প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বোলপুরের আইসিকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করার পরেও কি করে অনুব্রত মণ্ডল এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার না হয়ে বহাল তবিয়তে রয়েছেন, সেই প্রশ্ন গোটা রাজ্যের মানুষের মনে রয়েছে। সকলেই বলছেন, এটাই বাংলা। যেখানে বিরোধীরা শাসকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাকে কেস দেওয়া হয়। কিন্তু একজন তৃণমূল নেতা পুলিশ কর্তাকে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি তার মা, বউ তুলে আক্রমণ করলেও, তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। আসলে এই পুলিশের মেরুদন্ড নেই। তারা তৃণমূল নেতাদের দলদাস হয়ে কাজ করছে জন্যেই তাদের এই নিষ্ক্রিয়তা। আর বিরোধীদের এই সমস্ত অভিযোগের মধ্যেই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন। যেখানে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, তা নিয়ে তারা বীরভূমের পুলিশ সুপারের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিল। আর সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বীরভূমের পুলিশ সুপার যে উত্তর দিলেন, তাতে কিন্তু এখনও সন্তুষ্ট নয় সেই জাতীয় মহিলা কমিশন। যার ফলে আশঙ্কা মাথাচাড়া দিচ্ছে যে, এবার কি এই উত্তরে সন্তুষ্ট না হয়ে পুলিশের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ নেবে জাতীয় মহিলা কমিশন?
বলা বাহুল্য, বোলপুরের আইসিকে যে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন অনুব্রত মণ্ডল এবং তার মা, বউ তুলে অশ্লীল হুমকি দিয়েছেন, তা নিয়ে লজ্জিত গোটা মহিলা সমাজ। কিন্তু পুলিশের কেন এখনো লজ্জা হচ্ছে না? এই প্রশ্ন সকলের মধ্যেই রয়েছে। বিরোধীরা বলছেন, দলদাস হয়ে গেছে পুলিশ। সেই কারণেই তারা অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার মত সাহস দেখাচ্ছে না। তবে জাতীয় মহিলা কমিশনের পক্ষ থেকে গোটা ঘটনায় কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে, তা জানতে চেয়ে বীরভূমের পুলিশ সুপারকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল।
ইতিমধ্যেই সেই চিঠির উত্তর তিনি জাতীয় মহিলা কমিশনকে দিয়ে দিয়েছেন বীরভূমের পুলিশ সুপার। যেখানে তিনি জানিয়েছেন, “বোলপুর থানার আইসির অভিযোগের ভিত্তিতে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা রুজু। ঘটনার তদন্ত করছেন বোলপুরের এসডিপিও। অভিযোগকারীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে।” কিন্তু এত বড় ঘটনা ঘটলো, আর এই সামান্য পদক্ষেপ নিয়েই দায়িত্ব শেষ পুলিশের? তারা আর কি কোনো পদক্ষেপ নেবে না? আর বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রশ্নের উত্তরে তাদের যে প্রত্যুত্তরের চিঠি পাঠিয়েছেন, তাতে কি সন্তুষ্ট জাতীয় মহিলা কমিশন? ইতিমধ্যেই যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে তারা বীরভূমের পুলিশ সুপারের এই বক্তব্যে মোটেই খুশি নন বলে জানিয়ে দিয়েছেন সেই জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার। আর এই ঘটনার পরেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে এবার কি করবে জাতীয় মহিলা কমিশন?
পর্যবেক্ষকদের মতে, জাতীয় মহিলা কমিশন কি পদক্ষেপ নেবে, সেটা তাদের ব্যাপার। তবে পুলিশ যে দলদাস হয়ে গিয়েছে, তা এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার। কারণ গোটা রাজ্য এবং গোটা দেশের মানুষ জানে যে, এই রাজ্যে বিরোধীরা সামান্য প্রতিবাদ করলে বা শাসকের বিরুদ্ধে কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় সোচ্চার হলে কিভাবে তার বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাহলে সেক্ষেত্রে একজন পুলিশকর্তাকে অপমান করার পরেও শুধুমাত্র জিজ্ঞাসাবাদ করেই ছেড়ে দেওয়া হবে অনুব্রত মণ্ডলকে? এক্ষেত্রে যদি এই তৃণমূল নেতাকে ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে তো পুলিশ সম্পর্কে সাধারণ মানুষও যা খুশি তাই বলতে পারবে। যে কেউ আইন হতে তুলে নিতে পারবে! মা বোনেদের যে কেউ অপমান করতে পারবে! সেটা কি করে মেনে নেওয়া যায়? তাই জাতীয় মহিলা কমিশন বীরভূমের পুলিশ সুপারের এই বক্তব্যে যদি খুশি নাই হয়ে থাকে, তাহলে তো মহিলাদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে তাদের আর্থিক বড় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এই তৃণমূল সরকারের পুলিশ, যারা এত বড় ঘটনা ঘটার পরেও অনুব্রত মণ্ডলকে ছাড় দিয়ে রেখেছে, তাদের ক্ষেত্রে আরও কড়া অ্যাকশন নেওয়া উচিত জাতীয় মহিলা কমিশনের বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।