প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার আলাপচারিতা খুব ভালোভাবে নেয়নি বঙ্গ বিজেপি। তারা যখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে লড়াই করছে তখন দিলীপ ঘোষের এই ধরনের আচরণ বিজেপি কর্মীরা খুব একটা ভালোমত নিতে পারেনি। তাদের মনে আঘাত দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। এমনটাই শোনা গিয়েছিল বিজেপির অন্দরমহল থেকে। সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদী রাজ্যে আসলেও সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতিকে। আর এবার অমিত শাহ রাজ্যে এসে বঙ্গ বিজেপির ফুল টিমকে নিয়ে সভা করলেও, সেখানে অনুপস্থিত থাকতেই দেখা গেল দিলীপ ঘোষের মত নেতাকে। আর এতেই প্রশ্ন উঠছে যে, দীঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনে যাওয়া এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ভালো মত কথা বলাই কি কাল হলো দিলীপ ঘোষের?

বলা বাহুল্য, গতকাল অমিত শাহ রাজ্যে এসে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চরিয়েছেন। বঙ্গ বিজেপিকে আরও চাঙ্গা হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বুঝিয়ে দিয়েছেন, ২০২৬ তাদের কাছে প্রধান টার্গেট। কিন্তু আশ্চর্য জনকভাবে এই সভায় বঙ্গ বিজেপির বর্তমান নেতৃত্ব সহ ফুল টিম উপস্থিত থাকলেও, সেখানে অনুপস্থিত থাকতেই দেখা গেল দিলীপ ঘোষকে। আসলে অনুপস্থিত থাকার কোনো ব্যাপার নেই। এইরকম গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতিকে।

এদিন এই ব্যাপারে দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, “আমাকে ডাকা হয়নি। যাদের ডাকা হয়েছে, তারা গেছে। আমাকে বৈঠকে ডাকা হয়নি। লিস্টে নাম ছিল না, আমি যাইনি।” আর এখানেই প্রশ্ন যে, দিলীপ ঘোষের রাজ্য সভাপতি পদ তো এখন যায়নি। অনেক দিন আগেই তার রাজ্য সভাপতি পদ চলে গিয়েছে। তারপরও তো এই রাজ্যে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা এসেছিলেন। তখন তো দিলীপ ঘোষ প্রত্যেকটি বৈঠকে ডাক পেতেন। হঠাৎ করে তার এই বৈঠকে ডাক না পাওয়ার কারণ কি? তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তলায় তলায় একটা গোপন বোঝাপড়া, তার খবর সঠিক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে জন্যই এখন মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে দিলীপ ঘোষের? প্রশ্নটা উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিলীপ ঘোষের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের কফিনে যে শেষ পেরেক পোঁতা হয়ে গেছে, তা অমিত শাহের সভার পরে আরও বেশি করে স্পষ্ট হয়ে গেল। তৃণমূল ভেবেছিল যে, এই দিলীপ ঘোষকে নিয়ে খেলবে এবং তাকে নিয়ে প্রচার করে বিজেপিকে আর অস্বস্তিতে ফেলবে। কিন্তু বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব গোটা বিষয়ে একদমই এন্টারটেইন করতে রাজি নয়। আর সেই কারণেই দিলীপ ঘোষের মত গুরুত্বপূর্ণ নেতা, যাকে একসময় বিজেপি অনেক কিছু দিয়েছিল, এখন তাকেই কার্যত রুমালে পরিণত করে দেওয়া হলো। অমিত শাহের মত নেতা বড় সাংগঠনিক বৈঠক করলেন, সেখানে সকলে উপস্থিত থাকলেন, অথচ দিলীপ ঘোষকে কার্যত ব্রাত্য রেখেই হলো সেই বৈঠক। আর এর ফলেই একাংশ বলছেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্লায় পড়েই এখন না ঘরকা না ঘাটকা অবস্থা দিলীপবাবুর। দিনের শেষে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।