প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- মুখে শুধু বড় বড় কথা বললেই হয় না। প্রমাণ নিয়ে সেই কথা বলতে হয়। এই রাজ্যের সরকার এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার দলের নেতারা মাঝেমধ্যেই বলতেন যে, অনুপ্রবেশ হচ্ছে তো বিএসএফের জন্য, কারণ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ঠিকমত সীমান্ত পাহারা দিতে পারছে না, তাদের গাফিলতি। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কোনো দায় নেই। কিন্তু সম্প্রতি রাজ্যে এসে অমিত শাহ তৃণমূল সরকারের ভান্ডা ফোর করে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, তাদের কাছে সীমান্ত রক্ষার জন্য কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার জন্য জমি চাওয়া হলেও, রাজ্য সরকার সেই জমি দেয়নি। কারণ তারা চাইছে, যাতে এই অনুপ্রবেশ হয় এবং তার জন্য তাদের ভোটব্যাংক সুরক্ষিত থাকে। আর অমিত শাহের এই বক্তব্যকে সত্যি হিসেবে মেনে নিয়েই এবার নিজেদের কুকীর্তি যাতে ফাঁস না হয়ে যায়, তার জন্যেই অবশেষে জমি দিতে রাজি হয়ে গেল নবান্ন।

কি ঘটনা ঘটেছে? সম্প্রতি অমিত শাহ রাজ্যে এসে অনুপ্রবেশ নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, এই রাজ্যের সরকারের কাছে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার জন্য জমি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা সেই জমি দেয়নি। কারণ তারা অনুপ্রবেশ চায় এবং তাদের ভোটব্যাংকের জন্য এই অনুপ্রবেশ যাতে হয়, সেটা তাদের উদ্দেশ্য। আর এরপরেই রে রে করে উঠেছিলেন তৃণমূল নেতারা। তারা বলতে শুরু করেছিলেন, অমিত শাহ মিথ্যা কথা বলছেন। সীমান্ত রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব। তারা রক্ষা করতে পারেনি। তাই ব্যর্থতা তাদের। কিন্তু তৃণমূল নেতাদের এই বক্তব্যকে কার্যত মিথ্যে প্রমাণ করে দিয়ে তাদেরই দল যারা রাজ্য সরকারে রয়েছে, সেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সীমান্ত সুরক্ষার জন্য জমি দেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি প্রকাশ করা হয়েছে বলেই খবর পাওয়া যাচ্ছে।

আর অমিত শাহের ধমকের পরেই রাজ্য সরকার সীমান্তের সুরক্ষার জন্য কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার জন্য জমি দেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি প্রকাশ করার পরেই পাল্টা কটাক্ষ শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, তৃণমূল নেতাদের কি মিথ্যে কথা বলতে বিন্দুমাত্র লজ্জা করে না? এতদিন তো বিএসএফের ওপর দোষ দিচ্ছিলেন। কিন্তু অমিত শাহ এসে আসল সত্যি ফাঁস করে দিয়েছেন। যদি ক্ষমতা থাকত, তাহলে অমিত শাহের সেই বক্তব্যকে নিয়ে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করতে দেখা যেত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু তার সেই ক্ষমতা হয়নি। কারন তিনি নিজেও জানেন যে, তার সরকার জমি দিচ্ছে না জন্যেই সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ হচ্ছে। তাই এবার বাধ্য হয়ে জমি দিয়ে লাইনে আসতে বাধ্য হলো নবান্ন বলেই দাবি করছেন তারা।

পর্যবেক্ষকদের মতে, একেই বলে, ঠ্যালার নাম বাবাজি। কথায় কথায় কেন্দ্র বিরোধী কথা বলতে এক ফোঁটাও সুযোগ ছাড়েন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নরেন্দ্র মোদীকেও যা ইচ্ছে, তাই বলে আক্রমণ করেছেন তিনি। কিন্তু অমিত শাহ যে সমস্ত তথ্য দিয়ে এই তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন, তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে কিছুই বলতে দেখা যায়নি। উল্টে যে অনুপ্রবেশ নিয়ে এত অভিযোগ করেছিলেন অমিত শাহ, সেই অভিযোগকে কার্যত সত্যি করে দিয়েই সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার জন্য জমি দেওয়ার ব্যাপারে নবান্নের সম্মতি প্রকাশ বুঝিয়ে দিল যে, এতদিন সীমান্তে অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে যে গাফিলতি তৈরি হয়েছিল, তার সম্পূর্ণ দায় রাজ্য সরকারের বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।