প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
এই রাজ্যে যারাই বিরোধী কণ্ঠস্বর, যারাই প্রতিবাদ করবেন শাসকের বিরুদ্ধে, তাদেরকেই পুলিশ দিয়ে হেনস্থা করতে হবে। এটাই যেন শাসকদলের টার্গেট হয়ে গিয়েছে। এতদিন কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু তিনি যেদিন থেকে শাসকের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন, যেদিন থেকে হিন্দুদের প্রতি অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন, রাজ্যে পরিবর্তনের ডাক দিচ্ছেন, সেদিন থেকেই যেন তিনি শাসকের চক্ষুশূল হয়ে গিয়েছেন। আর সেই কারণেই এতদিন তিনি চুপ থাকলেও, কেন তার বিরুদ্ধে কিছু হলো না! আর হঠাৎ করে তিনি মুখ খোলার পরেই কেন তার বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ উঠলো এবং পুলিশ সক্রিয় হয়ে উঠলো তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর এসবের মধ্যেই এবার সেই কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করলো পুলিশ, যার ফলে তার অনুরাগী থেকে শুরু করে হিন্দু সনাতনী, সকলেই চিন্তায় রয়েছেন যে, এবার কি বাংলাদেশের চিন্ময় প্রভুর মত এপার বাংলায় কার্তিক মহারাজকেও গ্রেফতার করা হবে? কি ঘটনা ঘটেছে?

বলা বাহুল্য, ইতিমধ্যেই বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রধান কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে এক মহিলাকে চাকরি দেওয়ার নাম করে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই তার বিরুদ্ধে নবগ্রাম থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। আর সেই ঘটনা সামনে আসতেই তৃণমূল হৈ হৈ করে ময়দানে নেমে বিজেপি এবং কার্তিক মহারাজকে আক্রমণ করতে শুরু করেন। তবে সকলেরই একটা আশঙ্কা যে, কার্তিক মহারাজ শাসকের বিরুদ্ধে কথা বলার পরেই কেন তার বিরুদ্ধে এই সমস্ত অভিযোগ উঠলো? যদি এমন ঘটনার সঙ্গে তিনি যুক্তই থাকবেন, তাহলে কেন আগে থেকে এইরকম অভিযোগ পাওয়া গেল না? তাহলে কি তার বিরুদ্ধে হচ্ছে ভয়ংকর চক্রান্ত? কাউকে দিয়ে অভিযোগ করিয়ে তাকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে? এই সমস্ত প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে উঠতে শুরু করেছিল। আর তার মধ্যেই এবার নবগ্রাম থানার পুলিশের পক্ষ থেকে নোটিশ দিয়ে ডেকে পাঠানো হলো সেই কার্তিক মহারাজকে।

জানা গিয়েছে, নবগ্রাম থানার পুলিশের পক্ষ থেকে এদিন একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে বেলডাঙ্গার ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রধান কার্থিক মহারাজকে। যেখানে আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার সকাল ১০ টার সময় তাকে থানায় হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আর এই খবর সামনে আসার পরেই নানা মহলে তৈরি হয়েছে আশঙ্কার মেঘ। অনেকে বলছেন, এর আগেও যারা বিরোধী কণ্ঠস্বর ধারণ করে রাজ্যে শাসকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন, তাদেরকে মিথ্যে মামলা দিয়ে পুলিশি নোটিশ ধরানো হয়েছে। যারাই প্রতিবাদ করেছেন এই রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে, তাদেরকে যেভাবেই হোক, জেলে ঢোকানোর চেষ্টা করেছে এই দলদাস পুলিশ। এক্ষেত্রেও হিন্দুদের যিনি ঐক্যবদ্ধ করছেন, যিনি শাসকের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, সেই কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে জঘন্য চক্রান্ত করে এবার কি তাকে থানায় ডেকে তার মুখ বন্ধ করতে শুরু হয়ে যাবে গ্রেপ্তারির মত পুলিশের কড়া পদক্ষেপ? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।

তবে এর পাশাপাশি বিরোধীদের আরও বক্তব্য যে, যদি সত্যিই কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে এরকম কোনো অভিযোগ থাকে এবং তার যদি বিন্দুমাত্র সত্যতা থাকে, তাহলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ অবশ্যই নেওয়া উচিত প্রশাসনের। কিন্তু সময় এবং কাল যথেষ্ট প্রশ্নের বিষয়। কেন এতদিন কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে এই সমস্ত অভিযোগ থাকার পরেও, তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলো না এবং পুলিশ পদক্ষেপ নিলো না? হঠাৎ করে তিনি শাসকের বিরুদ্ধে কথা বলার পরেই কেন এই সমস্ত অ্যাকশন হচ্ছে, সেটা অবশ্যই প্রশ্ন তৈরি করছে বিভিন্ন মহলে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে নোটিশ পাঠানো হলেও, আগামীকাল নির্ধারিত সময় মেনে থানায় হাজিরা দেবেন কিনা কার্তিক মহারাজ, তা অবশ্য এখনও জানা যায়নি।