প্রিয়বন্ধু মিডিয়ার রিপোর্ট- এই রাজ্যে লক্ষ্মীর ভান্ডার হয়েছে। মহিলারা নাকি তৃণমূলের দ্বারা ভীষণভাবে উপকৃত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন সভা-সমিতিতে তাই বলেন। এমনকি তৃণমূলের নেতারাও বিভিন্ন সভা, সমিতিতে বলার চেষ্টা করেন যে, মহিলাদের একমাত্র দুঃখ বুঝেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সত্যিই কি তাই? দুঃখ কি সত্যিই মোচন হয় এই সামান্য ভাতা দিয়ে? এই রাজ্যে ঘটে যায় আরজিকরের মতো ঘটনা, একের পর এক ধর্ষণ, মহিলাদের মান সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলা। যার ফলে বারবার করে প্রশ্নের মুখে পড়ে যায় বাংলার মেয়ের ভূমিকা নিয়ে। যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটে “বাংলা নিজের মেয়েকে চায়” বলে নিজের ছবি সামনে রেখেছিলেন, প্রচার করেছিল তার দল, সেখানে অনুব্রত মণ্ডলের অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর পুলিশকর্তার মা, বউকে নিয়ে নোংরা কথা বলার পর যে বাংলার মেয়ে তকমা বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কিছুটা হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে ঘুচে গিয়েছে, সেই তকমা ফেরানোর জন্য কি তিনি এবার বড় সুযোগ কাজে লাগাবেন? নাকি যেমন চলছে, তেমন ভাবেই চালাবেন? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।

অনুব্রত মণ্ডলের যে ভাইরাল অডিও ক্লিপ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। সেই ঘটনার পর এখনও পর্যন্ত তিনি গ্রেফতার হননি। বিরোধীরা যদি সামান্য প্রতিবাদ করে, কোনো ইউটিউবার যদি নিরপেক্ষ কথা বলে সোশ্যাল মিডিয়ায়, তাহলেই তার বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অথচ অনুব্রত মণ্ডলের ক্ষেত্রে অন্য আইন। তিনি যা খুশি করতে পারেন। পুলিশের মা, বউ তুলে গালিগালাজ দিলেও সাত খুন মাফ। তাহলেও পুলিশ আত্ম সম্মান বিকিয়ে দিয়ে সেই অনুব্রতবাবুর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেবে না। গতি প্রকৃতি যা তাতে তেমনটাই বলছেন বিরোধীরা।

তবে এই রাজ্যে তো এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে, যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে “বাংলার মেয়ে” বলে পরিচয় দেওয়ার পর তার বিরুদ্ধেই প্রশ্ন উঠেছে। ফলে এবার তো তার কাছে একটা বড় সুযোগ, নিজেকে আবার বাংলার মেয়ে প্রমাণ করার। বাংলার মা-বোনেদের দুঃখ তিনি বোঝেন, এটা প্রমাণ করার জন্য তো তার কাছে একটা সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। তিনি তো রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী। ফলে তার দলের নেতা অনুব্রত মণ্ডল একজন পুলিশ কর্তাকে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি যেভাবে তার মা, বউকে নিয়ে অশ্লীল কথা বলেছেন। তাতে কি তিনি পারবেন সেই অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিতে?

এদিন তেমনই কিছু কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে বলেছেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। তার স্পষ্ট বার্তা, “এখনও পর্যন্ত কেন অনুব্রতবাবুকে গ্রেফতার করা হলো না? ৭২ ঘন্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কেন পুলিশ তাকে চুলের মুঠি ধরে গ্রেফতার করতে পারছে না? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো নিজেকে বলেন, বাংলা নিজের মেয়েকে চায়। তিনি মা, মাটি মানুষের সরকারের নেত্রী। তাহলে মহিলাদের মান, সম্মানের কথা ভেবে তিনি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করুন। তাহলেই বাংলার মায়ের ভাববেন যে, তিনি সত্যিই মহিলাদের কথা ভাবেন।”

পর্যবেক্ষকদের মতে, যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই রকম চিন্তাভাবনা থাকত, তাহলে হয়ত ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই তিনি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে নিতেন বা গ্রেফতারের নির্দেশ দিতেন। কিন্তু পুলিশ যখন এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, তখন বুঝতে হবে যে, ওপরতলার নির্দেশ নেই।