প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – কথায় আছে, বেশিদিন চালাকি করে টিকে থাকা যায় না। আর সেটাই হয়ত তৃণমূল সরকারের ক্ষেত্রে হচ্ছে। এতদিন মানুষের ওপর নির্যাতন করে তারা ভেবেছিল যে, সবকিছু এই ভাবেই পার হবে। কিন্তু এবার হাইকোর্টের পক্ষ থেকে যারা তারা যে ধাক্কাটা খেলো, তা বিধানসভা নির্বাচনের আগে তো বটেই, নিজের রাজনৈতিক জীবনের বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে এই ধাক্কাকেই বারবার করে মনে করতে হবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেই দাবি করছে বিরোধীরা। কিন্তু কি সেই ধাক্কা? রাজ্য সরকার এই ধাক্কা খাওয়ার পরেই বিরোধী দল যেভাবে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠেছে, তাতে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের গতিপথ এখন থেকেই অন্যদিকে মোড় নিতে শুরু করেছে।

 

কি ঘটনা ঘটেছে? বলা বাহুল্য, দীর্ঘদিন ধরেই ওবিসির বিষয়টি নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। ইতিমধ্যেই ওবিসি সংরক্ষণের একটি তালিকা নতুন করে বানিয়েছিল রাজ্য সরকার। যা নিয়ে বিরোধীদের পক্ষ থেকেও লাগাতার প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। এমনকি সেই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা পর্যন্ত হয়েছিল। আর সেই মামলাতেই এবার আদালতের পক্ষ থেকে যে স্থগিতাদেশ দেওয়া হলো, তাতে বর্তমান সময়কালে সবথেকে বড় ধাক্কা খেলো নবান্ন বলেই মনে করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত রাজ্যের পক্ষ থেকে যে নতুন ওবিসি বিজ্ঞপ্তি, তার ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ডিভিশন বেঞ্চ। আর এই নির্দেশ সামনে আসার পরেই রীতিমত তৃণমূল সরকারকে বাগে ফেলার পাশাপাশি উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বানানো নতুন ওবিসি তালিকায় ৭৬ টি মুসলিম শ্রেণীর অন্তর্ভুক্তির স্থগিত করার যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের জন্য আমি কলকাতা হাইকোর্টের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। একটি অহংকারী রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এটি একটি দুর্দান্ত জয়, যারা কিনা বারবার নিজেদের রাজনৈতিক লাভের জন্য সাংবিধানিক নিয়ম গুলি ভঙ্গ করেছে। ওবিসি তালিকায় প্রায় ৯০ শতাংশ নতুন মুসলিম শ্রেণীর অন্তর্ভুক্তি থেকে তৃণমূল সরকারের তোষনের রাজনীতি পরিষ্কার।” শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে বারবার করে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে শুভেন্দুবাবু যে অভিযোগটা তুলেছেন, তা আরও মারাত্মক। তিনি দাবি করছেন, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার আগে এই ওবিসি তালিকায় ২০ শতাংশ মুসলিম থাকলেও বর্তমানে তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এক্ষেত্রে যারা অমুসলিম, তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকার বহু চেষ্টা করে গোটা বিষয়টি মেকআপ করার মরিয়া চেষ্টা চালালেও, শেষ পর্যন্ত আদালতে তারা যেভাবে ধাক্কা খেলো, তাতে ভোটের রাজনীতিতে তো বটেই, আগামী দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজনৈতিকভাবে গাড্ডায় ফেলার মত বড় হাতিয়ার পেয়ে গেলেন শুভেন্দুবাবু বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।