প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-
রাজ্যে একের পর এক খুন, ধর্ষণের মত ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। কিন্তু তারপরেও কেন্দ্র কেন চুপ করে আছে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কেন নীরবতা পালন করছে, কেন তারা বাংলা নিয়ে সামনে যখন ২০২৬ এর নির্বাচন, যখন তারা ক্ষমতা দখল করবে বলে মনস্থির করেছে, তখন বাড়তি পদক্ষেপ নিচ্ছে না? এই প্রশ্ন বাংলার নীচুতলার বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ছিল। তবে এবার বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলো, তাতে কিন্তু চাপ বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের। এমনিতেই বিভিন্ন ঘটনায় তারা জর্জরিত। তার মধ্যে কসবার গণধর্ষণ কান্ড তৃণমূলের মারাত্মক অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। আরজিকরের মতই এই ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যাবে বলে তৃণমূল যতই তাকে পাত্তা না দেওয়ার চেষ্টা করুক না কেন, যেভাবে বিদ্রোহ বাড়ছে, যেভাবে বিক্ষোভ বাড়ছে এবং তারপর রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে এই গণধর্ষণের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যে কড়া অ্যাকশন নেওয়া হলো, তার ফলে সেই অ্যাকশনের রিপোর্ট পৌঁছোনোর পর বাংলা নিয়ে গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব আরও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করুক বলেই আশা করছেন নেতাকর্মীরা।

কি ঘটনা ঘটেছে? ইতিমধ্যেই কসবা গণধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বিজেপি। বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে যে অ্যাকশন নেওয়া হয়েছে, তার ফলে বাংলার বিজেপি কর্মীরা যথেষ্ট খুশি। জানা গিয়েছে, এই কসবা কান্ডের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই রাজ্যে পৌঁছে গিয়েছেন বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যরা। যে টিমে রয়েছেন বিজেপি সাংসদ বিপ্লব দেব, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মীনাক্ষী লেখি, সাংসদ মনন কুমার মিশ্র, এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও পুলিশ কর্তা সত্যপাল সিংহ। কিন্তু রাজ্যে আসার পর বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে গঠন করা এই টিমের পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে?

জানা গিয়েছে, বিজেপির পক্ষ থেকে গঠন করা এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যরা রাজ্যে আসার পর তাদের বাধা দান করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এই রাজ্যের পুলিশ যেভাবে সব ক্ষেত্রেই বিরোধীদের বাধা দেয়। এক্ষেত্রেও সেই প্রতিনিধি দলের সদস্যদের কোথাও যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না বলেই অভিযোগ। যার ফলে প্রশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে গেরুয়া শিবির। আসল তথ্য ফাঁস হয়ে যাবে, সেই ভয়েই বিজেপির এই প্রতিনিধি দলের সদস্যদের কোথাও যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না বলেই অভিযোগ বিরোধীদের। তবে শেষ পর্যন্ত নিজেদের অবস্থানে ওনার বিজেপির এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যরা। গোটা ঘটনা নিয়ে তারা রিপোর্ট তৈরি করে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছে জমা দেবেন বলেই খবর। আর সেই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে রিপোর্ট পেয়ে অতীতের মত আর বসে থাকলে চলবে না। এবার ২০২৬ এর নির্বাচনকে মাথায় রেখে বাংলা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ ভাবে অ্যাকশন নিতে হবে কেন্দ্রীয় বিজেপিকে বলে দাবি গেরুয়া শিবিরের নেতা কর্মীদের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপি রিপোর্ট তৈরি করে পরবর্তী পদক্ষেপ কি নেবে, সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। কিন্তু ২০২৬ এর নির্বাচনের আগে একদিকে এই কসবা গণধর্ষণ কাণ্ড এবং অন্যদিকে তার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির বা বিরোধীদের সমবেত প্রতিবাদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকারকে অত্যন্ত চাপে রেখেছে। আর তার মধ্যেই বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম তৈরি করে যেভাবে এই কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হলো এবং তারা রাজ্যে পৌঁছে গিয়েছে, তাতে কিন্তু ঘুম উড়তে বাধ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নবান্নের বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।