প্রবেশিকা পরীক্ষা চালু হবে কি না, কীভাবে নির্ধারিত হবে মেধাতালিকা, কত আসন রাজ্যবাসীর জন্য সংরক্ষিত—এই সব প্রশ্ন নিয়েও উঠলো আলোচনা
প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া কবে শুরু হবে, সেই প্রশ্নে উত্তাল হয়ে উঠল বিধানসভা। সোমবার বিজেপি বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক বিধানসভায় সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, “ছাত্রছাত্রীরা উৎকণ্ঠায় দিন গুনছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কলেজে ভর্তি নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট বিজ্ঞপ্তি নেই। সরকারের কী পরিকল্পনা?” এই প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, “উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পরে যথাযথ সময়েই কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। এতে কোনো প্রকার বিলম্ব হবে না।” তবে এই প্রশ্ন-উত্তর ঘিরেই ফের সামনে চলে এল একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু—ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, অনলাইন পরিষেবার সমস্যা, আসনসংরক্ষণ এবং সম্ভাব্য প্রবেশিকা চালু করার দাবি।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, রাজ্যে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে অনলাইনে হবে এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ ফল প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলিকে নির্দেশিকা পাঠানো হবে। সরকার ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে। তবে শুধু সময় নয়, আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হয়। বিজেপি ও কংগ্রেস, উভয় বিরোধী দল থেকেই প্রশ্ন ওঠে—অনেক কলেজে আসনসংখ্যা সীমিত হওয়ায় বহু মেধাবী পড়ুয়া ভর্তি হতে পারেন না। সেই কারণে কি রাজ্য সরকার ভবিষ্যতে প্রবেশিকা পরীক্ষা চালু করার কথা ভাবছে?
ব্রাত্য বসু স্পষ্ট করেন, আপাতত প্রবেশিকা পরীক্ষার পরিকল্পনা নেই, তবে যেসব কোর্সে প্রতিযোগিতা অত্যন্ত বেশি, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধান্ত নিতে পারে। পাশাপাশি, মেধাতালিকা তৈরির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই একাধিক স্তরের যাচাই এবং যাচাইকৃত নথিপত্র আপলোড বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক দাবি তোলেন, যাতে রাজ্যের পড়ুয়াদের জন্য একটি নির্দিষ্ট শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকে। যদিও এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী কোনও স্পষ্ট আশ্বাস দেননি, তবে বিষয়টি বিবেচনার মধ্যে রয়েছে বলে ইঙ্গিত দেন।
এদিকে, বহু ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবক আশঙ্কা করছেন—অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়ায় কারিগরি সমস্যায় তাঁরা আবার বিপাকে পড়বেন। সেই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানান, প্রযুক্তিগত ত্রুটি এড়াতে এবার নতুন সার্ভার এবং হেল্পলাইন চালু করা হচ্ছে। প্রতিটি জেলা এবং ব্লকে থাকবে ‘ভর্তি সহায়তা কেন্দ্র’, যেখানে শিক্ষার্থীরা সহায়তা পাবেন আবেদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে মেধাতালিকা দেখার ক্ষেত্রে। সবমিলিয়ে, বিধানসভায় চাপের মুখে থাকলেও শিক্ষামন্ত্রী যথাসম্ভব স্পষ্ট উত্তর দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। এখন উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পরে রাজ্যজুড়ে কলেজ ভর্তি নিয়ে যে প্রতিযোগিতা শুরু হবে, তার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে প্রশাসন এবং শিক্ষাব্যবস্থা।