নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে, ঠিক তখনই খবর পাওয়া যায় যে, মুখ্যমন্ত্রী শনিবার নয়, শুক্রবার দীঘার রথযাত্রার অনুষ্ঠান শেষ করেই কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। আর এখানেই উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন প্রশ্ন। বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলছেন, এই গণধর্ষণের ঘটনায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা জড়িত। তাই তাকে তো বাঁচাতে হবে! সেই কারণেই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান তড়িঘড়ি কলকাতায় ছুটে আসছেন।

তবে বিরোধীদের পক্ষ থেকে এই দাবি করা হলেও, বিশেষজ্ঞরা কিন্তু অন্য কথা বলছেন। তাদের বক্তব্য যে, আরজিকরের ঘটনার পর এই রাজ্যের সরকার ব্যাপকভাবে চাপের মুখে পড়েছিল। গোটা রাজ্য জুড়ে আওয়াজ উঠেছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের। তাই এর কয়েক মাস পেরোতে না পেরোতেই আবার খাস কলকাতার বুকে একেবারে শিক্ষাঙ্গনের মধ্যে গণধর্ষণের ঘটনা এবং সেই ঘটনায় যেভাবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতার যোগ থাকার খবর সামনে এসেছে, তাতে কিন্তু সরকার এবং দল উভয়েই চাপের মুখে পড়বে। তাই সেই কারণেই প্রথম থেকেই পরিস্থিতিকে যাতে কন্ট্রোল করা যায়, তার জন্যই দীঘা ছেড়ে তড়িঘড়ি কলকাতায় ফিরতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।