প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- কিছুদিন আগেই কাশ্মীরে ঘটে গেছে বীভৎস জঙ্গি হামলা। তারপর গোটা ভারতবর্ষ ঐক্যবদ্ধ ছিল। অপারেশন সিঁদুর চালিয়ে পাকিস্তানকে কার্যত কড়া ভাষায় জবাব দিয়েছে ভারত। কিন্তু এবার কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে যে জঙ্গি হামলা ঘটেছিল, তা নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করতে গিয়ে আবার নির্লজ্জ রাজনীতি শুরু করে দিলো তৃণমূল কংগ্রেস। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যখন সকলের ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা, যখন বিএসএফ ছিল বলে আমরা সকলে সুরক্ষিত থেকেছিলাম, তখন সেই বিএসএফের বিরুদ্ধেই দোষ চাপিয়ে উল্টে তৃণমূলেরই মাথা ব্যথার কারণ হয়ে গেলেন কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই মনে করছেন একাংশ।

জানা গিয়েছে, এদিন কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে যে জঙ্গি হামলা হয়েছিল, যা নিয়ে পাকিস্তানকে জবাব দিতে গিয়ে অপারেশন সিঁদুর চালিয়েছে ভারত, যাকে গোটা দেশ প্রশংসা করছে, সেনাবাহিনী যে ভূমিকা নিয়েছে, তার জন্য সকলে গর্বিত, তখন এক অন্য কথা শোনা গেল তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জীর গলায়। কোথায় একজন সাংসদ হিসেবে বিএসএফের প্রশংসা করবেন! কিন্তু তা না করে উল্টে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে এই জঙ্গি হামলা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ব্যর্থতার কারণেই ঘটেছে বলে দায়ী করলেন তিনি। যার ফলে প্রশ্ন উঠছে যে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে কি একজন সাংসদ একজন জনপ্রতিনিধি এই ধরনের কথা বলতে পারেন? এখন কি রাজনীতি করার সময়? এই সমস্ত বলে তো গোটা দেশের কাছে আরও খেলো হয়ে যাচ্ছেন তৃণমূলের এই সমস্ত জনপ্রতিনিধিরা! এটা কি তারা বুঝেও বোঝার চেষ্টা করছেন না? নাকি নিজের দলের নেত্রীর কাছে নম্বর বাড়ানোর প্রয়াস চলছে?

কিন্তু ঠিক কি বলেছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়? এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার কথা তুলে ধরেন শ্রীরামপুরের এই সাংসদ। তিনি বলেন, “কেন তোমরা বিএসএফকে দিয়ে কাজ করাতে পারছ না? পহেলগাঁওতে যে ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য দায়ী নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ। আজকে কোনো ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট ছিল না। ছেলেখেলা নাকি? বাইরে থেকে কিছু জঙ্গি এলো, তারা গুলি করে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলে গেল! আর নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ ঘুমাচ্ছিলেন? ওদের বিএসএফ কোথায় ছিল? এত সিআইএসএফ, এত বিএসএফ। পশ্চিমবঙ্গে তো একটা ঢিল পড়লেই প্রচুর সিআইএসএফ, প্রচুর বিএসএফ।”

আর এখানেই বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন যে, কল্যাণবাবুর কি গাত্রদাহের কারণ, পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার বাড়তি নজর দিচ্ছে সেই কারণে? পশ্চিমবঙ্গে ভোট হয় না, পশ্চিমবঙ্গে হিংসা হয়, তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী আসে এবং তারা যাদেরকে ভোটব্যাংক বলে মনে করেন, তারা ঠিকমতো অত্যাচার করতে পারে না, তাদেরকে টাইট দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী, সেজন্যই কি বিএসএফ এবং সেনাবাহিনীর ওপর এত রাগ এই তৃণমূল সাংসদের? গোটা দেশের মানুষ জানে, কি করে পাকিস্তানকে জবাব দিয়েছে ভারত। আর ইন্টেলিজেন্সের কথা যদি কল্যাণবাবু বলেন, তাহলে তো এটাই বলতে হয় যে, মুর্শিদাবাদ ভয়ঙ্কর দাঙ্গা হলো, তখন কেন রাজ্য প্রশাসনের কাছে ইন্টেলিজেন্স ছিল না?

আরজিকরে যে ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে, কেন স্বাস্থ্য দপ্তর ফেল হয়ে গেল? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর তৃণমূল সাংসদের কাছে আছে তো? বিরোধীদের দাবি, আগে আয়নায় নিজের মুখটা দেখে দেশের সেনাবাহিনী, যারা আমাদের প্রতিমুহূর্তে শত্রু দেশের হাত থেকে রক্ষা করে, যাদের জন্য অপারেশন সিঁদুর করে পাকিস্তানকে কার্যত কোমর ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সেই বিএসএফকে নিয়ে কথা বলা উচিত। আর তা না হলে এই সমস্ত কথা কল্যাণবাবুদের মত নেতারা যত বলবেন, ততই তা তৃণমূলের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।