প্রিয়বন্ধু মিডিয়ার রিপোর্ট- কোনো সাধারণ মানুষকে যদি তার মা, বাবা এবং বাড়ির স্ত্রী বা অন্য কোনো মহিলাদের তুলে কেউ গালিগালাজ দেন, তাহলে কি সেই মানুষটি তা সহ্য করবেন? দুপক্ষের মধ্যে বিভিন্ন কারণে অশান্তি হতে পারে। বিভিন্ন কারণে মতানৈক্য সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু তাই বলে পরিবারের সদস্যদের তুলে ধরে, বাড়ির মহিলাদের তুলে ধরে যদি কেউ আপনাকে গালিগালাজ দেয়, আপনি কি চুপ করে মেনে নেবেন? নিজেকে দিয়ে বিচার করলে সকলেই বলবেন যে, না। কখনই এটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে পুলিশ কি করে মেনে নিচ্ছে? অনুব্রত মণ্ডলের মত একজন নেতা, তিনি পুলিশের মা, বউ তুলে কদর্য ভাষায় গালিগালাজ করলেন, তার পরেও কেন এখনও পর্যন্ত সেই পুলিশ অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে গিয়ে তার জামার কলার ধরে তাকে জেলে ঢোকাতে পারছে না? বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
বলা বাহুল্য, গোটা রাজ্যবাসী জেনে গেছে যে, অনুব্রত মণ্ডল কি কীর্তি করেছেন! কিভাবে বোলপুরের আইসিকে ফোন করে তাকে হুমকি দেওয়া শুরু নয় তার মা, বউকে তুলে ধরে গালিগালাজ করেছেন, কদর্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন। যা সভ্য সমাজে মুখে পর্যন্ত নেওয়া যায় না। তারপর পেরিয়ে গিয়েছে ঘন্টার পর ঘন্টা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই অনুব্রত মণ্ডল নিজের মত করে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। আর এখানেই সবথেকে বড় প্রশ্ন যে, পুলিশের কি বিন্দুমাত্র অপমান বোধ কাজ করছে না? তাদের কি লজ্জা লাগছে না একজন চুনোপুটি নেতা, তিনি এইভাবে গালিগালাজ করবেন পুলিশকর্তাকে! তার বাড়ির মহিলা সদস্যদের তুলে ধরে হুমকি দেবেন, আর সেটা তিনি চুপচাপ মুখ বুজে সহ্য করবেন শুধুমাত্র তাবেদারি এবং দাসত্ব করার জন্য?
এদিন এই ব্যাপারে সুকান্তবাবুকে একটি প্রশ্ন করা হয়। আর সেখানেই পুলিশের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “আমি যদি এই কাজ করতাম, পুলিশ আমার সাথে কি করত? আমি ছেড়ে দিন। উনি তো এমএলএ না, এমপি না, কিচ্ছু না। একজন সাধারণ মানুষ যদি একজন থানার আইসিকে গালি তুললে কি হত? আরে আমার মা, বোন নিয়ে গালি তুললে তো আমি তাকে বাড়ি গিয়ে থাবরে দিয়ে আসতাম। আর পুলিশকে এইভাবে গালি দিয়েছে, ছেড়ে দেবে? ছেড়ে দেওয়া উচিত? কে পার্টি, কার কাছে ক্ষমা চেয়েছে, রাখুন তো এসব ক্ষমা চাওয়া।”
বিরোধীদের বক্তব্য, সত্যিই তো তাই। পার্টির কাছে ক্ষমা চাইলেই সাত খুন মাফ নাকি? কে অনুব্রত মণ্ডল? কে তিনি যে, তার এত বড় ক্ষমতা হবে, একজন পুলিশকর্তাকে এইভাবে হুমকি দেওয়ার? তার মা, বউ তুলে গালিগালাজ করার? আর তারপরে অপদার্থ পুলিশ বিরোধীরা প্রতিবাদ করলে কেস দেবে। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডল এত বড় অপমান করার পরেও সব অপমান সহ্য করে নিয়ে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এসে জেলে ঢোকাতে পারবে না? প্রশ্ন উঠছে, এত সমস্ত অপমান পুলিশ কি করে সহ্য করতে পারছে? নিজের বাড়ির মহিলাদের অপমান, নিজের সম্ভ্রম, তার অপমান কি করে হজম হচ্ছে পুলিশের? শুধুমাত্র নবান্নের ১৪ তলার কাছে ভালো থাকার জন্যই কি আত্ম সম্মান বিকিয়ে দিচ্ছে পুলিশ? আর কত নীচে নামবে দলদাস প্রশাসন? পুলিশের নীচুতলায় ঘুম ভাঙবে কবে? কবে বিদ্রোহ তৈরি হবে এই অনুব্রত মণ্ডলের মত তথাকথিত হুমকি বাজ নেতাদের বিরুদ্ধে? আওয়াজ তুলছে রাজ্যবাসী।