প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- দিঘার জগন্নাথ মন্দির নিয়ে প্রথম থেকেই শুরু হয়েছিল বিতর্ক। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বারবার করে দাবি করেছিলেন, এটা কোনো মন্দির নয়, এটা একটা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। কিন্তু তৃণমূলের পক্ষ থেকে বা রাজ্যের পক্ষ থেকে দীঘা জগন্নাথ ধাম বলে সম্বোধন করার পরেই এবার বড়সড় বেকায়দায় পড়ে গেল রাজ্য। ওড়িশা সরকারের পক্ষ থেকে যে পদক্ষেপ নেওয়া হলো, তাতে রীতিমত অস্বস্তিতে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই মনে করছেন একাংশ।
বলা বাহুল্য, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে এই দীঘার মন্দির উদ্বোধনের পরেই তা জগন্নাথ ধাম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর সেটা নিয়েই আপত্তি রয়েছে পুরীর মন্দির কর্তৃপক্ষের। তারা দাবি করছে যে, একমাত্র জগন্নাথ ধাম পুরীতেই রয়েছে। তাই এই ধাম শব্দটি অন্য কোনো মন্দিরের সঙ্গে বসানো উচিত নয়। তাই এবার সেই শব্দ বন্ধনী যাতে কেউ ব্যবহার করতে না পারে, তার জন্য বড়সড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে ওড়িশা সরকার। কিন্তু কি সেই পদক্ষেপ?
বিশেষ সূত্র মারফত খবর, ওড়িশা সরকারের পক্ষ থেকে এবার পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সঙ্গে যে সমস্ত শব্দ জড়িত রয়েছে, তা যাতে অন্য কোথাও ব্যবহার করা না হয়, তার জন্য স্বত্ব আরোপ করা হতে পারে। এক্ষেত্রে সেই সমস্ত শব্দ শুধুমাত্র পুরীর জগন্নাথ মন্দির ব্যবহার করতে পারবে বলে আসতে পারে বড়সড় বিজ্ঞপ্তি। ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে ট্রেডমার্ক দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে ওড়িশা সরকারের মধ্যে।
পুরীর মন্দিরের সেবাইতদের একাংশ বলছেন, পুরীর জগন্নাথ মন্দির তো আজকের নয়। এটা তো বহু প্রাচীন। তাই সেই জগন্নাথ মন্দিরের নামের সঙ্গে ধাম শব্দ উল্লেখ করা হয়। এটা মানুষের বিশ্বাস। আর সেই বিশ্বাসে আঘাত দিয়ে যেভাবে দিঘাতেও সদ্য জগন্নাথ মন্দির করে তাকে ধাম বলে সম্বোধন করা হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশ্নের বাতাবরণ তৈরি করেছে। আর সেই কারণেই যাতে প্রাচীন পুরীর মন্দিরের সঙ্গে কেউ নিজেদের জড়িয়ে নিতে না পারে, তার জন্যই একটা বড় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত সরকারের।
এদিকে ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে ওড়িশার আইনমন্ত্রী মালিকানা চুরির সামিল বলে মন্তব্য করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন। যার ফলে বড় চাপের মুখে পড়তে হতে পারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। যেভাবে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দীঘার জগন্নাথ ধাম উদ্বোধন করেছেন, তারপর থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। পুরীর রাজেশ দ্বৈতাপতির ভূমিকা নিয়েও তৈরি হয়েছিল প্রশ্ন। আর এই পরিস্থিতিতে সেই দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের পাশে “ধাম” শব্দ যুক্ত করায় এবার পুরীর মন্দিরের ভাবাবেগে আঘাত হয়েছে বলেই একাংশ মনে করছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে যদি ওড়িশা সরকার সেই ধাম শব্দ আর কেউ ব্যবহার করতে না পারে, এরকম কোনো পদক্ষেপ নিয়ে নেন, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকার সব থেকে বড় ধাক্কা খাবে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।